লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে ব্রাক, আশা, প্রিজম ও উত্তরণ এনজিওর কিস্তির টাকার চাপে হারুনুর রশিদ (৪০) নামে এক চা দোকানদার গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার সকালে চর লরেন্স ইউনিয়নের কোম্পানি রাস্তার মাথায় অবস্থিত নিজ চা দোকানের ভিতর থেকে তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত হারুন উপজেলা চরলরেন্স ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের কোম্পানীর রাস্তার মাথা নামক এলাকার মোর্শেদার বাপের বাড়ির মৃত আমিন উল্লার ছেলে। তিনি ৩ মেয়ে ও ২ ছেলের জনক ছিলেন।
নিহতের পারিবারিক সুত্রে জানা যায়, নিহত হারুনের কোম্পানির রাস্তার মাথা নামক এলাকায় একটি চা দোকান করতেন। তার সংসারের একমাত্র আয়ের মাধ্যম ছিল ওই দোকানটি।
ব্যবসায়িক প্রয়োজনে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে এনজিও সংস্থা ব্রাক থেকে ১ লক্ষ ,আশা ব্যাংক থেকে ৭০ হাজার, প্রিজম থেকে ১ লক্ষ ২০ হাজার ও উত্তোরণ থেকে ৩০ হাজার টাকা ঋণ করেন। ওই ঋণের বিপরীতে ৪ টি সংস্থায় প্রতি মাসে ৩৫ হাজার পাঁচশত টাকা কিস্তি পরিশোধ করতে হয় তার। দোকানের স্বল্প আয়ে কয়েকমাস কষ্ট করে কিস্তির টাকা পরিশোধ করলেও চলতি মাসে পরিশোধ করা অসম্ভব হয়ে পড়ে।
চলতি (জুন) মাসের কিস্তির পরিশোধের কয়েকটি তারিখ পার হয়ে গেলেও টাকা সংগ্রহ করতে না পারায় এনজিও কর্মীদের চাপ ও লোকলজ্জার ভয়ে নিজ দোকানের ফ্যানের আংটার সাথে গলায় রশি লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন।
খবর পেয়ে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করেন। এরপর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেন।
স্বামীর এভাবে মৃত্যুতে তার স্ত্রী বিবি কুলছুম বিমর্ষ হয়ে ভেঙে পড়েছেন আর কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, তার স্বামী ঋণের কিস্তির চাপেই আত্মহত্যা করেছেন। অন্য কোন সমস্যা ছিলনা।
তিনি আরো বলেন, আমারতো সব শেষ হয়ে গেছে, এখন এই ঋণ কিভাবে পরিশোধ করবো। দুজন নাবালক ছেলে সন্তানসহ পরিবারের এতোগুলা মানুষ কিভাবে চলবো?
আমার পৃথিবী অন্ধকার হয়ে গেলো বলে বিলাপ করছেন। কমলনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তহিদুল ইসলাম লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চত করেছেন।