বেকার জীবন অসহ্য। নিজের পায়ে দাঁড়াতে না পারলে কোনো মূল্যই থাকবে না। এদিকে পুরো সংসার নিজের কাঁধে তাই এসএসসি পাস দিয়েই কিছু একটা করার ইচ্ছে থেকেই কৃষি অফিসের পরামর্র্শ অনুযায়ী স্ট্রবেরি চাষের সিদ্ধান্ত নেয় আলামিন।
শুধু স্ট্রবেরিতেই থেমে নেই আলামিন। মালচিং পদ্ধতিতে শসা, লতি কচু, পিঁয়াজ, রসুন সহ পশাপাশি করেছেন পুষ্টি বাগান। আলামিনের আশা কৃষিকে বুকে ধারন করেই একদিন তিনি স্বাবলম্বী হবেন। ঠিক এভাবেই নিজের ভবিষ্যতের স্বপ্নের কথা জানালেন আলামিন হোসেন। স্কুলের গন্ডি পেরলেও স্বপ্ন ছিল কলেজ জিবন শেষ করে উচ্চ শিক্ষাই শিক্ষিত হওয়ার কিন্তু, পরিবারের অর্থিক সমস্যা থাকার কারণে কোনমত তিনি এসএসসি পাস করেন।
আলামিন হোসেনের বাড়ি বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার ভাটরা ইউনিয়নের মনিনাগ গ্রামে। বুধবার সকালে সরেজমিনে তাঁর নিজের স্ট্রবেরি খেতে কথা হয় আলামিনের সঙ্গে। এসময় তিনি ক্ষেত থেকে স্ট্রবেরি তুলছিলেন বাজারে নেওয়ার জন্য। আলামিন প্রথমবার এলাকায় স্ট্রবেরি চাষ করে বাজিমাত সৃষ্টি করেছে।
আলামিন হোসেন বলেন, পারিবারিক অসচ্ছলতার কারণে বেশি একটা পড়াশোনা করতে পারিনাই, সংসারের হাল ধরতে শিক্ষা জিবনকে মাটি দিয়ে মনস্থির করি নিজ জমিতে কৃষি করার। যোগাযোগ করি নন্দীগ্রাম কৃষি অফিসে। এবং সেখানে বিভিন্ন সময় কৃষির উপর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে উপজেলা সহকারী কৃষি অফিসার নাজমুল হোসেনের পরামর্শ অনুযায়ী ১ বিঘা জমিতে ফেস্টিবল জাতের স্ট্রবেরির চাষ করি। স্ট্রবেরি চাষে এপ্রর্যন্ত আমার ৮০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। স্ট্রবেরি তোলা শুরু হয়েছে তিন চালানে এ প্রর্যন্ত ৩০ হাজার টাকার স্ট্রবেরি বিক্রয় করেছি।
একদিন পর পর ফল সংগ্রহ করা যাচ্ছে বাজারে স্ট্রবেরির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে ৪৫০/৫০০ টাকা কেজিতে স্ট্রবেরি বিক্রয় হচ্ছে। যদি আবহাওয়া অনুকূলে থাকে শেষ প্রর্যন্ত দুই থেকে আড়াই লক্ষ টাকার স্ট্রবেরি বিক্রি করে লাভবান হতে পারবো। উক্ত ব্লকের উপসহকারী কৃষি অফিসার নাজমুল হোসেন বলেন, আলামিন অত্যান্ত পরিশ্রমী একজন কৃষক। সে কৃষি অফিসের পরামর্শ অনুযায়ী ১বিঘা জমিতে ফেস্টিবল জাতের স্ট্রবেরির চাষ করেছে ফল পাকতে শুরু করেছে। তিনি ৫০০ টাকা কেজি দরে স্ট্রবেরি বিক্রি করছেন। স্ট্রবেরি তুলে বগুড়া ও ঢাকায় ফলের দোকানে পাইকারিভাবে বিক্রি করছেন। এছাড়া নন্দীগ্রামের বিভিন্ন ফলের দোকানেও আলামিনের স্ট্রবেরি বিক্রি হচ্ছে। লাভ আসতে শুরু করেছে।
আমি শুরু থেকে আলামিনকে স্ট্রবেরি চাষে সহযোগীতা করে আসছি। আশা করছি স্ট্রবেরি চাষে আলামিন অনেকটা লাভবান হতে পারবে। জানতে চাইলে নন্দীগ্রাম উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ গাজিউল হক বলেন, আলামিন হোসেন একজন সাহসী চাষি। এই প্রথম তিনি স্ট্রবেরি চাষ করলেও প্রথম বার স্ট্রবেরি চাষ করেই বাজিমাত সৃষ্টি করেছেন। কৃষি অফিস থেকে আলামিনকে স্ট্রবেরি চাষে সবসময় বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে। বাজারে এর অনেক চাহিদা রয়েছে। আবহওয়া ভালো থাকলে স্ট্রবেরি বাজারে বিক্রয় করে অনেক লাভবান হতে পারবেন আলামিন।