নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় পুলিশের অভিযানে জুয়ার আসর থেকে ৮ জুয়াড়িকে আটক এবং ঐসময় পুলিশের গ্রেফতার এড়ানোর ভয়ে নদীতে ঝাঁপিয়ে হালিম মিয়া (৩৫) নামে এক জুয়াড়ির পানিতে নিখোঁজ রয়েছে বলে জানা গেছে।
নিখোঁজ হালিম মিয়া কেন্দুুয়া উপজেলার সান্দিকোনা ইউনিয়নের ডাউকি গ্রামের আব্দুল হামিদের (সুনু) ছেলে।
এঘটনাটি গতকাল গত শুক্রবার (১২ জুলাই) রাতে কেন্দুুয়া উপজেলার কান্দিউড়া ইউনিয়নে তাম্বুলিপাড়া পর্যটন এলাকায় কৈজানি নদীতে ঘটে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, জুয়াড়িরা আটপাড়া, মদন, নেত্রকোনা সদর ও নান্দাইল উপজেলার বাসিন্দা। নৌকা নিয়ে হাওর এলাকায় ভ্রাম্যমাণ অবস্থায় তারা জুয়া খেলে থাকে। গত তিন দিন আগে তারা এই এলাকায় এসে কৈজানি নদীতে নৌকায় জুয়া খেলা শুরু করে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ৮ জন জুয়াড়িকে নৌকা থেকে গ্রেফতার করা হয় এবং অন্যরা পালিয়ে যায়। এসময় তাদের সাথে ছিল জুয়া খেলার তাস,বিছানোর জন্য প্লাস্টিকের চট এবং তিন হাজার আশি টাকা। তারা সকলেই পেশাদার জুয়াড়ি।
আটককৃতরা হলেন
১.মো: রনি মিয়া(৩২),পিতা-মৃত আব্দুস সামাদ,গ্রাম- চাঁনগাঁও, মদন ২.মো:হাবিকুল ইসলাম (৫৩), পিতা-মৃত মনির উদ্দিন,গ্রাম-কাইটাইল,মদন ৩.মো:শরিফ আহমেদ(২৯),পিতা-আব্দুল মৌল্লা মিয়া,গ্রাম চাঁনগাঁও, মদন ৪.মো:আলমগীর হোসেন(৫২), পিতা মৃত আব্দুল কদ্দুস, গ্রাম- রৌদ্রশ্রী,মদন ৫.মো: রফিকুল ইসলাম(৩৫),পিতা মৃত নুরুল ইসলাম, গ্রাম- বাঁশরী,মদন ৬.মো: সুমন মিয়া(৩৬),পিতা মো:কায়কোবাদ, মদনপুর,নেত্রকোনা৭.মো:মোস্তাকিম,
পিতা -আব্দুর রাজ্জাক, গ্রাম-শ্রীরামপাশা,আটপাড়া এবং ৮. আতাউর রহমান (৩০) পিতা -হাবিবুর রহমান,গ্রাম- বনাই,নান্দাইল।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, তাম্বুলিপাড়া এলাকায় কৈজানি নদীতে ট্রলার নৌকায় জুয়ার বোর্ড বসিয়ে অন্ততপক্ষে ২০-৩০ লোক জুয়া খেলছিল। গোপন সূত্রের ভিত্তিতে কেন্দুুয়া থানার পুলিশ খবর পেয়ে ওই জুয়ার বোর্ডে হানা দেয়। এসময় পুলিশ ৮ জুয়াড়ি আটক করতে সক্ষম হয়,নৌকায় থাকা অন্য জুয়ারিরা পুলিশের গ্রেপ্তার এড়াতে নদীতে ঝাঁপ দেয়।
নিখোঁজ হালিম মিয়ার পরিবার ও স্বজনদের পক্ষ থেকে জানা গেছে, ঘটনার পর থেকে হালিমকে রাতভর বিভিন্ন খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে সকাল বেলা কেন্দুুয়া ফায়ার সার্ভিস খবর দেন।
শনিবার (১৩ জুলাই) কেন্দুুয়া ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় ময়মনসিংহ থেকে একদল ডুবুরি এসে সকাল থেকে এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছেন।
হালিম মিয়া নিখোঁজ থাকায় পরিবারে বইছে শোকের মাতম।
নিখোঁজ হালিম মিয়ার সাথী জুয়েল মিয়া জানান, নৌকায় জুয়ার আসরে খেলতে হালিমসহ তারা কয়েকজন এসেছিলেন। পুলিশ কৌশল করে অন্য নৌকা দিয়ে আমাদের নৌকায় উঠে পড়ে। পরে পুলিশ দেখে যে যেভাবে পারে পানিতে ঝাঁপ দেয়। তিনিও হালিমের সাথে ঝাঁপ দিয়ে সাঁতার খেটে তীরে উঠলেও হালিম উঠতে পারেনি বলে দাবী করেন।
ডাউকি গ্রামের শহীন মিয়া জানান, আমরা যখন খবর পাই তখন থেকে তাকে খুঁজাখুঁজি করছি কিন্তু পাচ্ছি না। এখন ডুবুরি দল এসে খুঁজাখুঁজি করছেন।
কেন্দুুয়া থানা ওসি তদন্ত ওমর কাইয়ুম জানান, নিখোঁজ হালিমকে খোঁজে বের করতে ফায়ার সার্ভিস ও ডুবুরি দল কাজ করছে।
কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনামুল হক পিপিএম জানান, আটকদের বিরুদ্ধে আইনগত প্রক্রিয়া শেষে তাদেরকে নেত্রকোনা বিজ্ঞ কোর্টে সোপর্দ করা হয়েছে।