খুলনার দাকোপে হোগলাবুনিয়া ইয়াসিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক (কম্পিউটার) শিকদার মনিরুজ্জামানের বিরুদ্ধে আইসিটি বিষয়ক জাল সনদে চাকুরি করার অভিযোগ উঠেছে। এবিষয়ে প্রতিকার চেয়ে সম্প্রতি তার দুইটি আইসিটি সনদ সংযুক্ত করে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন স্থানীয় আব্দুস ছাত্তার নামে এক ব্যক্তি।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি মোতাবেক বিগত ২০০৫ সালের ২০ ফেব্রুয়ারী শিকদার মনিরুজ্জামান সহকারি শিক্ষক (কম্পিউটার) পদে আবেদন করেন। পরবর্তীতে ১২ মার্চ চাকুরিতে যোগদান করেন। তার উক্ত আবেদন পত্রে সংযুক্ত আইসিটি বিষয়ক সনদ পত্রটি ছিলো এসআইটি ফাউন্ডেশনের। তিনি ২০০৪ সালের ১০ জুন হতে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬ মাসের কোর্সটি সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে তিনি ২০০৫ সালে টেকনিক্যাল এডুকেশন বোর্ড ঢাকায় আইসিটি বিষয়ক ৬ মাস মেয়াদী আরেকটি কোর্সে ভর্তি হন। যার নিবন্ধন নম্বর ৩৬৭৯। তিনি উক্ত কোর্সটি সম্পন্ন করেন ২০০৬ সালের জানুয়ারী মাসে। কিন্তু বিষয়টি সম্পূর্নরুপে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের অজানা। উক্ত প্রতিষ্ঠান তার সনদ পত্রটি ইস্যু করেন ২০০৭ সালের ১২ সেপ্টম্বর। কাজেই সন্দেহাতীতভাবে প্রমানিত হয় তার আবেদন পত্রের সাথে সংযুক্ত আইসিটি বিষয়ক সনদ পত্রটি জাল। এছাড়া তিনি প্রথম এমপিও ভূক্ত হন ২০০৬ সালের ১ নভেম্বর। তখন তিনি আইসিটি বিষয়ক দ্বিতীয় সনদ পত্রটি পান নাই। কাজেই তার এমপিও ভূক্তির বিষয়টিও প্রশ্নবিদ্ধ বলে প্রতীয়মান হয়। এমনকি তার পরবর্তীতে সংগৃহিত আইসিটি বিষয়ক সনদ পত্রটি যথাযথ কি না তাহা যথেষ্ঠ সন্দেহের উদ্রেক করেন দরখাস্তকারি। উক্ত জাল সনদ নিয়ে তিনি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দৃষ্টির অগোচরে ব্যক্তিগত প্রভাব খাটিয়ে এখনও বহালতবিয়তে শিক্ষাকতা পেশায় নিয়োজিত আছেন যা সম্পূর্ণরুপে অবৈধ বলে দরখাস্তকারি আব্দুস ছাত্তার মনে করেন।
এবিষয়ে সহকারি প্রধান শিক্ষক (কম্পিউটার) শিকদার মনিরুজ্জামান জানান, তার সনদ পত্র সম্পূর্ণ সঠিক আছে। আর এগুলো যারা করছে তারা তাকে শুধু হয়রানির জন্য করছে বলে তিনি দাবি করেন।
হোগলাবুনিয়া ইয়াসিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিবদাস সরকার বলেন, সনদ জালের বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। তাছাড়া আমি নিজেও বিদ্যালয় খুবই বিপদগ্রস্থ আছি। কারণ এখানে দুইটি গ্রুফ আছে। চাকুরি করা মশকিল হয়ে পড়েছে। আমার উপরও বিভিন্ন ধরনের চাপ আসছে। এমনকি আমি সেখানে স্বশরীরে যেতে না পেরে অন্য একজনের কাছে রিজাইন লেটার সভাপতির কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি।
এবিষয়ে ইয়াসিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি শামীম আহমেদ (অর্নব) জানান, যখন মনিরুজ্জামানের নিয়োগ হয়েছে তখন আমি সভাপতি ছিলাম না। ঐ সময়ে যারা ছিলো তারা ভাল বলতে পারবে। এবিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।
এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা পরিতোষ কুমার আউলিয়া বলেন, আমি সবে মাত্র যোগদান করেছি। আইসিটি জাল সনদের বিষয়টি তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।