রবিবার ১৩ জুলাই ২০২৫ ২৯ আষাঢ় ১৪৩২
রবিবার ১৩ জুলাই ২০২৫
কমলগঞ্জে অবাধে চলছে পাহাড়-টিলা কাটা, কেউ বানাচ্ছেন বসতভিটা
কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
প্রকাশ: শুক্রবার, ৫ জানুয়ারি, ২০২৪, ৪:৫৭ PM
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে পরিবেশ আইন লঙ্ঘন করে অবাধে চলছে পাহাড়-টিলা কাটা। বিক্রি হচ্ছে টিলার মাটি। এতে উজাড় হচ্ছে বনাঞ্চল আবাসন ও খাদ্য সংকটে পড়ছে বন্যপ্রাণী । টিলা কেটে কেউ বানাচ্ছেন বসতভিটা, আবার কেউ কেউ তৈরি করছেন রিসোর্ট কিংবা বাগান। এ উপজেলার লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান সংলগ্ন বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল কালাছড়া বন। বনের পার্শ্ববর্তী কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের বনগাঁও, সরইবাড়ি, উবাহাটা গ্রাম। গ্রামের মধ্যে বনের টিলার লাল মাটি বিক্রি করছেন স্থানীয়রা। বিশেষ করে প্রতিদিন ভোরে ও সন্ধ্যায় টিলা কেটে ট্রাকযোগে মাটি স্থানান্তর করা হচ্ছে। এতে সাবাড় হচ্ছে প্রাকৃতিক টিলাভূমি। বিপর্যস্ত হচ্ছে পরিবেশ-প্রতিবেশ।

উচুঁ উচুঁ টিলা সমুহের লাল মাটি কেটে বিক্রি করা হচ্ছে। এতে একদিকে তাদের আয় হচ্ছে, আবার অন্যদিকে সমতল হওয়া স্থানে ঘরবাড়ি নির্মিত হচ্ছে। দুর্গম এলাকা থাকার কারণে প্রশাসন কিংবা পরিবেশ অধিদপ্তর এসবের কোন ধার ধারে না। কেউ কোন অভিযোগ দিলে সরেজমিনে পরিদর্শন করে নিজেদের দায় সেরে নেন। ফলে টিলা কাটা রোধ হচ্ছে না

সরেজমিনে জানা যায়, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান সংলগ্ন কালাছড়া বন। বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল খ্যাত বনটিতে জীববৈচিত্র্যে ভরপুর ছিল। তবে গত দু’দশক যাবত বনের অনেক গাছ ও বাফারজোনের গাছ গাছালি বিলীন হচ্ছে। বনের টিলায় লেবু, আনারস বাগান গড়ে উঠছে। এতে বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল সংকট তীব্র হচ্ছে। কালাছড়া বন সংলগ্ন রয়েছে কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের বনগাঁও, সরইবাড়ি, উবাহাটাসহ কয়েকটি গ্রাম রয়েছে। এসব গ্রামের অনেক টিলাভূমি সরকারি বনের। দীর্ঘদিন বসবাসের সুবাদে স্থানীয়দের অনেকেই আদালতে মামলা দিয়ে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে ভোগ দখল করছেন। ফলে বন বিভাগ ইচ্ছে করলেও ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারছে না। এসব কারণে গ্রামের কিছু কিছু লোক নিজেদের দখলকৃত টিলা কেটে সাবাড় করছেন। সরইবাড়ি, উবাহাটা ও বনগাঁও গ্রামের কয়েকটি টিলা থেকে মাটি কেটে স্থানান্তর হতে দেখা গেছে। সাধারণত প্রতিদিন ভোরে ও সন্ধ্যায় টিলার মাটি ট্রাকযোগে পরিবহন হচ্ছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ রয়েছে। পরিবেশকর্মী নুরুল মোহাইমীন ও আহাদ মিয়া জানান, অবৈধভাবে টিলা কাটা, ইটভাটায় কাঠ পুড়ানো, কৃষিজমি থেকে উর্বর মাটি কেটে নেওয়াসহ পরিবেশ সংক্রান্ত বিষয়াটি পরিবেশ অধিদপ্তর দেখভাল করার কথা। তবে কেউ অভিযোগ দিলেও তারা সরেজমিনে সেভাবে অভিযান পরিচালনা করে না। কোনমতে দায়সারা একটা দায়িত্ব পালন করেই শেষ। যে কারণে টিলা কাটাসহ পরিবেশ বিপর্যয় ঘটে এমন কর্মকাণ্ড অহরহ ঘটছে। 

এ ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তর, মৌলভীবাজার এর সহকারী পরিচালক মাহমুদুল হাসান বলেন, নাম ঠিকানা দিলে তারা তদন্ত করবেন।  

লাউয়াছড়া বনরেঞ্জ কর্মকর্তা সহিদুল ইসলাম বলেন, এসব এলাকার অনেক লোকজন বাড়িঘর বানিয়ে বসবাস করছেন এবং তারা আদালতে মামলা দিয়ে টিকে আছেন। যে কারনে তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হয় না।

কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন বলেন, আসলে কিছুটা দুর্গম এলাকা থাকায় অনেক সময় সবকিছু জানা যায় না। তাছাড়া এখন নির্বাচনের কারনে সবাই ব্যতিব্যস্ত। তারপরও সরেজমিন খোঁজ নিয়ে দেখবো।


« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত