শনিবার ২১ জুন ২০২৫ ৭ আষাঢ় ১৪৩২
শনিবার ২১ জুন ২০২৫
দখল দূষণে মরা খালে প্রাণ ফেরার অপেক্ষা
আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ: শুক্রবার, ৩ মে, ২০২৪, ২:২৮ PM
ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলা থেকে সীমান্ত পার হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার স্থলবন্দর, গাজীরবাজার, নারায়ণপুর বাইপাস মোড়, পৌর এলাকার সড়ক বাজার ও বড় বাজার দিয়ে প্রবাহিত হয়ে তিতাস নদীতে মিলিত হয়েছে কালন্দি খাল।

ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলার পানিও এই খাল দিয়ে প্রবাহিত হয়। একসময়ের খরস্রোতা কালন্দি খাল দখল আর দূষণে এখন মৃত প্রায়। আখাউড়া প্রকৃতি ও পরিবেশ ক্লাব নামে একটি সংগঠনের দীর্ঘদিনের আনন্দোলন আর দাবির প্রেক্ষিতে গত ২০২১ সালের নভেম্বরে কালন্দি খালটি দখল ও দূষণমুক্ত করার উদ্যোগ নেয় উপজেলার প্রশাসন।প্রায় ৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য খালটিতে ৩৪ জন মালিকের শতাধিক অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিত করে নামেমাত্র অভিযান পরিচালনা করে উচ্ছেদ অভিযান শেষ করে তখন উপজেলা প্রশাসন।

আখাউড়া উপজেলা ভূমি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পৌর এলাকার প্রাণকেন্দ্রের ৩৭৫ ও ১৪৯ দাগের অংশে সবচেয়ে বেশি দূষণ ও দখল হয়েছে। শহরের ভেতরে হওয়ায় দখলদারদের নজর খালের ওপর।

স্বাধীনতার দীর্ঘ ৫ দশক পর খালটি দখলমুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়ায় খুশি হয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দাসহ প্রকৃতিপ্রেমীরা। কিন্তু ওই উচ্ছেদ অভিযানের পর দেড় বছর গত হলেও কালন্দি খালে প্রাণ ফেরানোর কোন উদ্যোগ না নেওয়ায় এখন হতাশ স্থানীয় বাসিন্দাসহ প্রকৃতিপ্রেমীরা।তবুও অপেক্ষা মরা খালে খালে প্রাণ ফেরার।

আখাউড়া উপজেলা নির্বাহীর অফিস সূত্রে জানা গেছে, খাল খননের কাজটি কয়েক ধাপে করা হবে।প্রথম ধাপের টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষে ঠিকাদার নিয়োগ হয়েগেছে। দ্রত খনন কাজ শুরু হবে।

আখাউড়া প্রকৃতি ও পরিবেশ ক্লাবের সদস্য সৈকত আলী বলেন, ছোটবেলায় দেখেছি এই খাল দিয়ে নৌকা চলেছে। অনেক পানি প্রবাহ ছিল। কিন্তু আস্তে আস্তে এই খালটি দখলের কারণে মরা খালে পরিণত হয়েছে। এখানে এখন আর পানি দেখা যায় না। আমরা দীর্ঘদিন থেকে খালটি উদ্ধার করে খননের দাবি জানিয়ে আসছি। শুনেছি প্রশাসন এই খালটি উদ্ধারের জন্য কাজ করছে। আমরা আশা করব এই খালে যেন আবারো পানি প্রবাহ নিশ্চিত করা হয়।

কলেজ পাড়ার বাসিন্দা মোঃ মনির হোসেন বলেন, আখাউড়া ঐতিহ্যবাহি খাল কালন্দি খাল এটি আখাউড়া পৌর শহরের উপর দিয়ে বয়েগেছে।দীর্ঘদিন যাবৎ খালটি খনন না হওয়ায় আমারকে প্রাকৃতিক দূর্যোগ মোকাবেলা করতে হয়।এতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।কালন্দি খালের ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনার জন্য দ্রত খালটি খনন করার প্রয়োজন। আমরা শুনেছি খালটি খনন করার জন্য টেন্ডার হয়েছে। আশা করছি জনদূর্ভোগ লাগবে দ্রতসময়ের মধ্যে খালটি খনন করা হবে।

পৌর শহরের রাধানগরের বাসিন্দা দীপক ঘোষ বলেন, পৌর শহরের বৃহত্তর এলাকা রাধানগর ও সরক বাজারের মধ্য দিয়ে কালন্দি খালটি প্রবাহিত হয়ে। এই খালটি যোগে যোগে ভরাট হয়ে যাওয়ায় এখন আর পানি প্রবাহিত হয়না।যার ফলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়।ময়লা আর্বজনার স্তুপ জমে জনগণের দূর্ভোগ বেড়েছে। এই খালটি উদ্ধারের জন্য একটি সংগঠন, সাংবাদিক ও সুশীল সমাজ একটি সামাজিক আনন্দোলন গড়ে তুলেছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে কিছু দিন আগে সরকার একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে বলে শুনেছি। আখাউরা বাসির প্রানের দাবি খালটি দ্রুত উদ্ধার করে জনদুর্ভোগ থেকে মুক্তি দিবে। আমরা আশা করছি সরকার দ্রুত প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে জনদুর্ভোগ লাগব করবে।

আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাবেয়া আক্তার বলেন, পৌরসভার পানি নিষ্কাশন একমাত্র খাল এটি। খাল খননের কাজটি কয়েক ধাপে করা হবে।খালটির নাব্যতা পূর্বের ন্যায় ফিরিয়ে আনার জন্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজ করছে।তারা প্রথম ধাপে দেড় কিলোমিটার খাল খননের টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষে ঠিকাদার নিয়োগ দিয়েছে। দ্রত খনন কাজ শুরু হবে।

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত