বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে উদ্ভাবিত পৃথিবীর বুকে এটাই প্রথম ফ্রি এনার্জি দিয়ে তৈরী যন্ত্র যা কৃষকের হাতের ছোঁয়া ছাড়াই সেচ, সার, কীটনাশক জমিতে প্রয়োগ করা যাবে।
আধুনিক স্মার্ট বাংলাদেশে যন্ত্রই এখন কৃষিকাজ করবে। কৃষকদের রোদে পুড়ে মাথার ঘাম পায়ে ফেলার দিন শেষ। দীর্ঘ ৬ মাস ধরে গবেষনা করে আধুনিক কৃষিকাজকে একদম সহজ করতে এই যন্ত্র উদ্ভাবন করে তাক লাগিয়ে দিলেন বগুড়ার যন্ত্র বিজ্ঞানি আমির হোসেন।
জমিতে সেচ ব্যবস্থা, কিটনাশক ছিটানো, বীজ ছিটানো এবং যেকোন সার ছিটানো আর হাতে নয়, এই যন্ত্রের মাধ্যমেই মাটির গভীর থেকে পানি উঠানো যাবে ও জমিতে প্রয়োগ করা যাবে। সঠিক নিয়মে অতি সহজে এই যন্ত্র জমিতে সার ছিটাবে, কিটনাশক স্প্রে করবে জমির এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে। এজন্য বিদ্যুৎ নিয়ে ভাবতে হবে না, সোলার বিদ্যুৎ দিয়েই চলবে এই যন্ত্র। হাতের ছোঁয়া ছাড়াই ২৪ ঘন্টা এই যন্ত্র ব্যবহার করতে পারবেন কৃষকরা।
যন্ত্র বিজ্ঞানী আমির হোসেন জানান, আমার তৈরি এ যন্ত্র ব্যবহার করে কৃষিকাজ করা হলে উৎপাদন খরচ কমে আসবে ৮০%। এতে করে বাজারে রবি শস্যের মূল্য অনেক কমে আসবে। এ যন্ত্রটি ডিভাইজ টাইমার ও সেন্সর সিসটিমে চলবে।
৭ দিন সমান ১৬৮ ঘন্টায় কতবার জমিতে কত সময়ে কত মিনিটে কত কিউসেফ পানি দিতে হবে তা যন্ত্রে টাইমারে একবার সিসটেম করে দিলে ঠিক ওইভাবে এই যন্ত্র ৭ দিনের মধ্যে ওই সময়ের মধ্যে পানি, সার, কিটনাশক ওষুধ ছিটানোর কাজ করে যাবে। এই যন্ত্রে সোলার বিদ্যুৎ রিজার্ভের জন্য বিদ্যুৎ কন্ট্রোলার সিসটেম ব্যবস্থা করা আছে যা দ্বারা রাতে কিংবা মেঘে ঢাকা বৃষ্টির মৌসুমে বিদ্যুতের কারণে যেন যন্ত্র চালনার কোন সমস্যা না হয়। এজন্য এরপাশে সেটিং এর কাজ চলছে ফ্রি এনার্জী বিদ্যুৎ প্লান্ট। এই যন্ত্র চালানোর জন্য মোট লকথা বিদ্যুতের কোন সমস্যা হবে না, ২৪ ঘন্টাই বিদ্যুৎ রিজার্ভ থাকবে।
কোন খরচ ছাড়াই পৃথিবীর বুকে এটাই প্রথম ফ্রি এনার্জি কৃষি যন্ত্র যা সেচ, সার, কীটনাশক, ছিটানোর অত্যাধুনিক যন্ত্র হিসেবে কাজ করবে। যন্ত্র বিজ্ঞানী আমির হোসেন মনে করেন, তাঁর উদ্ভাবিত এই যন্ত্র উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের জন্য বিপুল পরিমান অর্থনৈতিক সাপোর্ট প্রয়োজন। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সাপোর্ট পেলে তিনি স্বল্প খরচে এ যন্ত্র তৈরি করে বিভিন্ন প্রকারভেদে বিভিন্ন মুল্যে সহজ পদ্ধতিতে কৃষকের হাতে হাতে পৌঁছে দিতে পারবেন। এতে করে বাংলাদেশে কৃষিকাজে অভূতপূর্ব বিপ্লব সাধিত হবে।
আগে প্রতিটি জমিতে চাষাবাদের সময় না জেনে কৃষকরা পানি সেচ দেয়ার সময়, কিটনাশক ও সার ছিটানোর সময় এবং বিজ বপনের সময় অতিরিক্ত সময় অপচয় করতেন যা মিথেন গ্যাসের সৃষ্টি হতো। এতে পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি সাধন হচ্ছে। এ যন্ত্র কৃষিকাজে ব্যবহার করা হলে পরিবেশের ভারসাম্য ফিরিয়ে আসবে এবং শ্রমিকের ব্যয়বহুল খরচ কমে আসবে।
