যশোর জেলা বিএনপির সম্মেলনকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হয়ে উঠেছে। দীর্ঘ সাত বছর পর চলতি মাসের ২২ ফেব্রুয়ারি হতে যাচ্ছে জেলা বিএনপির সম্মেলন।
সোমবার জেলা বিএনপির নির্বাহী কমিটির এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি উপজেলা সম্মেলন সম্পন্ন করেছে জেলা বিএনপি। জেলা বিএনপির সম্মেলন সফল করতে সকল প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে,মেয়াদ উত্তীর্ণের ১০ বছর পর ২০১৮ সালের ২০ মে ভেঙে দেওয়া হয়েছিল যশোর জেলা বিএনপির কমিটি। দলের নির্বাহী কমিটি ভেঙে ৫৩ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির আহ্বায়ক হন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য প্রয়াত তরিকুল ইসলামের সহধর্মিণী অধ্যাপক নার্গিস বেগম। আর সদস্য সচিব করা হয় সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবুকে। আহ্বায়ক কমিটিকে পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে বলা হয়। কিন্তু এরই মধ্যে পেরিয়ে গেছে সাত বছর। এসময়ে জেলা সম্মেলনের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচন করতে পারেনি জেলা বিএনপি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়,দীর্ঘদিন সম্মেলন ও কমিটি গঠন না হওয়ায় পদপ্রত্যাশী নেতারা হতাশ হয়ে পড়েন। বিগত ফ্যাস্টিট সরকারের আমলে হামলা-মামলার ভয়ে দলীয় কর্মকান্ডে অনুপস্থিত থাকেন অনেকে। কিন্তু ৫ আগস্টের পর নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হয়ে ওঠে। অংশ নিতে থাকেন দলীয় বিভিন্ন প্রোগ্রামে।
নেতাকর্মীরা জানায়, দীর্ঘদিন যশোর শহর কেন্দ্রিক রাজনীতিতে বিএনপির নেতাকর্মীদের উপস্থিতি দেখা গেলেও উপজেলার রাজনীতিতে ভাটা পড়ে। ফলে তৃর্ণমূলে অসন্তোষ দেখা দেয়। ৫ আগস্টের পর দলীয় কোন্দল অনেক জায়গায় প্রকাশ্যে চলে এসেছে।
দলীয় নেতাকর্মীরা জানায়, ফ্যাস্টিট আওয়ামী আমলে দলের নেতাদের সাথে অনেকে হামলা-মামলার ভয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। রাস্তাঘাটে দেখা হলে শুধু সালাম বিনিময় করতেন। পরিবার, ব্যবসা, চাকরি রক্ষার স্বার্থে নেতাদের সাথে ঠিকঠাক মত যোগাযোগ করতেন না অনেকে।
জেলার শীর্ষনেতারা বলছেন, বিভিন্ন সময়ে ভোটের মাধ্যমে কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু ফ্যাস্টিট আওয়ামী লীগ সরকার এদ দলীয় শাসন ব্যবস্থা চালু করার কারণে আন্দোলন ও কমিটি গঠন ঝিমিয়ে পড়ে। তারপরও উপজেলা পর্যায়ে আহ্বায়ক কমিটির নেতৃত্বে ফ্যাস্টি হাসিনা পতনের আন্দোলন কর্মসূচিতে ঐক্যবদ্ধ ছিলো নেতাকর্মীরা।
বিএনপির কয়েকজন নেতা জানিয়েছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সকর পর্যায়ে অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনসহ নতুন কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এক্ষেত্রে উপজেলার আহ্বায়ক কমিটি ভেঙ্গে নতুন কমিটি করা হচ্ছে। এসব কমিটি গঠন করা হচ্ছে ভোটের মাধ্যমে।
নেতারা বলছেন, আগামী নির্বাচন নিয়ে দল এখনো আন্দোলনমুখী। প্রায় প্রতি সপ্তাহে কোনো না কোনো কর্মসূচি থাকছে। এছাড়া স্থানীয়ভাবে কর্মসূচির আয়োজন করা হচ্ছে। এছাড়া সামনে জাতীয় নির্বাচন। এ সময় নতুন কমিটি গঠন করে নেতাকর্মীদের চাঙ্গা করা হচ্ছে। এতে আন্দোলন ও নির্বাচনী তৎপরতায় ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে।