পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার জাপা (এরশাদ) নেতাকে কুপিয়ে পা বিচ্ছিন্নের নেপথ্যে মঠবাড়িয়া থানার সাবেক ওসি মো. নূরুল ইসলাম বাদলের ইন্ধন রয়েছে বলে ভুক্তভোগী শফিকুল ইসলাম পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
পিরোজপুর পুলিশ সুপার অভিযোগটি তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের দায়িত্ব দেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মঠবাড়িয়া সার্কেল) এর ওপর। বর্তমানে অভিযোগটি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সাখাওয়াত হোসেন তদন্ত করছেন বলে ভুক্তভোগী শফিকুল ইসলাম জানান। শফিকুল ইসলাম উপজেলা জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলার তুষখালী গ্রামের আইয়ূব আলী শিকদারের ছেলে। তাঁর পা বিচ্ছিন্নের নেপথ্যে মঠবাড়িয়া থানার সাবেক ওসি মো. নূরুল ইসলাম বাদলের ইন্ধন রয়েছে এমন অভিযোগ এনে তিনি (শফিকুল) একাধিক বার সংবাদ সম্মেলনও করেছিলেন।
অভিযোগ ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, মঠবাড়িয়া থানায় কর্মরত থাকাকালে ওসি নূরুল ইসলাম বাদল তাকে ২০২১ সালের ২১ জুলাই সন্ধ্যায় এসআই পলাশ চন্দ্র রায়ের মাধ্যমে থানায় ডেকে ৫০ হাজার টাকা দাবী করেন। পরে তার স্বজনরা টাকা নিয়ে আসলে ওসিকে ৬ হাজার ও এসআইকে ৩ হাজার টাকা দিলেও তাকে মুক্তি দেয়া হয়নি। রাত ১১টার দিকে ওসির রুমে থানার দালাল সগির মেম্বার এবং তুষখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের ছেলে শামীম আহমেদ তাকে ওসির সামনে মারধর করেন।
পরে সগির মেম্বারের কথায় তাকে মিথ্যা মামলায় জেল হাজতে পাঠান। ২১ দিন হাজতবাস করে বের হবার পরেও বিভিন্ন সময়ে ওসি তাকে নানাভাবে হয়রানি করতে থাকেন। এসব বিষয়ে তিনি পরবর্তীতে স্ব-রাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইজিপি, ডিআইজির কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওসি বাদল ২০২২ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর তাকে অভিযোগ তুলে নেয়ার হুমকি দিয়ে বলেন, সব অভিযোগ তুলে না নিলে কুপিয়ে হাত-পা কেটে ফেলা হবে। এমনকি প্রাণেও মেরে ফেলার হুমকি দেন। হুমকির দু’দিন পরে (২৯ সেপ্টেম্বর‘২২) বাড়ি থেকে মঠবাড়িয়া আসার পথে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ওসি বাদলের ইন্ধনে এবং সগির মেম্বারের নেতৃত্বে ছয়-সাত জন সন্ত্রাসী মাঝেরপুল নামক স্থানের ফরাজি বাড়ির সামনে তাকে (শফিকুল) কুপিয়ে বাম পা গোড়ালি থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। এসময় ডান হাতের রগ কাটে এবং ভুঁড়ি বের করে ফেলে।
মঠবাড়িয়া থানার সাবেক ওসি নূরুল ইসলাম বাদল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমাকে অহেতুক হয়রানী করা হচ্ছে। তবে তিনি বর্তমানে কোথায় কোন অবস্থায় রয়েছেন, তা স্পষ্ট করেননি।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মঠবাড়িয়া সার্কেল) মো. সাখাওয়াত হোসেন সংবাদিকদের জানান, অভিযোগটি তদান্তাধীন রয়েছে।