বুধবার ২ জুলাই ২০২৫ ১৮ আষাঢ় ১৪৩২
বুধবার ২ জুলাই ২০২৫
গণপিটুনির ‘নাটক সাজিয়ে’ যুবলীগ নেতাকে ‘পরিকল্পিত হত্যা’
নোয়াখালী প্রতিনিধি
প্রকাশ: রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৭:২৪ PM
সদর উপজেলার সদর ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সহসভাপতি মো. আবদুস শহীদকে (৪৩) গণপিটুনির নাটক সাজিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছেন প্রতিপক্ষের লোকজন। 

ঘটনার পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ–সংক্রান্ত একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা গেছে, মারধরে অংশ নেওয়া লোকজন ওই এলাকার একটি সন্ত্রাসী গ্রুপের সদস্য। তাঁদের সঙ্গে শহীদের দীর্ঘদিনের বিরোধ ছিল। হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ধামাচাপ দিতেই এটিকে গণপিটুনি হিসেবে প্রচার করা হয়েছিল বলে এলাকার বাসিন্দারা ধারণা করছেন।

শনিবার বিকেলে নোয়াখালী সদর উপজেলার ১৯ নম্বর চর মটুয়া ইউনিয়নের সূর্যনারায়ণবহর গ্রামে শহীদকে পিটিয়ে খুন করা হয়। নিহত আবদুস শহীদ ওই গ্রামের মমিন উল্যাহর ছেলে। 

আবদুস শহীদের এলাকার একাধিক বাসিন্দা, রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাবেক এই যুবলীগের নেতা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন।
ভাইরাল ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, স্থানীয় একটি সন্ত্রাসী গ্রুপের প্রধান নুরুল ইসলাম ওরফে মিয়া মাঝির নেতৃত্বে শহীদকে একটি পাকা দালানের কক্ষে আটকে রেখে পেটানো হচ্ছে। মিয়া মাঝির উপস্থিতিতে একাধিক তরুণকে দেখা গেছে শহীদকে পেটাতে ও লাথি দিতে। ব্যাপক মারধরের পর হামলাকারীরা অস্ত্রসহ সন্ত্রাসী আটকের নাটক সাজান এবং গণপিটুনির বিষয়টি প্রচার করেন। 

রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হলে পুলিশও তখন আট মামলার পলাতক আসামির মৃত্যু হয়েছে বলে জানায়। নিহত শহীদ যে যুবলীগের নেতা ছিলেন, বিষয়টি তখন পুলিশ জানায়নি।

ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর আজ রোববার দুপুরে সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক বলেন, শহীদকে মারধরের একটি ভিডিও চিত্র তিনি দেখেছেন। এতে মিয়া মাঝি, তাঁর ছেলেসহ কয়েকজনকে শহীদকে মারধর করতে দেখা গেছে। তবে ওই ভিডিও গতকালের কি না, তা পরিষ্কার নয়। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে হবে। কারণ, তাঁদের মধ্যে আগেও ঝামেলা হয়েছিল।

হত্যার শিকার আবদুস শহীদের এলাকার বাসিন্দারা জানান, নুরুল ইসলাম ওরফে মিয়া মাঝির সঙ্গে নিহত আবদুস শহীদের বিরোধ পুরোনো। মিয়া মাঝি এলাকায় একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ নিয়ন্ত্রণ করেন। অপর দিকে আবদুস শহীদের একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ রয়েছে। শহীদ পূর্ব চর মটুয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল আমিনের অনুসারী ছিলেন এবং তাঁর প্রশ্রয়ে মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপরাধ করে বেড়াতেন। বিগত নির্বাচনে নুরুল আমিন পরাজিত হলে শহীদ দুর্বল হয়ে পড়েন। তবু তিনি মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপরাধ চালিয়ে যান।

সূত্র জানায়, রাজনৈতিক ও মাদক ব্যবসার বিরোধের জেরে বছরখানেক আগেও শহীদের ওপর হামলা চালিয়েছিলেন মিয়া মাঝির লোকজন। কিন্তু ঘটনাচক্রে ওই হামলার ঘটনায় গুরুতর আহত হলেও প্রাণে বেঁচে যান শহীদ। কিন্তু তাঁদের মধ্যকার বিরোধ থেকে যায় আগের মতোই। যার জের ধরে গতকাল বিকেলে মিয়া মাঝির নেতৃত্বে তাঁর ছেলে ও অন্য সাঙ্গপাঙ্গরা বাড়ির পাশ থেকে শহীদকে তুলে নিয়ে যান। এরপর একটি পাকা দালানের ভেতর একটি কক্ষে নিয়ে মারধর করা হয়। 

একই সময় মারধর করা হয় শহীদের অনুসারী আরও তিনজনকে। এরপর মিয়া মাঝির লোকেরাই থানায় ও যৌথ বাহিনীর কাছে ফোন করে অস্ত্রসহ সন্ত্রাসী আটকের নাটকের খবর দেন।
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত