ঈশ্বরদী উপজেলা জুড়ে বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ । এ সপ্তাহে শীতের প্রকোপ আরও বাড়তে পারে। শীতের তীব্রতায় জবুথুবু হয়ে পড়েছে ঈশ্বরদীর জনজীবন। প্রচন্ড ঠান্ডা আর উত্তরের হিমেল হাওয়ায় বাইরে বের হওয়াই যেন দুষ্কর হয়ে পড়েছে। শ্রমজীবী মানুষগুলো সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন। অনেকেই আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।
ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়া পর্যবেক্ষক নাজমুল হক জানান, ২২ জানুয়ারি সোমবার সকাল ৬টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২১ জানুয়ারি রোববার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস। এর আগে ২০ জানুয়ারি গত শনিবার রেকর্ড করা হয় ১০ দশমিক ২ ডিগ্রী সেলসিয়াস।
ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়া পর্যবেক্ষক নাজমুল হক আরও জানান, ২২ জানুয়ারি সোমবার সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা এ মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এতে জেলার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।
এদিকে কুয়াশার তীব্রতায় সামান্য দূরত্বেও কিছু দেখা যাচ্ছে না। উপজেলার সড়ক-মহাসড়ক ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়ে। ঘন কুয়াশার কারণে মহাসড়কগুলোতে যান চলাচল বিঘিœত হচ্ছে। তাই মহাসড়কে হেডলাইট জ্বালিয়ে দূরপাল্লার যানবাহন ধীরগতিতে চলাচল করছে। সকাল ৯টার দিকে সূর্যের দেখা মিললেও শীতের তীব্রতা কমছে না।
ইজিবাইকচালক মো. রবিউল ইসলাম জানান, ‘কুয়াশার কারণে রাস্তায় সামান্য দূরত্বেও কিছু দেখা যায়নি। হেডলাইট জ্বালিয়েও কাজ হচ্ছে না। ধীরে ধীরে গাড়ি চালিয়ে যেতে হয়েছে। ’
পাকশী হাইওয়ে থানার উপ-পরিদর্শক আশিষ সান্যাল জানান, আমাদের টিম মহাসড়কে দায়িত্ব পালন করছে। কুয়াশার কারণে তেমন যানবাহন সড়কে নেই। ধীরগতিতে চলাচল করছে।
তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নামায় উপজেলার সকল প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সোমবার একদিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এর আগে রোববারও বন্ধ ছিল। তাপমাত্রা এমনই থাকলে ছুটি বাড়তে পারে বলে জানা যায় উপজেলা মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিসসূত্রে।
সন্ধ্যার পর থেকেই সকাল পর্যন্ত কুয়াশায় ঢাকা থাকছে। শীতবস্ত্রের অভাবে কনকনে ঠান্ডায় দুর্ভোগ বেড়েছে ছিন্নমূল ও খেটে খাওয়া মানুষের। অনেকেই পেটের তাগিদে কাজে বের হয়েছেন দিনমজুরসহ রিকশা-ভ্যানচালক। শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বয়োবৃদ্ধরা। হাসপাতালে বাড়ছে রোগীদের চাপ। ঈশ্বরদীর স্টেশন রোড, রেলওয়ে জংশন স্টেশন, বাসটার্মিনালসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কনকনে হিমেল বাতাস ও তীব্র শীতে মানুষ সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। পথচারী, রিকশাচালক ও দুস্থদের খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুন পোহাতে দেখা গেছে।
এদিকে উপজেলার প্রায় আড়াই লাখ মানুষের বিপরীতে সরকারিভাবে এখন পর্যন্ত চার হাজার শীতের কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। যা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম বলেন, সরকারিভাবে যে কম্বল পাওয়া গেছে তা চাহিদার তুলনায় কম। মাত্র চার হাজার কম্বল পাওয়া গেছে। এরইমধ্যে ইউনিয়ন পরিষদগুলোতে তিন হাজার ২০০ কম্বল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আর বাকি কম্বল উপজেলার বিভিন্ন আশ্রয়ণ প্রকল্পে বিতরণ করা হয়েছে।