দেশে চা উৎপাদনে শীর্ষে অবস্থান করছে বৃহত্তর সিলেটের মৌলভীবাজার জেলা। চা উৎপাদনে মৌলভীবাজার জেলার গুরুত্ব অপরিসীম। দেশে সবচেয়ে বেশি চা উৎপাদন করে মৌলভীবাজার জেলা জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপুর্ণ অবদান রেখে চলেছে।
বাংলাদেশ চা বোর্ড সুত্র জানায়, ২০২৪ সালে দেশে ৯৩.০৪ মিলিয়ন কেজি অর্থাৎ ৯ কোটি ৩০ লাখ ৪০ হাজার কেজি চা উৎপাদিত হয়েছে। এরমধ্যে সর্বোচ্চ ৪ কোটি ৬৩ লাখ ৩৩ হাজার ৩৭২ কেজি চা উৎপাদন করে দেশে শীর্ষস্থানে রয়েছে মৌলভীবাজার জেলা।
দেশে চা উৎপাদনে ২০২৪ সালে ২য় স্থানে অবস্থান করছে হবিগঞ্জ জেলা। হবিগঞ্জে চা উৎপাদন হয়েছে ১ কোটি ৬৪ লাখ ৪৮ হাজার ৩০০ কেজি। এছাড়া ১ কোটি ৪৩ লাখ ৮৮ হাজার ৩২ কেজি চা উৎপাদন করে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে পঞ্চগড়। ৪র্থ স্থানে রয়েছে চট্টগ্রাম জেলা। চট্টগ্রামে চা উৎপাদন হয়েছে ১ কোটি ১২ লাখ ৮০ হাজার ৫৭২ কেজি। ৪৫ লাখ ৩৩ হাজার ৩২৬ কেজি চা উৎপাদন করে ৫ম স্থানে রয়েছে সিলেট। এছাড়াও রাঙ্গামাটিতে ৫৩ হাজার ৯৪ কেজি এবং বান্দরবানে উৎপাদন হয়েছে ৫ হাজার ৩ শত ৮ কেজি।
চা বোর্ডের তথ্যমতে এ পরিসংখ্যান অনুযায়ী মৌলভীবাজার জেলা চা উৎপাদনে দেশে শীর্ষে অবস্থান করছে এবং দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রেখে চলেছে।
বাংলাদেশ চা বোর্ডের শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত প্রকল্প উন্নয়ন ইউনিট (পিডিইউ) সুত্র জানায়, বর্তমানে দেশে ১৭০টি চা-বাগান রয়েছে। তন্মধ্যে মৌলভীবাজার জেলায় সর্বাধিক ৯০টি, হবিগঞ্জে ২৫টি, চট্টগ্রামে ২২টি, সিলেটে ১৯টি, পঞ্চগড়ে ১০টি, রাঙামাটিতে ২টি এবং ঠাঁকুরগাওয়ে ১টি চা-বাগান রয়েছে। দেশে বর্তমানে চা বাগানের নার্সারিসহ মোট চা চাষাধীন জমির পরিমান ১ লাখ ৫৮ হাজার ৭৪১ একর। চা-বাগানে ভবিষ্যতে রোপনযোগ্য জমির পরিমান ১৬ হাজার ১২৯ একর।
বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলের শ্রীমঙ্গলে বছরব্যাপী পর্যাপ্ত বৃষ্টি হওয়ায় এখানে চা উৎপাদনও বেশি। শ্রীমঙ্গলে রয়েছে ছোট-বড়, ফাঁড়ি বাগান মিলে ৪৪টি চা-বাগান। প্রতি বছরই এসব চা-বাগানের পরিধি বাড়ছে। তাছাড়া শ্রীমঙ্গলে দেশের দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক চা নিলাম কেন্দ্র চালু হওয়ায় এখানে চা উৎপাদনে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে বলে মনে করছেন চা বাগান মালিক ও চা বোর্ড।
চা বোর্ডের তথ্যমতে, চলতি বছর চায়ের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে ১০ কোটি ৩০ লাখ কেজি। বৃষ্টিপাত, তাপমাত্রাসহ আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে চা উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে বলে মনে করছে চা বোর্ড ও চা শিল্প সংশ্লিষ্টরা।