পরিবেশ বান্ধব এ যন্ত্র সময় ও টাকার অপচয় রোধ করবে। কৃষিক্ষেত্রে ব্যাপক উৎপাদন হবে, লাভবান হবে কৃষক। মোট কথা কোন খরচ ছাড়াই এই বড় প্রজেক্ট চলবে। যন্ত্র বিজ্ঞানী আমির হোসেন বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে প্রযুক্তিগত দিক কৃষিকে যন্ত্রের আওতায় এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। দেশী বিদেশী প্রযুক্তিবিদদের আমার এ গবেষনাগারে এ যন্ত্রগুলো দেখার আমন্ত্রনও জানানো যাচ্ছে। যাতে এ যন্ত্রগুলো দেশে ব্যবহারের পাশাপাশি বিদেশেও যাতে রপ্তানী করা যায়। পাশাপাশি কারখানায় ইতিমধ্যেই যন্ত্র বিজ্ঞানী আমির হোসেনের উদ্ভাবিত যন্ত্রের মাধ্যমে শিল্প ও কৃষি ক্ষেত্রে যান্ত্রিক বিপ্লব শুরু হয়েছে।
কৃষকের কষ্ট অনেক লাঘব হয়েছে। যার প্রমান কৃষি সেক্টরে তাকালেই দেখতে পাওয়া যায়। কৃষিতে উৎপাদন বৃদ্ধির দিক হচ্ছে যান্ত্রিক যুগে প্রবেশ। আমির হোসেন বগুড়া শহরের সুপরিচিত ব্যাক্তি। এক সভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে তাঁর জন্ম। তারা ৭ ভাই ১ বোন। আমির ৪র্থ নম্বর। শহরের কাটনার পাড়া তাঁর জন্ম স্থান। ১৮৮০ সালে দাদার ছিল কামার শালা। তা থেকে ধলু মেকার ১৯৪০ সালে কামারশালা থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে। সে সময় লোহার গুনগত মান সমন্ধে মানুষের তেমন জ্ঞান ধারোনা ছিল না যে লোহা দিয়ে কি কাজ করা হয় তখন লোহার সঙ্গে পরিচয় করান আমিরের বাপ দাদারা আর তার সংপর্শেই বেড়ে উঠা আমিরের শিক্ষা জীবনে শুরু থেকে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করা বাংলাদেশ প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে রিভার্স ইঞ্জিরিয়ারিং পাশ করা।
লেখা পড়ার ফাঁকে ফাঁকে দুই ঘন্টা করে কাজ শেখা বাধ্যতামূলক ছিল আমিরের এভাবে বাবার ওয়ার্কসপে কাজ শিখেছেন আমির হোসেন কাজ শিখার ব্যাস্ততার কারনে লেখা পড়ায় আর এগুতে পারেনি বাবার মৃত্যুর পর সম্পুর্ণ কারখানার দায়িত্ব পড়ে শুরু হয় বিভিন্ন মেশিন গাবেষণা করে বের করা বিভিন্ন পত্র পত্রিকা মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে; সারা দেশে সুনাম কুড়িয়ে নেন আমির হোসেন। তিন ডজন মেশিন উদ্ভাবন করেছেন মাঝে মধ্যে সল্প আয়ের প্রযুক্তি ও পরিবেশ বান্ধব প্রযুক্তির সব মেশিন পত্রের অসাধারণ কিছু বিষয় যা নি:সন্দেহে মনন শীলতার পরিচয়ক বটে।
আধুনিক জীবন বোধ সম্পন্ন এই গবেষক নিজের ভেতর ও পরিণত সৃজনশীলতা নিরন্তর খেলা করে। প্রকাশ ঘটে বিভিন্ন যন্ত্র পাতি উদ্ভাবনের মধ্যে দিয়ে যা জাতীয় বা আন্তজার্তিক মেলার মধ্যে দিয়ে প্রকাশ পায় তারই ধারাবাহিকতায় জাতীয় বীজ প্রযুক্তি মেলা ২০০৮ কৃষি মেশিনারী ও যন্ত্র পাতি বিভাগ আয়োজক পল্লী উন্নয়ন একাডেমী বগুড়া কৃষি যন্ত্র তৈরীতে শ্রেষ্ঠ পুরস্কারে পুরস্কৃত হন ও যন্ত বিজ্ঞানী খেতাব দেন ২০০৮ সালে ৫ দিন ব্যাপি চীন মৈত্রী সম্মেলন মিলনায়তনে ঢাকায় আন্তজার্তিক প্রযুক্তি মেলায় জ্বালানী বিহীন গাড়ী প্রদর্শনীতে যন্ত্র বিজ্ঞানী জাতীয় ও আন্তজার্তিক ভাবে কেন্দ্র বিন্দ্রতে পরিণত হয়।
জাতীয় ও আন্তজার্তিক উন্নয়ন সংগঠন অক্সফাম (ইংল্যান্ড) এবং বিশ্ব প্রচার ভিয়ান ‘গ্রো’ খাদ্য উৎপাদনে ও কৃষিতে যন্ত্রপাতি দিয়ে কৃষি কাজকে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে অগ্রনী ভুমিকা পালনের জন্য যন্ত্র বিজ্ঞানী আমির হোসেন পেলেন সি.এস আর.এল খাদ্য ও কৃষি পুরস্কার ২০১১ অর্জন করেন ১৩,১৪ ও ১৫ সেপ্টেম্বর ঢাকাস্থ সিরডাপ মিলনায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে যন্ত্র বিজ্ঞানী এই পুরস্কার গ্রহন করেন উল্লেখ্য জাতীয় পর্যায়ে কৃষি যন্ত্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য ১৫ জনকে কৃষি বিজ্ঞানী সি.এস আর এল পুরস্কার প্রদান করেন ৮ জন উদিয়মান সংসদ সদস্য ও গ্যানেস প্রাইস জোনস কান্টি ডিরেক্টর অক্সফাম। চীন, নেপাল, ভূটান, ভারত, জাপান, জার্মান, বেলজিয়াম, আই.এল ও সুইজার ল্যান্ডের প্রকৌশলীরা এরা সবাই আমির হোসেনের কারখানা পরিদর্শন করে অভিভূত হয়ে তারা প্রযুক্তিগত সহযোগীতা করতে চেয়েছেন।
সাউথ এশিয়া এন্টার প্রাইজ ডেভিলপমেন্ট ফ্যাসিলিটির বিশেষজ্ঞ দল ও আমরিকান দাতা সংস্থা উইনরকে ইন্টার ন্যাশনাল বিশেষজ্ঞ দল আমির হোসেনের খুবই প্রশংসা করেছেন। তারা দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে কম খরচের মেশিন পত্র বাজারজত করার বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছেন। এসব যন্ত্রপাতি তৈরী করুক তারা লোক কষ্ট প্রকল্পের মাধ্যমে এসব যন্ত্রপাতি তৈরী ও উদ্ভবন কৌশল বর্হি বির্শ্বে ছাড়িয়ে দেবার আমন্ত্রন ও জানিয়েছেন।
আমির হোসেনের এসব যন্তপাতি উদ্ভাবনের ফলে শুধু দেশের মানুষই উপকৃত হয়নি প্রতি বছর লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পে দুই হাজার কোটি টাকার পণ্য আমদানিতে যে সাশ্রয় হয় তার একটি অংশের মেশিন পত্র তৈরী হচ্ছে আমির হোসেনের কারখানায়। একেবারে ছোট বেলা থেকে পৃথিবীর মানুষ জাতির জন্য ভাল কিছু করার সুতীব্র আকাঙ্খা লালন করে আসছেন অন্তরে তার আজন্ম লালিত স্বপ্ন হলো একদিন নিশ্চয় উন্নতি উন্মক্ত সোপানে পা রাখবে পৃথিবীর গোলায় তার পর শুধুই সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া। যন্ত্রকে কৃত্রিম বুদ্ধি মত্তা দিয়ে মানুষের কষ্ট সাধ্য কাজকে সহজ করার স্বপ্ন বাস্তবায়নের অন্যতম পথিকৃৎ যন্ত্র বিজ্ঞানী আমির হোসেন যন্ত্রকে বুদ্ধিমান বানানোর কাজ এগিয়ে নিচ্ছেন তিনি যন্ত্র বিজ্ঞানী আমির হোসেন এর প্রকৌশলী কারখানায় আরো কিছু আধুনিক মেশিন স্থাপন করে আরো আধুনিক যন্ত্র তৈরী করে কৃষিতে ব্যাপক উন্নতি সাধন করতে চায়।