বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ফ্যাসিস্টদের বিচার বাংলার মাটিতে হবে।
সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। যাতে এ কার্যক্রমগুলো দ্রুত হয়। সারাদেশে যে মামলাগুলো রয়েছে, অনেকগুলো মামলাই আসলে আবার গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা সেক্ষেত্রে আহ্বান জানিয়েছি যে- সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে যাতে পুলিশ প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নেয় এবং তাদের গ্রেপ্তার করে।
শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বাঙ্গাখাঁ উচ্চ বিদ্যালয়ে বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণকালে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, সংস্কার কমিশন হয়েছে। এ কমিটিগুলোর গতকাল (বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর) বৈঠকও হয়েছে। অক্টোবর মাস থেকে এ কার্যক্রম শুরু হবে। পাশাপাশি শিক্ষা, গণমাধ্যমসহ আরও কিছু সংস্থা সংস্কারের পরিকল্পনা রয়েছে। যে কমিশনগুলো অংশীজনের সাথে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে অভিজ্ঞদের সাথে আলোচনা করে রূপরেখা তৈরি করবে। সকল রাজনৈতিক পক্ষ, সামাজিক পক্ষগুলো মিলে সংস্কার কার্যক্রম শুরু হবে।
বন্যার্তদের নিয়ে উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, এ দুর্যোগে বাংলাদেশের মানুষ জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে সহযোগীতা করেছে। ছাত্ররাসহ সবাই মিলে বন্যার জন্য একত্রে কাজ করেছে। প্রশাসনের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যেভাবে কাজ করেছে সেটি অভূতপূর্ব। এধারা অব্যাহত থাকবে।
ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, আমরা পুনর্বাসন কার্যক্রমের দিকে যাচ্ছি। পানি কমতেছে, মানুষজন আশ্রয় কেন্দ্র থেকে বাড়ি যেতে শুরু করেছে। লক্ষ্মীপুরের পানি দেরীতে কমতেছে। কারণ এখানে খালে বাঁধ ও খাল দখল হয়ে গেছে। সে খাল যদি খনন করা যায়, তাহলে দীর্ঘ মেয়াদী সুরাহা হবে। সে বিষয়ে আমরা দেখবো।
এখানে গৃহনির্মাণের জন্য ইতোমধ্যে বাজেট পাঠানো হয়েছে। বাজেট অনুযায়ী গৃহনির্মাণ এবং জনস্বাস্থ্যের দিকটি আমরা সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে দেখতেছি। পুনর্বাসন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য থেকে শুরু করে এ জনগোষ্ঠীকে সহায়তা করার জন্য সরকার সার্বিকভাবে কাজ করবে।
মৎস্য, কৃষি ও প্রাণী সম্পদখাতে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের বিষয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, সার্বিক যেসব খাতে ক্ষতি হয়েছে, সে বিষয়টি পূরণ করে আবার আগের জায়গায় সে গতিতে ফিরিয়ে আনা যায়। সেটি আমাদের লক্ষ্য।
বলেন, এখানে যারা প্রশাসনে আছেন- পুলিশ, জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন- তারা একত্রে সমন্বিতভাবে খুব সুশৃঙ্খলভাবে ত্রাণ কার্যক্রম এগিয়ে নিয়ে গেছেন। পুনর্বাসন কার্যক্রমটিও এভাবে সমন্বিতভাবে চালু থাকবে, এটাই প্রত্যাশা৷
উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বাঙ্গাখাঁ উচ্চ বিদ্যালয়ে বন্যার্তদের ত্রাণ বিতরণ শেষে মান্দারী ইউনিয়নের যাদৈয়া ইসলামিয়া ফাজিল ডিগ্রি মাদরাসা আশ্রয় কেন্দ্রের বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেন৷
এসময় উপস্থিত ছিলেন লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক রাজিব কুমার সরকার, জেলা পুলিশ সুপার মো. আকতার হোসেন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুর রহমান, সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অভি দাশ ও সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াছিন ফারুক মজুমদার প্রমুখ।