সোমবার ৭ জুলাই ২০২৫ ২৩ আষাঢ় ১৪৩২
সোমবার ৭ জুলাই ২০২৫
আলুর বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাঁসি
কেন্দুয়া(নেত্রকোনা)প্রতিনিধি
প্রকাশ: সোমবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ২:৩৮ PM
নেত্রকোনার কেন্দুয়ায়  চলতি মৌসুমে গোল আলু চাষে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে । আলুর ফলনে কৃষকের মুখে হাঁসি ফুটলেও সঠিক দাম না থাকায় হতাশা দেখা দিয়েছে আলু চাষীদের মধ্যে।

আলুর দরপতন অব্যাহত থাকলে আলু চাষীরা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হবে তেমনি আলু চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে তারা। ফলে সামগ্রিক দিক বিবেচনা করলে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিতে পারে।

কেন্দুয়া  উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, কেন্দুয়া  উপজেলার ১৩ টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় আলু চাষের জন্য ব্যাপক উপযোগী। বিশেষ করে কান্দিঊড়া , চিরাং , মোজাফরপুর, রোয়াইলবাড়ি, পাইকুড়া ইউনিয়নে- সান্তানা, সানসাইন, ডোনাটা, ডায়মন্ড, বারি ৩৫, বারি ৪৭ ইত্যাদি জাতের আলু ব্যাপক চাষ করা হয়।

কেন্দুয়া উপজেলায় চলতি মৌসুমে ২৭০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের আলুর চাষাবাদ করা হয়। এবছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় উপজেলা কৃষি বিভাগের পরামর্শে বিভিন্ন ইউনিয়নের চাষীরা আলু চাষ করেন। জেলার মধ্যে কেন্দুয়া  উপজেলা আলু চাষের জন্য ব্যাপক খ্যাতি রয়েছে তাই অর্থকরী ফসল হওয়ায় বিগত কয়েক বছরে এই উপজেলায় আলু চাষে বেশ ঝুঁকে পড়েছেন চাষীরা।

এবার এক বিঘা জমিতে আলুর চাষ করতে ভাল বীজ কেনা সহ ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা খরচ হয় কৃষকের। তবে সার, কীটনাশক , শ্রমিকের মূল্য ও সেচ খরচ বাড়ায় চাষী পর্যায়ে আলু উৎপাদন করতে বাড়তি অর্থ গুণতে হয়েছে। তবুও আলু চাষীরা উৎপাদন বাড়াতে পিছু চেষ্টা করে যাচ্ছেন।

চিরাং ইউনিয়নের মনাটিয়া এলাকার আলু চাষী শাহিরান হিরা ও ইমরান হাসান  জানান, এবছর ৭০ শতাংশ জমিতে আলু আবাদ করেছি । আলু আবাদ করতে গিয়ে বীজ, সার, কীটনাশক ও সেচ দিতে গিয়ে মোটা অঙ্কের অর্থ খরচ হয়েছে। তীব্র শীতে কিছুটা ক্ষতি হলেও আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। এবার প্রতি বিঘায় ১০০ থেকে ১২০ মণ পর্যন্ত আলুর ফলন হয়েছে। আমি আগাম জাতের আলু আবাদ করাতে লাভবান হয়েছি।

এছাড়াও বিভিন্ন ইউনিয়ন এলাকা ঘুরে জানা যায়, আবহাওয়া ভাল থাকায় এবার আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষকরা এখন মাঠ থেকে আলু মাটির নিচ থেকে উত্তোলন করে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন। আলুর উৎপাদনে কৃষকের মুখে হাঁসির ঝিলিক দেখা গেলেও দাম নিয়ে রয়েছেন ব্যাপক দুশ্চিন্তায়।

 উপজেলার বিভিন্ন বাজারে প্রতি মণ আলু বিক্রি হয়েছে ১০০০ টাকা থেকে ১২০০ টাকা। তবে আলুর দাম কম থাকায় হতাশা দেখা গিয়েছে আলু চাষীদের মধ্যে।

আলু বিক্রি করতে আসা কয়েকজন আলু চাষী জানান, ধার দেনা ও গরু বিক্রি করে লাভের আশায় আলু চাষ করেছি কিন্তু এতো কম দামে আলু বিক্রি হওয়ায় খরচের টাকা উঠবে না। ফলন ভাল হলেও ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন তারা। তারা আরো বলেন, যারা আগাম জাতের আলুর আবাদ করেছেন তারা লাভবান হয়েছেন।

তারা আরও জানান, কেন্দুয়া  উপজেলাসহ আশপাশের উপজেলা গুলোতে হিমাগার না থাকায় আলুসহ সবজি জাতীয় পণ্য সংরক্ষণ করা হয় না। ফলে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্য কম মূল্যেই বিক্রি করতে বাধ্য হন। তাই সরকারিভাবে আলুর মূল্য নির্ধারণ করে দিয়ে চাষীদের আর্থিক ক্ষতি থেকে রক্ষার দাবি জানিয়েছেন আলু চাষীরা।

এবিষয়ে কেন্দুয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন সুলতানা জানান, উপজেলায় এমৌসুমে ২৭০ হেক্টর জমিতে আলু আবাদ করা হয়েছে।  আলু চাষ লাভজনক হওয়ায় অর্থকরী ফসল হিসেবে আলু চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। লাভের আশায় প্রতি বছরের ন্যায় এবারও এই এলাকার চাষীরা ব্যাপকভাবে আলুর আবাদ করেছেন। উৎপাদন বৃদ্ধি করতে উপজেলা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের সব ধরণের সহযোগিতা করা হয়ে থাকে বলেও জানান তিনি। 
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত