ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ করার দায়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) সিটিএসবি অ্যান্ড প্রটেকশন বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার জিসানুল হককে সরকারি চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
রোববার (২৩ জুন) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে এমন তথ্য দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়, তিনি বাংলাদেশ সার্ভিস রুল অনুসারে খোরপোষ ভাতা পাবেন এবং এই আদেশ অবিলম্বে কার্যকর করা হবে।
এর আগে গত ১৯ জুন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে জিসানুল হককে সাময়িক বরখাস্ত করার সুপারিশ করে একটি চিঠি দেয় পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স। এতে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশও করা হয়।
চিঠিতে বলা হয়, গত ১২ জুন ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি) থেকে জাওয়াদ নির্ঝর নামের একটি ফেইসবুক আইডির একটি পোস্টে ডিএমপি'র সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়াকে নিয়ে একটি পোস্ট পাওয়া যায়। পোস্টের মন্তব্য ঘরে জাওয়াদ নির্ঝর নামের একটি টেলিগ্রাম চ্যানেলের লিংক উদ্ধৃত থাকে। টেলিগ্রাম চ্যানেলে প্রবেশ করলে ওই দিন সন্ধ্যা ৭টা ৫৬ মিনিটে ডিএমপির সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার ইএসএএফ ফর্ম সম্বলিত একটি টেলিগ্রাম পোস্ট পাওয়া যায়।
এর কিউআর কোড পর্যালোচনায় ইএসএএফটি গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের এলআইসি শাখার এনটিএমসির এনআইপি সার্ভার থেকে এএসআই মো. আরিফ হোসেনের আইডি থেকে ডাউনলোড হয়।
এতে আরও বলা হয়, জিএমপির ডিবির (দক্ষিন) উপ-কমিশনার মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খাঁনের দাখিলকরা অনুসন্ধান প্রতিবেদনে দেখা যায় যে, জিসানুল হক তার ব্যবহৃত সরকারি মোবাইল নম্বরের হোয়্যাটসঅ্যাপ থেকে গত ১২ ফেব্রুয়ারি এলআইসি শাখায় কর্মরত এসআই পরিমল চন্দ্র দাসের ব্যক্তিগত হোয়্যাটসঅ্যাপে আছাদুজ্জামান মিয়ার মোবাইল নম্বরের এনআইডি চেয়ে মেসেজ দেন।
পরিমল চন্দ্র দাস সরকারী নিপ সেবা হটলাইন নম্বরে এনআইডি সরবরাহের বার্তা দেন। বার্তা পেয়ে ওই দিন রাত ৮টা ৩৯ মিনিটে এলআইসিতে ডিউটিরত এএসআই মো. আরিফ হোসেন তার নিপ আইডি থেকে ইএসএএফ ডাউনলোড করে হটলাইনের হোয়্যাটসঅ্যাপের মাধ্যমে এসআই পরিমল চন্দ্র দাসের হোয়্যাটসঅ্যাপ নম্বরে পাঠান।
চিঠিতে বলা হয়, পরদিন পরিমল চন্দ্র দাস এটি জিসানুল হকের সরকারি মোবাইল নম্বরের হোয়্যাটসঅ্যাপে পাঠান। সেই লগইন জিএমপির এলআইসিতে রক্ষিত রেজিস্টারেও পাওয়া যায়।
যা স্পর্শকাতর তথ্য সরকারি উদ্দেশ্য ব্যতিত সংগ্রহ করা অপেশাদার সুলভ আচরণ এবং শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ড হিসেবে পরিগণিত। এ অবস্থায় জিসানুল হকের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ সম্বলিত প্রতিবেদন প্রেরণ সাপেক্ষে বর্ণিত কর্মকর্তাকে চাকরি হতে সাময়িক বরখাস্তপূর্বক রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি অফিসে সংযুক্ত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হয়।