ব্যান্ড সংগীতশিল্পী লগ্নজিতার ‘বেহায়া’ গানটি ছিল তাদের জীবনের গান। আফসোস করে লগ্নজিতা বলেন, আমার গান যে কারও জীবন ছুঁয়ে গেছে, তা ভাবতে পারি না আমি। সেই মানুষটির যা পরিণতি সে নিয়ে আর নতুন করে কী বলব। আমার কাছে খুব মর্মান্তিক ঘটনা এটি।
তিনি বলেন, সকালে ঘুম ভেঙে হোয়াটসঅ্যাপে বাবার মেসেজ দেখতে পাই। বাবা লিখেছেন— মা, তোমার গান তারা শুনতেন। তোমার পথে নামা উচিত। লগ্নজিতা গান গাওয়াকে সর্বোচ্চভাবে পেশা হিসাবেই দেখে এসেছেন। কেউ যখন বলেন—আপনার গান মানুষের জীবন ছুঁয়ে যায়। তিনি সমর্থন করেননি কখনো। তবে এ ঘটনা তাকে ভীষণভাবে নাড়া দিয়েছে, ভীষণ কষ্ট অনুভব করছি। তিনি বলেন, কী আশ্চর্য! তার প্রিয় এই ‘বেহায়া’ গানের কথার সঙ্গে যেন মিলে গেল তাদের প্রেমের জীবন।
গানের কথার সঙ্গে মৃতা চিকিৎসক পড়ুয়া ও তার প্রেমিকের জীবন জুড়ে ছিল। এমনকি বিয়ের পরিকল্পনাও ছিল তাদের। সে কথা আরও একবার শিল্পীকে স্মরণ করিয়ে দেন তার শাশুড়িমা।
লগ্নজিতা বলেন, দশ বছর ধরে গান গাইছি ইন্ডাস্ট্রিতে। ভাবিনি এত দুঃখজনক ঘটনার সঙ্গে আমার গান জুড়ে যাবে। আমার অসহায় লাগছে তার (মৃতা চিকিৎসক পড়ুয়া) কথা ভেবে। তিনি বলেন, কী প্রতিক্রিয়া দেবেন বুঝতে পারছি না, মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি আমি।
এ সংগীতশিল্পী বলেন, কত অনুরাগী দেখা করেন, মেসেজ করেন। যদি একবার তার সঙ্গে দেখা হতো। যদি একবার ওকে সামনে বসে গানটি শোনাতে পারতাম…, কথা শেষ করতে পারলেন না লগ্নজিতা, কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
তাকে নিয়ে কি নতুন গান বাঁধার কোনো পরিকল্পনা রয়েছে—এমন প্রশ্নের জবাবে কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমার ব্যান্ডের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলব, যদি ওকে নিয়ে একটা গান তৈরি করতে পারি।
শিল্পী একটা বিষয় ইতোমধ্যে ঠিক করে ফেলেছেন। সব সময় দেড় ঘণ্টার গানের অনুষ্ঠানে ১৫টি গান গেয়ে থাকেন তিনি। সাধারণত ১১তম গান ‘বেহায়া’। গান গাওয়ার আগে গান তৈরির নেপথ্য গল্প বলেন লগ্নজিতা। কে লিখেছেন, কীভাবে তৈরি ইত্যাদি কথা শেয়ার করে নেন শ্রোতাদের সঙ্গে। কিন্তু আগামী এক বছর যখনই এই গান গাইব, ওর কথা বলব। দেশ-বিদেশে যেখানেই অনুষ্ঠান হোক। আমার কাছে এটিই হবে বিপ্লবের ভাষা।