চট্টগ্রামে পোল্ট্রি ফিডে ট্যানারি বর্জ্য : দুই লাখ টাকা জরিমানা
চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, ১০:৫২ PM আপডেট: ২৮.০৯.২০২৩ ১১:৩০ PM
 চট্টগ্রামে নিষিদ্ধ ট্যানারি বর্জ্য মিশিয়ে পোল্ট্রি খাদ্য উৎপাদনকারী একটি প্রতিষ্ঠানকে দুই লাখ টাকা জরিমানা ও এসব পণ্য ধ্বংসের নির্দেশ নিয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্ত৷
বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বাকলিয়া থানার পুলিশ চট্টগ্রামের রাজাখালি ফায়ার সার্ভিস সংলগ্ন ফাইভ স্টার গলির জনৈক হাজী সালাউদ্দিনের মালিকানাধীন তিনটি কারখানা ও গুদামে অভিযান চালায়। এসময় পোল্ট্রি খাদ্যের সাথে ট্যানারি বর্জ্য ও নিষিদ্ধ মালামাল মিশিয়ে পোল্ট্রি খাদ্য উৎপাদনের সত্যতা পেয়ে কারখানা ও গুদামগুলো তালাবদ্ধ করে রাখে৷
বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কারখানার মালিক হাজী সালাউদ্দিনকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করেন৷ এসময় ট্যানারি বর্জ্য মিশ্রিত পোল্ট্রি ফিডগুলো নিকটস্থ কর্ণফুলী তীরে ধ্বংস করা হয়।
এই বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্ত বাংলাদেশ বুলেটিনকে বলেন, “অভিযানকালে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় তাৎক্ষণিক কারখানার মালিক মোঃ সালাউদ্দিনকে নগদ দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়৷ ক্ষতিকর পোল্ট্রি ফিড গুলো ধ্বংস করার নির্দেশ দেয়া হয়।”
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে এক সময় শ্রমিক সরবরাহকারী (মাঝি হিসেবে প্রচলিত) সালাউদ্দিন দীর্ঘদিন যাবৎ রাজাখালি ফায়ার সার্ভিসের আশেপাশে ভেজাল পোল্ট্রি ফিডের ব্যবসা করে বিপুল অর্থ বিত্তের মালিক হয়েছেন৷ বর্তমানে সালাউদ্দিনের ছেলে সোহাগ ও ভাতিজা সাদ্দাম এই পোল্ট্রি ফিড ব্যবসা পরিচালনা করছে৷ প্রায়শ সালাউদ্দিনের কারখানাগুলোতে নিষিদ্ধ ঘোষিত মিটবন মিশিয়ে পোল্ট্রি ফিড প্রস্তুত করা হয় বলে একাধিক শ্রমিক জানিয়েছে৷
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এসব শ্রমিকরা জানান, “এটা নতুন কিছু না৷ সালাউদ্দিন মাঝির কারখানায় বহু বছর ধরে নানান কিছু মিশিয়ে মুরগির খাদ্য তৈরি হয়ে আসছে। বাজারে মিট বন না পেলে তখন ট্যানারির মাল মেশানো হয়৷”
স্থানীয় একাধিক ব্যবসায়ী জানান, বেশ কয়েকজন আমদানিকারক সালাউদ্দিনকে পোল্ট্রি ফিড বানানোর উপকরণগুলো সরবরাহ করে৷ সালাউদ্দিন ও তার ছেলে সোহাগ, ভাতিজা সাদ্দাম কারখানায় এসব উপকরণের সাথে মিটবন, ট্যানারি বর্জ্য, ইয়েলো প্রোটিনের মতন ক্ষতিকারক উপকরণ মিশ্রন করে দেশের বিভিন্ন বড় বড় পোল্ট্রি ফিড প্রস্তুত কারক ও পোল্ট্রি ফার্মে নিয়মিত সরবরাহ করছে৷
২০১১ সালের ২১ জুলাই বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের সমন্বয়ে তৎকালীন একটি হাইকোর্ট বেঞ্চ এক মাসের মধ্যে এসব বর্জ্য থেকে মাছ, মুরগির খাবার তৈরির কারখানা বন্ধের নির্দেশ দেয়া হলেও সালাউদ্দিনের মত অসাধু ব্যবসায়ীরা এসব ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
জানা গেছে এসব ট্যানারি বর্জ্য মিশ্রিত পোল্ট্রি ফিড খাওয়া মুরগির ডিম পরীক্ষা করে সেখানে অতিরিক্ত পরিমাণে ক্রোমিয়াম নামক রাসায়নিক পদার্থ ধরা পড়ে। যার কোনো দাহ্যতা নেই। আর এ রাসায়ানিক পদার্থ আমাদের শরীরে প্রবেশ করে ধ্বংস করছে কিডনি, সৃষ্টি করছে থ্রম্বোসিস, করোনারি ডিসঅর্ডার, ইডিমা সহ ক্যানসারের মতো কঠিন সব রোগ।
সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com. কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত
|