সোমবার ৭ জুলাই ২০২৫ ২৩ আষাঢ় ১৪৩২
সোমবার ৭ জুলাই ২০২৫
কেন্দুয়ায় রমজানে নিত্যপণ্যের বাজারে আগুন
কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১৪ মার্চ, ২০২৪, ৩:৪০ PM
নেত্রকোনার কেন্দুয়া বাজারে বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) সকালে বাজার করতে আসেন সাউদপাড়া এলাকার বাসিন্দা আব্দুস সাকি। কাঁচাবাজারে ঢুকে শঁসার দাম জিজ্ঞেস করলে বিক্রেতা জানালেন, প্রতি কেজি ১০০ টাকা। তাতে চোখ কপালে ওঠা আব্দুস সাকি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘দুই দিন আগেওতো শঁসা কিনেছি ৬০ টাকায়। আজ এমন কী হয়েছে, যাতে কেজিতে ৪০ টাকা বেড়ে গেল?’

তাঁর কথায় ভ্রুক্ষেপ করলেন না বিক্রেতা। উল্টো শুনিয়ে দিলেন, ‘১০০ টাকার কম হবে না। কিনলে কিনেন, না হয় চলে যান।’

গরুর মাংসের কেজি বিক্রি হচ্ছে হাড়সহ ৬৫০ টাকা, হাড় ছাড়া ৭৫০ টাকায়। এ ছাড়া ২০ টাকা বেড়ে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২১০ টাকায়। সোনালি মুরগি ৩২০ টাকা এবং দেশি মুরগি সাড়ে ৪১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

আব্দুস সাকির মতো প্রথম ও দ্বিতীয় রমজানের দিন যাঁরা কাঁচা বাজারে গিয়েছেন, সবজির দাম শুনে তাঁদের সবারই চোখ কপালে উঠেছে। রমজান শুরু হতে না হতেই হুহু করে বাজারে বেড়ে গেছে সবজির দাম। আলু, বাঁধাকপি, টমেটো ছাড়া কোনো সবজিই ৬০ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে না।

বাজারের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম সম্পর্কে জানতে চাইলে ক্রেতা রেজাউল করিম বলেন, বিশ্বের অনেক মুসলিম দেশে রমজান মাস এলে নিত্যপন্যের‘ দাম কমে আর আমাদের দেশে তার উল্টো। রমজান উপলক্ষে এখন যে হারে দাম বাড়ছে তাতে আমাদের না খেয়ে থাকতে হবে। বাজারে এখন বেশির ভাগ সবজিই ৬০ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে না।’

কেন্দুয়া কাঁচা বাজারের  ব্যবসায়ী  ছবি মিয়া বলেন, ‘এখন মোকামেই সবজির দাম বেশি। তাই আমাদের বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। এক কেজি বেগুন পাইকারিতে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা দাম পড়ে। তাহলে আমরা কত বিক্রি করব?’

সরেজমিনে কেন্দুয়া বাজার ঘুরে দেখা যায়, কেজিতে ১৫ থেকে ২০ টাকা বেড়ে বেগুন, ঢ্যাঁড়স, পটল, চিচিঙ্গা, মিষ্টি কুমড়া বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা দরে। ১০ টাকা বেড়ে ঝিঙা ৭০ টাকায়, ২০ টাকা বেড়ে বরবটি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়, ২০ টাকা বেড়ে করলা ৯০, ১০ টাকা বেড়ে গাজর প্রতি কেজি ৩০, লাউ ৪০, পেঁপে ৩৫, কাঁচা কলা প্রতি হালি ৩০,শঁসা ১০০-১২০ টাকা এবং লেবু প্রতি কেজি ৯০-১০০ টাকা।

২০ টাকা বেড়ে রমজানে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজনীয় কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। ২০ টাকা বেড়ে ধনে পাতা বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। ২০ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি ক্ষীরা বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়।

বাজারে সবজির দাম বাড়লেও গরুর মাংসসহ তেল, ডাল, ছোলা চিনির দাম স্বাভাবিক রয়েছে। অবশ্য এসবের দাম আগেই বেড়ে আছে। বেড়েছে সব ধরনের মুরগির দাম। ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে মাছের দাম। রুই, কাতলা বিক্রি হচ্ছে আকারভেদে ২০০ থেকে সাড়ে ৩৫০ টাকায়। তেলাপিয়া, পাঙ্গাস বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ২৫০ টাকায়। 

প্রতি কেজি ছোলা বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়। সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৭৫ টাকা। খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ২৩০ টাকা। চিনি ১৫০ টাকা, পেঁয়াজ ৮০-৯০  টাকা, রসুন বিক্রি হচ্ছে ২০০-২২০ টাকায়।

এবিষয়ে কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমদাদুল হক তালুকদার বলেন, আমাদের আজ থেকে নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হবে, নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান ও অব্যহত থাকবে, কেউ যদি সিন্ডিকেট করে বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় তবে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলেও জানান তিনি।
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত