লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার চর কালকিনি ইউনিয়নের মতিরহাট মেঘনা নদীর তীর সংলগ্ন বেড়ীবাঁধের দু'পাশে আশ্রীত অসহায় ২০ টি পরিবারকে উচ্ছেদ করার অভিযোগ উঠেছে ওই ইউনিয়ন বিএনপি'র সভাপতি ও ২ নং ওয়ার্ডের মেম্বার মেহেদি হাসান লিটনের বিরুদ্ধে।এতে আশ্রয়হীন ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন পরিবারগুলো।
বৃহস্পতিবার সকালে সাংবাদিকদের কাছে এমন অভিযোগ করেন ২০ বছর ধরে বসবাসকারী ওই স্থানের ভুক্তভোগী পরিবারগুলো। এ ঘটনায় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়,মেঘনায় নদীর ভাঙ্গনের শিকার হয়ে সহায় সম্বল হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েন অনেক পরিবার।জমি কিনে নতুন বাড়ি করার সামর্থ্য না থাকায় কিছু পরিবার নদীর তীরে বেড়ীবাঁধের দু'পাশে ওয়াপদার খাল ভরাট করে ঝুপড়ি ঘর তুলে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন।দীর্ঘদিন থেকে স্থানীয় মেম্বার ও ওই ইউনিয়ন বিএনপি'র সভাপতি মেহেদি হাসান লিটন ওই জায়গা ছেড়ে দেওয়ার জন্য পরিবারগুলোকে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছে।গত শনিবার হঠাৎ করে এস্কেভেটর(ভেকু) মেশিন দিয়ে তাদের ঘর বাড়ি উচ্ছেদ শুরু করে। এতে অসহায় পরিবারগুলোর রান্না ঘর,টয়লেট ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এবং বিভিন্ন প্রজাতির গাছ উচ্ছেদ করা হয়।
বেড়ীর পশ্চিম পাশ এত গভীর ও খাড়া করে খনন করা হয়েছে ওখানে বসবাসকারীদের ঘর, রান্না ঘর ও টয়লেট যে কোনো সময় ভেঙ্গে পড়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।
ভুক্তভোগী রাবেয়া, নিরুতাজ,জয়নব ও বিধবা রোকেয়া বলেন,আমরা অসহায় সহায় সম্বলহীন। লিটন মেম্বার আমাদেরকে জোরপূর্বক এখান থেকে উঠিয়ে দিচ্ছে।ভেকু মেশিন দিয়ে আমার রান্নার পাতিল সহ রান্নাঘর ও টয়লেট ভেঙ্গে দিয়েছে।আমরা কোথায় যাবো,যাওয়ার জায়গা নাই।
আবুল কাশেম,জাহাঙ্গীর মাঝি জানান,ভেকু মেশিন দিয়ে এমন গভীর করছে যাতে আমাদের ঘর বাড়ি ভেঙ্গে পড়ে যায়।ঘরের শিশু বাচ্চারা এখানে পড়ে দুর্ঘটনার আশংকার কথাও জানান তারা।
অভিযুক্ত স্থানীয় মেম্বার ও চর কালকিনি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মেহেদী হাসান লিটন বলেন, এই জমি ক্রয়সুত্রে মালিক চট্রগ্রামের শিল্পপতি আমিরুল হক চৌধুরী।আমি তদারকি করি।ওই জমিতে এরা দীর্ঘদিন থেকে বসবাস করে আসছে।তাদের ঘর উচ্ছেদ করা হয়নি।তবে ভেকু মেশিন দিয়ে জমি সমান করা হয়েছে।
কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুচিত্র রঞ্জন দাস বলেন,ঘটনাস্থল পরিদর্শন করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।