মানিকগঞ্জ-২ আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম বলেছেন, আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে কতিপয় স্বতন্ত্র প্রার্থী নানা ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলু দলীয় মনোনয়ন প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে অদ্যাবধি টাকার খেলায় মেতে আছেন। বারবার নির্বাচনী আচরণবিধি লংঘন করে চলছে। তিনি টাকা দিয়ে আওয়ামী লীগের কিছু নেতা কিনে ফেলেছে। তারা টাকার জন্য দলীয় নীতি আদর্শ ভুলে গিয়ে নৌকার বিপক্ষে কাজ করছে।
বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) রাতে নির্বাচনী প্রচারণার শেষ সভায় তিনি একথা বলেন।
এদিকে, মমতাজের তিন সৎ বোন স্বতন্ত্র প্রার্থী টুলুকে আনুষ্ঠানিকভাবে সমর্থন করায় ভোটারদের মাঝ মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি নির্বাচনী সমীকরণে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। দ্রুত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ছড়িয়ে পড়েছে। শেষ মুহূর্তে এমন ঘটনা নির্বাচনী ফলাফলের টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে আখ্যায়িত করছেন বিশ্লেষকগণ।
নির্বাচনী এলাকার প্রবীণ বাসিন্দা শমসের আলী বলেন, গত সোমবার (১ জানুয়ারী) রাতে সিংগাইর উপজেলার ভাকুম গ্রামে অনুষ্ঠিত স্বতন্ত্র প্রার্থী টুলুর নির্বাচনী জনসভায় উপস্থিত হয়ে মমতাজের ৩ সৎ বোন রেহেনা বেগম, শাহনাজ বেগম ও জাহানারা বেগম ট্রাক প্রতীকের প্রার্থী টুলুকে সমর্থন জানান। টুলু তাদের ফুল দিয়ে বরন করেন। এই ঘটনা জনগের মাঝে ব্যাপক চঞ্চলের সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন গণমাধ্যমে গুরুত্ব সহকারে প্রচার করা হয়।
ভাকুম গ্রামের কৃষক আবুল হোসেন জানান, প্রখ্যাত বাউল শিল্পী প্রয়াত মধু বয়াতির প্রথম স্ত্রী মনোয়ারা বেগম। ওই ঘরে তার ১ ছেলে ও ৩ মেয়ে। মধু বয়াতির দ্বিতীয় স্ত্রী উজালা বেগমের ঘরে এমপি মমতাজ বেগম ও এক পুত্র সন্তান রয়েছে। মমতাজের সাথে সৎ মা ও বোনদের সাথে জমি সংক্রান্ত বিরোধ রয়েছে।
মমতাজের সৎ বোন রেহেনা বেগম, জাহানারা বেগম ও শাহনাজ বেগম একই কন্ঠে বলেন, মমতাজ এমপি হওয়ার পর থেকে ক্ষমতার অপব্যবহার করে আমাদেরকে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত রেখেছে। আমাদেরকে বোনের মর্যাদা না দিয়ে অসদাচরণ করে আসছে। টুলু একজন ভালো মানুষ। তাই আমরা ৩ বোন তাকে সমর্থন করেছি।
মনোয়ারা বেগম কান্না বিজড়িত কন্ঠে বলেন, মমতাজ আমার সৎ মেয়ে হলেও তাকে আপন মেয়ের মতই দেখি। কিন্তু মমতাজ এমপি হওয়ার পর আমার তিন মেয়েসহ পরিবারের সকলের সাথে কোন সম্পর্ক রাখেনি। সে ডর ভয় দেখিয়ে আমাদের দৈনন্দিন চলাফেরা রাস্তা বন্ধ করে রেখেছে। আমরা এখন অতিষ্ঠ। সেই অনুরাগে আমার তিন মেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী টুলুকে সমর্থন জানিয়েছে।
মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধক্ষ স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলু বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি। আমি এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। মানুষকে মানুষকে সম্মান দিতে জানি। তাই এলাকার লোক আমাকে ব্যাপকভাবে সমর্থন করছেন। নির্বাচনে অবশ্যই বিজয়ী হবো।
এমপি মমতাজ বেগম বলেন, আমি একজন শিল্পী। গান গেয়ে যে টাকা পাই, তা দিয়ে জনসেবা করি। আমি কোন দুর্নীতি করিনি। গত ১০ বছরে এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য জনগণ আবারো আমাকে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে এমপি বানাবে। শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী বানাবো।
স্বতন্ত্র প্রার্থীকে তিন বোনের সমর্থন সম্পর্কে তিনি বলেন, আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে কালো টাকার মালিক টুলু তাদের টাকার বিনিময়ে কিনে নিয়েছে। নির্বাচনে এর কোন প্রভাব পড়বে না।