রবিবার ২২ জুন ২০২৫ ৮ আষাঢ় ১৪৩২
রবিবার ২২ জুন ২০২৫
সোনাগাজীতে আইপিএম পদ্ধতিতে চাষাবাদে কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে
সোনাগাজী (ফেনী) প্রতিনিধি
প্রকাশ: বুধবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০২৪, ৭:৩০ PM
সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা (আইপিএম) পদ্ধতিতে চাষাবাদে কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে। সোনাগাজী উপজেলার চরচান্দিয়া ইউনিয়নের মহেশ্চর ও আমিরাবাদ ইউনিয়নের সোনাপুর এলাকার  কৃষকদের জন্য উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে পরিবেশবান্ধব কৌশলের মাধ্যমে নিরাপদ ফসল উৎপাদন প্রকল্পের অধীনে কৃষক মাঠ স্কুল চালু করা হয়েছে। 

কীটনাশকমুক্ত ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যে  জৈবিক বালাই ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম জনপ্রিয় করা এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য।  সপ্তাহের প্রতি সোমবার ও বৃহৎস্পতিবার কৃষক মাঠ স্কুলে ক্লাস হয়। স্কুলে তাঁদের মোট ১৪টি ক্লাস করানো হবে। 

বাখারিয়া কৃষক মাঠ স্কুলে (সবজি) বুধবার স্কুলের ৭ম ক্লাস অনুষ্ঠিত হয় । কৃষক মাঠ স্কুলের কৃষকদের উপস্থিতি প্রায় শতভাগ ছিলো। প্রতি কৃষকের হাতে খাতা-কলম,মাথায় কালো রঙের টুপি। বসেন ট্রয়াল মাঠেই পলিথিন বিছিয়ে। স্কুলের সদস্য সংখ্যা ২৫ জন। ১৫ জন পুরুষ ও ১০ জন নারী। তাঁদের জানানো হচ্ছে কীটনাশক ছাড়াই কিভাবে সবজি উৎপাদন করা যায়। কোন পোকা কী ধরনের উপকারে আসে। শুনে শুনে কেউ খাতায় লিখছেন। যিনি লিখতে পারেন না তাঁর খাতায় অন্যজন লিখে দিচ্ছেন। কারো কোনো প্রশ্ন থাকলে জানতে চাইছেন।

অজানা অনেক কিছু কৃষকদের জানিয়ে দিচ্ছেন প্রশিক্ষক  কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার মোঃ আল আমিন শেখ ও উপসহকারি উদ্ভিদ সংরক্ষণ অফিসার মোঃ মজির উদ্দিন চৌধুরী।

কৃষক মাঠ স্কুলের সামগ্রিক কার্যক্রমের তদারকি করছেন উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মাইন উদ্দিন আহমেদ। সাথে ছিল কৃষি উপসহকারী  কর্মকর্তা নাঈমুল ইসলাম।

উপজেলা কৃষি অফিসারের কার্যালয় সূত্র জানায়,  উপজেলায় মোট ২টা আইপিএম স্কুল চালু করা হয়েছে। প্রতি সপ্তাহে একটি করে স্কুলে তাঁদের মোট ১৪টি ক্লাস করানো হবে। উক্ত প্রকল্পের আওতায় চরচান্দিয়া ইউনিয়নের মহেশ্চর ব্লকে  ৩টি জৈব কৃষি ও জৈবিক বালাই দমন প্রদর্শনী (মিষ্টি কুমড়া) বাস্তবায়ন করা হয়েছে ও আমিরাবাদ সোনাপুর এলাকায় ৩ টি করলার প্রদর্শনী বাস্তবায়ন করা হয়। আইপিএম স্কুল ছাড়াও জৈব কৃষি ও জৈবিক বালাই দমন এর আরো ১২ টি প্রদর্শনী  সোনাগাজী বিভিন্ন ইউনিয়নে  বাস্তবায়িত হয়েছে। 

এখান থেকে কৃষক শিখতে পারবেন কিভাবে কীটনাশক ছাড়া ও জৈব পদ্ধতিতে  সবজি উৎপাদন করা যায়। এ স্কুলে কৃষকদের কাজের সুবিধার্থে কৃষক-কৃষানিদের নিয়ে পাঁচটি দল তৈরি করা হয়। কৃষকদের হাতে-কলমে শিক্ষা দেওয়ার পাশাপাশি সবজির মাঠে নিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

কৃষক আকবর হোসেন বলেন, ভালো লাগছে এভাবে শিখতে পেরে। কীটনাশক ছাড়া বিষমুক্ত সবজি উৎপাদনে এ ক্লাস খুব কাজে লাগবে। আসমা বেগম বলেন, অনেক কিছু শিখতে পারছি। আগে তো এভাবে শেখার সুযোগ হয়নি।

উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা নাঈমুল ইসলাম বলেন,পরিবেশ বান্ধব কৌশলের মাধ্যমে নিরাপদ ফসল উৎপাদন প্রকল্পের আওতায় আইপিএম মাঠ স্কুলের মাধ্যেমে কৃষকদের মাঝে রাসায়নিক বালাইনাশক অবাধ ব্যাবহারের ব্যাপারে সচেতনতা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং জৈব বালাইনাশক ব্যাবহার করে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে তাদের আগ্রহ সৃষ্টি হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি অফিসার মাইন উদ্দিন আহমেদ বলেন, আগে কৃষকরা কীটনাশক প্রয়োগ করে অনেক উপকারী পোকা মেরে ফেলতেন। এখন হাতে-কলমে শিক্ষায় জানতে পারছেন কোন পোকা কী ধরনের উপকারী, কেন পোকা ক্ষতিকর। ক্লাসে কৃষকদের আগ্রহ অনুযায়ী কৃষি উৎপাদনের অন্যান্য বিষয়ও জানানো হয়। বিষ মুক্ত নিরাপদ ফসল নিশ্চিত করন এখন সময়ের দাবী।
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত