ইতিহাস ঐতিহ্যে ভরপুর রাজবাড়ী জেলা। এ জেলায় অনেক অলি আউলিয়া বিভিন্ন সময় ইসলাম প্রচার করতে এসেছেন। অনেকের নামে বিভিন্ন মাজার রয়েছে। তেমনি একজন সাধক অলি ‘মুর্শিদ জামাই পাগল।’ রাজবাড়ীতে মুর্শিদ জামাই পাগলের মাজারে এখনো আসেন অনেক ভক্তবৃন্দ ।
রাজবাড়ী সদর উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নের আলাদীপুর গ্রামে অবস্থিত এই ‘মুর্শিদ জামাই পাগলের মাজার।’ ধারণা করা হয় ১৯৬০ সালের দিকে নেংটি পরিহিত এক ব্যাক্তি বর্তমানে মাজারের পাশে শেওরা গাছের নিচে অবস্থান নেন ।
তার নামে বিভিন্ন অলৌকিক ঘটনা প্রচলিত আছে। জনশ্রুতি আছে পাবনা জেলার এক ধনি ব্যাক্তি তার বোবা মেয়েকে বিয়ে দেন। বিয়ের রাত শেষ হতেই বোবা মেয়ে কথা বলতে শুরু করে। এ কথা শুনে এলাকার মানুষের মুখে মুখে সে কথা ছড়িয়ে পরে। কিন্তু সেই সাথে পাগল জামাই আর কোথাও খুজে পাওয়া যাচ্ছিলো না। অবশেষে তার সন্ধান মেলে রাজবাড়ীর আলীপুর ইউনিয়নের আলাদীপুর গ্রামে। অনেক খোঁজাখুঁজির পর তাকে পাওয়া গেলেও তার স্ত্রীকে জানিয়েদেন তিনি আর ঘর সংসার করবেন না। তাই আর ফিরে যান নি। এ ঘটনার পর থেকে জামাই পাগলের নাম সবার মুখে মুখে ছড়িয়ে পরে।'
জানাযায়, জামাই পাগল যখন আলাদীপুরে আসেন, তখন এ এলাকার অনেক মানুষ কলেরায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছিলো। তখন তিনি আক্রান্তদের সারিয়ে তোলেন, ধীরে ধীরে অনেক মানুষ বিভিন্ন মানত নিয়ে জামাই পাগলের কাছে আসতে থাকেন। এবং তার উছিলায় অনেকে রোগ মুক্ত হর্তো। জামাই পাগলের মৃত্যুর পর এক আগন্তুক সৎকারের ব্যবস্থা করেন এবং এখানে জামাই পাগলের নামে একটি মাজার স্থাপন করা হয়। এরপর নুর বাকের শাহ নামে এক ভক্ত জামাই পাগলের মাজারে অবস্থান নেন। তার মৃত্যুর পর গৌরি পাগলী নামে এক ভক্ত মাজারটি দেখা শোনা করেন।
মুর্শিদ জামাই পাগল, নুর বাকের শাহ ও গৌরী পাগলের তিনটি কবর সারি বদ্ধভাবে এ মাজারে রয়েছে। মাজার প্রাঙ্গণে রয়েছে সুবিশাল একটি মসজিদ । সরকারি বরাদ্দে বর্তমান মাজারের অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা হয়েছে। প্রতিবছর বাংলা মাসের ১৫ই ফাল্গুন উপমহাদেশের খ্যাতনামা অন্যতম অলীয়ে কামেল বাবা মুর্শিদ জামাই পাগলের মাজার শরীফে ওরশ অনুষ্ঠিত হয়।
বাবু/জেএম