ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলার সাথে জড়িত, জুলাইয়ে গনহত্যার সমর্থনকারী এবং ছাত্রলীগের চিন্হিত সন্ত্রাসী উল্লেখ করে নয় জন শিক্ষকের নাম ও ছবিসহ অবাঞ্ছিত ঘোষণা ও তাদের ক্লাস বয়কট করার ঘোষণা দিয়ে ব্যানার টানিয়ে দেওয়া হয়। এতে প্রচারে সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দের নাম লেখা হয়।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে এ ব্যানার দেখা যায়। এতে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের পাশে থাকা তিন শিক্ষকের নাম দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
তবে এ বিষয়ে কিছুই জানেনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান উল্লেখ করে শিক্ষকদের নামে বানানো ব্যানার উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মনে করছেন তারা। পরে ক্যাম্পাসে টানানো সকল ব্যানার সরিয়ে ফেলেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিষদ।
জানা যায়, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পক্ষে থাকা ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক মো. সাজ্জাদ হোসেন জাহিদের নাম নাম অবাঞ্ছিত ও বয়কটের তালিকায় প্রকাশ করা হয়।
এছাড়াও তালিকায় থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিনান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষক ও সহকারী প্রক্টর মিথুন বৈরাগী ও কমিউনিকেশন অ্যান্ড মাল্টিমিডিয়া জার্নালিজম বিভাগের শিক্ষক তন্ময় সাহা জয়কে নিয়েও সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। তারাও আন্দোলনের পক্ষে ছিলেন বলে দাবি শিক্ষার্থীদের।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, "সেসকল শিক্ষক আমাদের সমর্থন দিয়েছেন আমাদের পাশে ছিলেন। তাদের নাম প্রকাশ করায় বোঝা যাচ্ছে কোন স্বার্থবাদী গোষ্ঠী এ ষড়যন্ত্র করেছে। এঘটনার তিব্র নিন্দা জানিয়েছেন তারা।
এবিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়ক গোলাম রব্বানী এক বার্তায় জানিয়েছেন "সাধারন শিক্ষার্থীদের পরামর্শ ছাড়া তাদের নামে কোনো দাবি উত্থাপন বা মন্তব্য প্রকাশের পক্ষে আমরা নই। সাধারণ শিক্ষার্থীর নামে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইনগেটে শিক্ষকদের ছবি প্রিন্ট করে তাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে এবং অবাঞ্চিত ঘোষণা করা হয়েছে সে বিষয়ে আমরা অবগত নই এবং সম্পৃক্ততাও নেই।
শিক্ষার্থীদের মতের বিরুদ্ধে প্রকাশিত কোনো সিদ্ধান্তের সাথে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার কোনো সদস্য সম্পৃক্ত থাকবেও না। "
এছাড়াও তিনি আহ্বান করে জানিয়েছেন, "যারা এই কাজ ব্যক্তিগত ক্ষোভ কিংবা যে জন্যই করেছেন এসব কাজ থেকে বিরত থাকুন।"
এদিকে এঘটনার পর শিক্ষার্থীরা ব্যানারে থাকা ছাত্র আন্দোলনে পাশে থাকা ইংরেজি বিভাগের শিক্ষকের নাম সর্বপ্রথম মুছে ফেলে প্রতিবাদ ওই বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
অপরদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিকেশন অ্যান্ড মাল্টিমিডিয়া জার্নালিজম বিভাগের শিক্ষার্থীরা শিক্ষক তন্ময় সাহা জয়কে মিথ্যা অপবাদ দেওয়ার প্রতিবাদে বিবৃতি প্রকাশ করে। এছাড়াও ফিনান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষক মিথুন বৈরাগীকে মিথ্যা অপবাদ দেওয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ মিছিল ও সমাবেশ করেছে।
উল্লেখ্য, ব্যানারে থাকা শিক্ষকরা হচ্ছেন, ইবি বঙ্গবন্ধু পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মাহবুবুল আরফিন, সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান, শাপলা ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মণ, সাবেক ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. বাকী বিল্লাহ বিকুল, সহকারী প্রক্টর মিঠুন বৈরাগী, খালেদা জিয়া হলের সাবেক প্রভোস্ট ড. ইয়াসমিন আরা সাথী, হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের মো: শহিদুল ইসলাম, ইংরেজি বিভাগের মো: সাজ্জাদ হোসাইন জাহিদ এবং কমিউনিকেশন অ্যান্ড মাল্টিমিডিয়া জার্নালিজম বিভাগের তন্ময় সাহা জয়।