সোনাগাজীতে বোরো চাষে পানির তীব্র সংকটে বরো আবাদ নিয়ে বিপাকে পড়েছে উপজেলার চরচান্দিয়া ইউনিয়নের ১২০ জন কৃষক। সোনাগাজী চরগনেশ এলাকার IR2D Extra khal Existing Bridge (ব্রাহ্মণ) খালের মাঝ খানে গত এক থেকে দেড় মাস আগে ব্রিজ উন্নয়ন কাজের খালের মুখে বাঁধ দেওয়ার কারণে বরো চাষে পানির সমস্যা পড়েছে। যার জন্য কৃষক ধানের চারা রোপণ করতে পারছে না।
ফলে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহতের পাশাপাশি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ারও শংকা রয়েছে কৃষকেরা। চলতি বোরো মৌসুমে ইতোমধ্যেই প্রায় ১১০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান রোপণের যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়েছে কৃষক।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ও সরজমিনে দেখা যায়, চর গনেশ এলাকায় এলজিইডির আওতায় উপজেলা ব্রাহ্মণ খালে ব্রিজ নির্মাণ কাজের জন্য খালের মুখে বাঁধ দেয়ার কারণে বর্তমানে চাষিরা ইরি পানি সেচ দিতে না পেরে ধানের চারা রোপণ করতে পারছে না। যেগুলো লাগানো হয়েছে সেগুলোতে পানি না দিতে পারায় চারা গুলো লাল বর্ণ হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া খালে বাঁধ দেয়ায় ঐ খালসহ শাখা খালগুলো শুকিয়ে যাওয়ায় ইরি মেশিনগুলো পর্যায়ক্রমে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। খালে দেওয়া ওই দুইটি বাঁধ দ্রুত অপসারণ না করলে বিশেষ করে চরচান্দিয়া সহ আশপাশের এলাকায় পানি সেচবন্ধ থাকায় চাষিদের কাঙ্ক্ষিত উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
চরচান্দিয়া হোনার বাপের দোকান এলাকার শারীরিক প্রতিবন্ধী কৃষক এরশাদ উল্যাহ বলেন, বিভিন্ন স্থান থেকে ঋণ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও কৃষি অফিসারদের অনুপ্রেরণায় ২ একর বরো আবাদের প্রস্তুতি নিয়েছি। চারা লাগানোর সময় হতেই পানির তীব্র সংকট এখন আমার আর কোন কূল নেই।
অথচ সেচ কাজের জন্য পৌষ মাস থেকে বৈশাখ মাস পর্যন্ত চাষিদের মেশিন চালানো দরকার। চাষিরা আরো বলেন, উন্নয়ন কাজের জন্য চাষিদের কথা বিবেচনা করে খালে পানি চলাচলের ব্যবস্থা রাখার দরকার ছিল। কিন্তু ঠিকাদার খামখেয়ালী করে বাঁধ দিয়ে পানি চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে।
চরচান্দিয়া ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি অফিসার আশ্রাফ আলী পাটোয়ারী বলেন, বাঁধের কারণে খাল গুলোতে সেচের মৌসুমে পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এতে করে চাষাবাদ যেমন লক্ষ্য মাত্রা ব্যাহত হবে তেমনি কৃষক আর্থিকভাবে ও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড ফেনী এর সাব ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার আরিফুল ইসলাম বলেন, প্রতি বছরই কোথাও না কোথাও এ সেচের মৌসুমে বাধ দিয়ে কালবার্ড বা ব্রীজ নির্মাণ করে। নির্মাণ কাজের পূর্বে যদি আমাদের জানানো হত তাহলে আমরা কৃষকদের এ বিষয়ে বুঝিয়ে বলতাম। আমি গত এক সপ্তাহ আগে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা প্রকৌশলীকে বিষয়টি চিঠির মাধ্যমে জানিয়েছি। আগামীকাল উপজেলা সমন্বয় সভায় ও এ বিষয়ে জানাবো।
উপজেলা কৃষি অফিসার মাঈন উদ্দিন আহমেদ বলেন, সেচ ব্যবস্থাপনা ব্যহত হবে এমন কোন কাজ করার সুযোগ নেই। আমি আগামীকাল সরজমিনে গিয়ে বিষয়টি দেখবো এবং বাঁধ অপসারণের জন্য উর্ধতনদের সাথে পরামর্শ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুল হাসান জানান, এ মৌসুমে পানি প্রবাহে বাধা দেয়ার সুযোগ নাই। এখানে পানি প্রবাহের বিকল্প ব্যবস্থা করার কথা ছিল। আমি বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখছি।