অভ্যুত্থানে গত আগস্টে পতন হয়েছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকারের। পতনের সাড়ে তিন মাস পেরিয়ে গেলেও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেননি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ৷ তাদের বেশিরভাগ এখনো আত্মগোপনে। আরও দীর্ঘ সময় এভাবেই তাদের কাটাতে হবে বলে মনে করছেন তারা৷
শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আওয়ামী লীগের সব পর্যায়ের নেতাকর্মী দ্রুত যে যার মতো আত্মগোপনে চলে যান। এর মধ্যে শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের কেউ কেউ ওই দিনের আগে-পরে দেশ ছেড়ে বিদেশে পালান।
শুধু শীর্ষ নেতা নয়, আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্র থেকে জেলা, উপজেলা পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের মধ্যেও অনেকে দেশের বাইরে চলে গেছেন বলে দটির বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে। যারা দেশ ছাড়তে পারেননি, তারা গা ঢাকা দিয়েই আছেন।
দলের শীর্ষ পর্যায়ের কিছু নেতা, সাবেক মন্ত্রী, এমপি, জেলা, উপজেলা পর্যায়ের নেতা ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের অনেকে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন। অন্য নেতারাও রয়েছেন গ্রেপ্তার আতঙ্কে। কর্মী পর্যায়েও অনেকে গ্রেপ্তার হয়েছেন। বাইরে যারা আছেন, তাদের বেশিরভাগের নামেই মামলা রয়েছে। কারও কারও নামে একাধিক মামলা আছে। এসব নেতা-কর্মী বিভিন্নভাবে বিভিন্ন অজ্ঞাত স্থানে নিজেকে লুকিয়ে রেখেছেন। তবে দীর্ঘদিন এভাবে লুকিয়ে থাকা অনেকের জন্য দুরূহ হয়ে উঠছে।
বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে তাদের কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে সামনে তাদের জন্য পরিস্থিতি আরও কঠিন ও জটিল হয়ে পড়বে বলে তারা আশঙ্কা করছেন। সামনে আরও কত দিন এভাবে কাটাতে হবে এসব কথা ভেবে অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়ছে। আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা-কর্মীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলে এমনটাই জানা গেছে।
আত্মগোপনে থাকা নেতা-কর্মীদের অবস্থা দিন দিন শোচনীয় হয়ে উঠছে। এভাবে তাদের আরও অনেক মাস থাকতে হতে বলে তারা আশঙ্কা করছেন। এই পরিস্থিতিতে তাদের অনেকেই দল বা রাজনীতির কথা এখন ভাবতে পারছেন না। নিজের অবস্থা কী হবে সে চিন্তাই এখন তাদের কাছে বড় হয়ে উঠেছে।
আওয়ামী লীগের মধ্যম পর্যায়ের এক নেতার সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি বলেন, ভালো নেই, কেমন আর থাকতে পারি। আছি কোনো রকম, চুপচাপ নিরাপদ থাকার চেষ্টা করছি ৷ জানি না কতদিন এভাবে থাকতে হবে, কত দিন সেফ থাকতে পারব।