বিদ্যালয়ের ছাদে শখের বশে ছাদ বাগান করেছে শিক্ষক সুকুমার রায়। সুকুমার রায় নীলফামারী জেলার ডোমারের পাঙ্গাঁ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক(কৃষি) পদে কর্মরত আছেন। সেই বাগানেই এখন শিক্ষক সুকুমার রায় শিক্ষার্থীদের কৃষি বিষয়ে জ্ঞান দান করেন।
সরে জমিনে গিয়ে দেখা যায়,বাগানে সারি সারি টব বসানো। টবে লাগানো হয়েছে বিভিন্ন জাতের ফলজ,ফুল ও শাক সবজি’র গাছ। বেড়ে ওঠা ফুলের গাছে ফুটছে ফুল। প্রজাপতিরা ফুলে ফুলে বসছে উড়ছে। ফলজ গাছে ধরেছে ফল। ফলের মৌ মৌ গন্ধে মনোমুগ্ধকর পরিবেশে ভরে উঠেছে পুরো বাগানটি।
সিঁড়ি বেয়ে বিদ্যালয়ের প্রথম তলার ছাদে উঠতেই হাতের বায়ে দেখা যাবে টবে লাগানো পুই শাঁক, কলমি শাকসহ নানা জাতের শাক। তার পাশেই রয়েছে বাহারী রকমের পাতা বাহারের গাছ,বিভিন্ন প্রজাতির ফুল গাছ ও ফলজ গাছ।পুরো ছাদটিই ফুল, ফল ও সবজির গাছে দৃষ্টি নন্দিত হয়েছে বাগানটি। বিভিন্ন বাহারি ফুলের গাছে ফুল ফুটে বাগানের সৌন্দর্যকে প্রষ্ফুটিত করে তুলেছে। বাগানের সেই অপরুপ দৃশ্য দেখতে প্রত্যহ শিক্ষার্থী ছাড়াও ভিড় করছে এলাকার উৎসাহী মানুষজন। উচ্ছে থাকলে বিদ্যালয়ের ছাদে যে বাগান করা সম্ভব, সেটি প্রমান করেছেন শিক্ষক সুকুমার রায়।
বর্তমানে বাগানে কাঠ গোলাপ, গোলাপ,জবা,কৃঞ্চচুড়াসহ নানা প্রজাতির ফুল গাছে ফুটেছে ফুল। তেমনি নানা জাতের আম,মাল্টা,লেবু,কমলাসহ নানান ফলজ গাছে ফল ধরেছে।
এছাড়াও ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা, গাঁদা ফুল, বেল, আঙুর, জাম্বুরা। ঔষধি গাছের মধ্য রয়েছে ঘৃতকুমারী, তুলসী, পুদিনাপাতা, পাথরকুচি, আকন্দ ও থানকুচি। ছাদের আরেক প্রান্তে রয়েছে লাউ, স্কোয়াস, পেঁপে, বেগুন, মরিচ, ওলকপি,ধনেপাতা,পালংশাক,পুইশাক আর টমেটো।
শিক্ষক সুকুমার রায় জানান, গত ২০১৭সালে নিজ উদ্যোগে শখের বশে বিদ্যালয়ের ছাদে বাগান করা শুরু করি। শুরুতে অল্প কিছু গাছ থাকলেও আজ পুরো ছাদ ভর্তি হয়েছে ফুল ফল ও সবজি গাছে। শৈশব থেকেই বাগান করার শখ ছিল আমার।বিদ্যালয়ের ছাদে সেই কাঙ্খিত স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। তাই বিভিন্ন সময়ে অনেক জায়গা থেকে বিভিন্ন ফুল, ফল ও ঔষধি গাছের চারা সংগ্রহ করে বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে ছাদে বাগান করা শুরু করি। ব্যক্তিগতভাবে প্রায় দুই লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়েছে। তবে টাকাটা এখানে মুখ্য নয়, ছাদকে ফেলে না রেখে শিক্ষার্থীদের হাতে-কলমে শিক্ষা দিতে ছাদকে যে ব্যবহার করা যায় সেই ইচ্ছা থেকে ছাদে ফুল বাগানের পাশাপাশি ফল আর সবজি চাষ করছি। তিনি বলেন,শুধু স্কুল নয় কারও বাড়ির ছাদ ফেলে না রেখে সেখানে সবজি চাষ করে উপার্জন করাও সম্ভব বলে মনে করছেন তিনি।
প্রধান শিক্ষক তরনী কান্ত রায় এবিষয়ে বলেন,বিদ্যালয়টিতে সাড়ে তিনশত শিক্ষার্থী লেখাপড়া করে। উন্নত শিক্ষাদানে বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ বদ্ধপরিকর। বিদ্যালয়ের কৃষি শিক্ষক সুকুমার রায় শিক্ষার্থীদের হাতে কলমে শিক্ষা দিতে স্কুলের ছাদকে ফেলে না রেখে বাগান হিসেবে ব্যবহার করছেন। এতে যেমন শিক্ষার্থীরা উপকৃত হচ্ছেন তেমনি শিক্ষকের পরিকল্পনা আজ উদাহরণ হিসাবে থাকছে অনেকের কাছে।