হাটু পরিমান জমে থাকা বৃষ্টির পানিতে বসেছে নৌকার হাট। সারি সারি নৌকা বিক্রির জন্য প্রস্তুত। নেই কোন ক্রেতা। ক্রেতার অপেক্ষা করতে করতে নৌকার উপর ঘুমিয়ে পড়েছেন বিক্রেতা অশোক মন্ডল।
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার তারাশী গ্রামে বসে এই নৌকার হাট। বর্ষার শুরুতে বেশ জমজমাট থাকলেও এখন সেই নৌকা বিক্রির সেই জৌলস নেই।
সারাদিন বসে দুএকটি নৌকা বিক্রি করতে পারছেন এক একজন বিক্রেতা। মাসখানেক আগেও প্রতি হাটে একজন বিক্রেতা কম হলেও ২৫ টি নৌকা বিক্রি করতে পেরেছেন। প্রতি শুক্রবার ও সোমবার এখানে বসে নৌকার হাট। সকাল ছয়টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে এই হাট। তবে প্রতিদিনই নৌকা বেচাকেনা হয়।
গত সোমবার (১৯ আগস্ট) বিকালে নৌকার এই হাটে বসে কথা হয় বিক্রেতা অশোক মন্ডলের সাথে। উপজেলা ধারাবাশাইল গ্রাম থেকে এখানে এসেছেন নৌকা বিক্রি করতে। ক্রেতার অভাবে সকাল থেকে সারাদিন ১টি নৌকাও বিক্রি করতে পারেন নি তিনি। তাই পড়ন্ত বিকেলে নৌকার উপরই ঘুমিয়ে পড়েছিলেন।
অশোক মন্ডল বলেন, বর্ষার শুরুতে এখানে নৌকার হাট বেশ জমে ওঠে। তখন প্রতি হাটে ২৫ থেকে ৩০ টি নৌকা তিনি বিক্রি করেছেন। তাছাড়া সপ্তাহের অন্যান্য দিনও প্রায় ১০ টি নৌকা বিক্রি করেন। অন্যেরাও এই পরিমান নৌকা বিক্রি করেছেন এ সময়। এখন বেচাকেনা কমে গেছে। আরো মাসখানেক চলবে এই হাট।
আরেক নৌকা বিক্রেতা সলেমান শেখ জানান, সারাদিনে তিনি ২ টি নৌকা বিক্রি করেছেন। অপেক্ষায় আছেন ক্রেতার।
উপজেলার টুপরিয়া গ্রাম থেকে সুমন মল্লিক নামে এক ব্যক্তি এখানে নৌকা কিনতে এসেছেন। তার বাড়ি বিলের ভিতরে। শুকনো মৌসুমে পায়ে হেটে যাতায়াত করতে পারলেও বর্ষার সময় নৌকা ছাড়া বাড়ির কেউ বের হতে পারেন না। তাছাড়া এ সময় নৌকা দিয়ে তিনি মাছ ধরে ও শাপলা তুলে বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তাঁর পুরোনো নৌকা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তিনি গত সোমবার গিয়েছিলেন তারাশী গ্রামে নৌকার হাটে।
নৌকা ব্যবসায়ীরা বলেন, এই নৌকা বাজারে মূলত ১২ ফুট থেকে ১৬ ফুটের ছোট ও মাঝারি আকারের নৌকা বেশি বিক্রি হয়। অনেকে শুধু বর্ষাকালে চার—পাঁচ মাসের জন্য মৌসুমি এই ব্যবসা করে মাসে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা আয় করেন।