মঙ্গলবার ১ জুলাই ২০২৫ ১৭ আষাঢ় ১৪৩২
মঙ্গলবার ১ জুলাই ২০২৫
শ্রীপুরে স্কুলের সামনে ময়লার স্তুপ, দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা
শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ২:১৩ PM
গাজীপুরের শ্রীপুরে আলহাজ উমেদ আলী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে দুর্গন্ধযুক্ত ময়লা ফেলে পরিবেশ দূষণ এবং বিদ্যালয়ের জমি জবর দখলের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী। 

রবিবার (০৮ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১ টায় শ্রীপুর পৌরসভার ১নং সিএন্ডবি বাজারের পূর্ব পাশে ওই বিদ্যালয়ের সামনে তারা মানববন্ধন করে।

বিদ্যালয়ের সামনে ময়লার দুর্গন্ধে নাক চেপে রাস্তায় চলাচল করতে হচ্ছে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর।

স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারী সোহাগ মিয়া বিদ্যালয়ের পতিত জমিতে দুর্গন্ধযুক্ত ময়লা ফেলে জমি জবর দখলের চেষ্টা করে আসছে বলে অভিযোগ করেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী। নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা আবর্জনার ডাস্টবিন তৈরি করে সেখানে ময়লা ফেলার দাবি জানান তারা।

১ নং সিএন্ডবি-শ্রীপুর আঞ্চলিক সড়কের পাশে বিদ্যালয় ও বাজার থাকায় অনেকে এ সড়ক দিয়ে চালাচল করে। উৎকট গন্ধে পথচারীদের নাক চেপে ধরে চলাচল করতে হচ্ছে। ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে ওই এলাকার পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য। এরপরও স্কুলের পাশে প্রতিদিন ময়লা ফেলায় শিক্ষার্থীদের মনে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।

বিদ্যালয়ের জমি দাতা নূরুল হক জানান, বিদ্যালয়ের সামনে সড়কের পশ্চিম পাশে স্থানীয় সোহাগ শ্রীপুর পৌরসভার ড্রেনের দুর্গন্ধযুক্ত ময়লা আবর্জনা পিকআপ দিয়ে এনে ফেলে রাখে। ময়লার দুর্গন্ধে ক্লাস করতে পারছে না শিক্ষার্থীরা। ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষার পরিবেশ।

স্থানীয় বাসিন্দা ফখরুল ইসলাম জানান, বিদ্যালয়ের পশ্চিম পাশে বাজারের ড্রেনের ময়লা আবর্জনা ফেলে স্তুপ করে রাখা হয়েছে। বছরের পর বছর এ দুর্ভোগের শিকার শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক, পথচারী ও বাসিন্দারা। বেশি দুর্ভোগে পড়েছে স্থানীয় শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ পথচারীরা।

বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মুফতি মাওলানা ফরহাদ হোসেন বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনের রাস্তার পাশে ময়লা আবর্জনা ফেলা মোটেই ঠিক হচ্ছে না। আমরা না করা সত্তে¡ও দিনের বেলায় না ফেলে রাতের আন্ধকারে ময়লা ফেলে যায়। এতে ময়লার দুর্গন্ধে নিঃশ্বাস নিয়ে এই রাস্তাা দিয়ে চলাচল করতে মন চায় না।

শিক্ষার্থী সাদিয়া আক্তার, নেহা, আখিঁ আক্তার, পরশ, আরাফ হোসেন এবং ইব্রাহিম বলেন, আমরা প্রতিদিন স্কুলে আসা-যাওয়া করি। ময়লা আবর্জনার দুর্গন্ধে স্কুলে আসতে ইচ্ছে হয় না। দুর্গন্ধে ক্লাসে বসেও নাক চেপে থাকতে হয়। ময়লার উৎকট দুর্গন্ধে শ্বাসকষ্ট এবং দম বন্ধ হয়ে বমি চলে আসে। স্কুলে গেলে মনে হয় শরীর থেকে ময়লার গন্ধ বের হচ্ছে। বর্জ্যের দুর্গন্ধের কারণে বিদ্যালয় মাঠেও খেলাধুলা করতে পারি ন।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু সাঈদ বলেন, শ্রেণি কক্ষের দরজা-জানালা বন্ধ করে ক্লাস করাতে হয়। গরমে দুর্গন্ধ এত বেশি তীব্র হয় যে বিদ্যালয়ে বসে থাকা যায় না। শ্রেণি কক্ষের দরজা-জানালা বন্ধ করেও দুর্গন্ধ আসে। শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে এ স্থানে ময়লা-আবর্জনা না ফেলার দাবি জানান।
 
অভিভাবক নাজমুল হাসান বলেন, এলাকাটি একটি জনগুরুত্বপূর্ণ। বিদ্যালয়ের পাশাপাশি মানুষের ঘর-বাড়ি ও দোকানপাট রয়েছে। ময়লার দুর্গন্ধে মানুষজন থাকতে পারছে না। আবর্জনার কারণে পোকামাকড় জন্ম নিচ্ছে। মশা-মাছির উৎপাত বেড়ে গেছে। দুর্গন্ধে শিশুদের নিয়ে থাকতে পারি না।

শ্রীপুর পৌরসভার সচিব রফিকুল ইসলাম বলেন, সুন্দর পরিবেশ নিশ্চিত করতে যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলা বন্ধ করতে হবে। বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের পাশে ময়লা আবর্জনা না ফেলে এ জন্য দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা প্রনয় ভূষণ দাস বলেন, ময়লার দুর্গন্ধে মানুষের রোগব্যাধিসহ শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে। শিশু-কিশোরদের ডায়রিয়া, টাইফয়েড, আমাশয়সহ বায়ুর মাধ্যমেও রোগ জীবাণু ছড়িয়ে স্বাস্থ্য ঝুঁকি থাকে।

অভিযুক্ত সোহাগ মিয়া বলেন, ময়লার উপরে বালি ফেলে দেব যেন দুর্গন্ধ না ছড়ায় এবং জমি মেপে বুঝিয়ে দিলে আমি আমার জমি ভোগদখল করব।

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত