মঙ্গলবার ৮ জুলাই ২০২৫ ২৪ আষাঢ় ১৪৩২
মঙ্গলবার ৮ জুলাই ২০২৫
৫০ বছর পর সোয়াই নদীতে ফিরছে প্রাণ
পূর্বধলা (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: রবিবার, ২৮ জানুয়ারি, ২০২৪, ৫:৪৭ PM
স্বাধীনতার ৫০ বছর পর নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা উপজেলার শ্যামগঞ্জ বাজারের পাশ দিয়ে প্রবাহিত সোয়াই বা  সোয়াইন নদী পুনঃখননের উদ্যোগ নিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। ৪৬কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এবং ২০ মিটার প্রস্থের নদীটি খননেপ্রাক্কলিত ব্যয়ে ধরা হয়েছে ২৬ কোটি ৭১ লাখ টাকা। 

নেত্রকোনা জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সারওয়ার জাহান সোয়াই নদী পুনঃখননের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মেসার্স ইউসুফ ব্রাদার্স ও আমিন অ্যান্ড কোম্পানি নামের দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান খননের কাজ পেয়েছেন। খুব দ্রুত অবৈধভাবে নদী দখলদারদের উচ্ছেদ ও নদীর সীমানানির্ধারণ করা হবে। পূর্বধলা উপজেলার শিমুলকান্দি থেকে খননের কাজ শুরু হয়েছে। আগামী অক্টোবর নভেম্বর মধ্যে কাজ শেষ হবে।

নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, সোয়াই নদী বা সোয়াইন নদী পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদীর বাম তীরের শাখা নদী। এটি বেশ পুুুরোনো একটি নদী। পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদীর চরনিলক্ষীয়া ভাটিপাড়া থেকে এই নদীর উৎপত্তি। এটি কামারিয়া ইউপি কাশিগঞ্জ বাজার দিয়ে গৌরীপুর উপজেলার মইলাকান্দার সাতপাই গ্রামের মাঝ বরাবর নওপাইও শ্যামগঞ্জ বাজারের পাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়ে হাফেজ জিয়াউর রহমান ডিগ্রি কলেজের সামনে দিয়ে পূর্বধলায় পতিত হয়েছে। 

এরপর নদীটি প্রবাহিত হয়ে ইসবপুর গ্রামের পাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। ভূগী পশ্চিম পাড়ায় দাপুনিয়া বাজারের সঙ্গে কুকুয়ালি খাল হয়ে নেত্রকোনার মোগরা নদীতে গিয়ে মিলেছে। কালের বিবর্তনে এই নদীটি ধীরে ধীরে পলি পরে পরে ভরাট হয়ে যায়। এখন নদী বলতে এর কোন অস্তিত্ব নাই। প্রাণহীন নদীতে বসেছে মানুষের ভাগ। দখল তান্ডবে নদীর বুকে গড়ে উঠেছে দোকান, বসতবাড়ি, পুকুর, ধানি জমি। পূর্বধলা, গৌরিপুর ও নেত্রকোনা এই তিন উপজেলায় অবস্থিত নদীর যৌবন ফেরাতে কাজ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

নদী ও পরিবেশ আন্দোলন সংগ্রামীরা বলেন, জলের আধার, আমিষের উৎস এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় ভূমিকা রাখবে উদ্ধার হওয়া এ নদীটি। হারিয়ে যাওয়া মরা সোয়াই নদী তার স্বাভাবিক গতি ফিরে পাবে। নদী উদ্ধারে মরা সোয়াই হতে পারে দৃষ্টান্ত এমনটাই দাবি তাদের।

স্থানীয়রা বলেন, নদীটি পুনঃখনন হলে দীর্ঘ ৫০ বছর পর এই নদী হারানো যৌবন ফিরে পাবে। নদীতে পানির প্রবাহ ঠিক থাকলে এই অঞ্চলের মানুষের অনেক সুবিধা হবে। শাখা নদীর পানি ব্যবহারের মাধ্যমে বড় পরিবর্তন আসবে এলাকার কৃষিকাজে। বদলে যাবে এই অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি। কৃষকেরা সেচ সুবিধা পাবে। এতে করে পরিবেশ উন্নত হবে। মৎস্য সম্পদ বাড়বে।
 
পূর্বধলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. খবিরুল আহসান বলেন, নদী পুনঃখননের ফলে একদিকে যেমন প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা হবে, তেমনি নদী তার হারানো যৌবন ফিরে পারে। 

নেত্রকোনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরিচালক এফ. এস মোবারক আলী বলেন, সোয়াই নদী একটি গুরুত্বপূর্ণ নদী। নদীটি পুনঃখনন কাজ শেষ হলে একদিকে নদী যেমন তার হারানো গতি পথ ফিরে পাবে, অপরদিকে কৃষকেরা সেচ সুবিধা পাবে। ফলে কৃষকেরা আর্থিকভাবেও লাভবান হবে।

নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক শাহেদ পারভেজ বলেন, সোয়াই নদীর অনেক জায়গা দখল করে ভরাট করে ফেলেছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এসব অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা হবে।

নেত্রকোনা-৫ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আহমদ হোসেন বলেন, খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে নদী খননের কাজ শেষ হবে ও অবৈধ নদী দখলদারদের উচ্ছেদ করা হবে। নিজ দলের লোক হলেও কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত