খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষক সমিতি এবার সকল প্রকার একাডেমিক কার্যক্রমে বিরত থাকার পাশাপাশি প্রশাসনিক কাজে সহযোগিতা থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আজ শনিবার পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মোঃ ফারুক হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন। এছাড়া চলমান পরিস্থিতি নিয়ে আগামীকাল রোববার বেলা ১০ টায় প্রশাসনিক ভবনে ৬ষ্ঠ জরুরী সভা আহবান করা হয়েছে।
এদিকে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু, নতুন নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন এবং পাঁচ দফা বাস্তবায়নের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষার্থীরা আবারও আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছেন।
আন্দোলনের অংশ হিসেবে গত বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েলফেয়ার সেন্টারের বারান্দায় স্থাপিত সংগ্রামের মঞ্চে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন তারা। রোববার শিক্ষার্থীরা নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০ ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. রাহাতুল ইসলাম বলেন, দ্রুত একাডেমিক কার্যক্রম শুরু, আগে গঠিত তদন্ত কমিটি বাতিল করে নতুন নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন এবং তাদের পাঁচ দফা বাস্তবায়নের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাবে।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি বহিরাগত সন্ত্রাসীদের হামলায় কুয়েটের দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়। টানা প্রায় তিন মাস ধরে বন্ধ রয়েছে সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম। শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগসহ পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। পরে তারা ওই দাবি থেকে সরে এসে কেবল উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আন্দোলন চালায়।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে সরকার উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাসুদকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়। সর্বশেষ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৪ মে থেকে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা ছিল। তবে শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনায় অভিযুক্তদের শাস্তি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত একাডেমিক কার্যক্রমে ফেরার ঘোষণা দেননি শিক্ষক সমিতির নেতারা। তদন্ত কমিটি ৩৭ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে। পরবর্তী সিন্ডিকেট সভায় সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হয়।
কিন্তু গত সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আবারও ওই ৩৭ শিক্ষার্থীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেয়। এর পর শিক্ষার্থীরা আবার ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করে। এ ছাড়া পুরোনো তদন্ত কমিটি বাতিল করে নতুন কমিটি গঠনের দাবিতে ১৩ মে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। অন্যদিকে শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনায় জড়িতদের বিচারসহ বিভিন্ন দাবিতে ৫ মে প্রেস ব্রিফিং করে সাত কার্যদিবসের আল্টিমেটাম দিয়েছিল শিক্ষক সমিতি।
শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. সাহিদুল ইসলাম বলেন, আমাদের দাবির বিষয়ে সর্বশেষ অবস্থা জানতে শিক্ষক সমিতির এক্সিকিউটিভব বডি ভিসি স্যারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছে। তিনি আমাদের দাবির প্রতি ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করেছেন। শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে দিয়ে দ্রুত ক্লাসে ফেরার পথ সুগম করতে কুয়েট প্রশাসনকে আমরা সাত কার্যদিবস সময় দিয়েছিলাম। এখন সকল প্রকার একাডেমিক কার্যক্রমে বিরত থাকার পাশাপাশি প্রশাসনিক কাজে সহযোগিতা থেকে বিরত থাকার কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
এদিকে দীর্ঘদিন ধরে চলা অচলাবস্থার কারণে চরম সংকটে পড়েছে কুয়েট কর্তৃপক্ষ। শিক্ষকদের ক্লাসে ফেরাতে হলে দায়ী শিক্ষার্থীদের শাস্তি দিতে হবে, আবার শাস্তি দিলেই নতুন করে আন্দোলন শুরু হচ্ছে। ফলে তিন মাসেও অচলাবস্থা কাটিয়ে উঠতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।
দীর্ঘদিন ধরে চলা অচলাবস্থার কারণে চরম সংকটে পড়েছে কুয়েট কর্তৃপক্ষ। শিক্ষকদের ক্লাসে ফেরাতে হলে দায়ী শিক্ষার্থীদের শাস্তি দিতে হবে, আবার শাস্তি দিলেই নতুন করে আন্দোলন শুরু হচ্ছে। ফলে তিন মাসেও অচলাবস্থা কাটিয়ে উঠতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।