কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে মাদকসেবনে বাধা দেওয়ায় আনোয়ার হোসেন প্রকাশ এমান (৩৮) নামে এক নির্মাণ শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যা করেছে মাদকাসক্ত পিতা-পুত্র। পরে প্রভাবশালী মহলের গোপন দফারফার মাধ্যমে দাফনের প্রস্তুতি চলছিল।
খবর পেয়ে পুলিশ উপস্থিত হয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার (১২ নভেম্বর) চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার নোয়াপাড়া গ্রামে। নিহত এমান একই গ্রামের ওসমান মিয়ার ছেলে।
থানা সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় মাদকাসক্ত ফারুক মিয়া তার বাড়িতে নিয়মিত মাদক সেবন করত। মঙ্গলবার সকালে ফারুক প্রকাশ্যে মাদক সেবন করলে নির্মাণ শ্রমিক এমান বাধা দেয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ফারুক এমানকে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে। এ সময় তার বাবা মফিজুর রহমানও পুত্রের সঙ্গে যোগ দেয়। পরে এমানের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে গেলে পিতা-পুত্র পালিয়ে যায়।
গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা এমানকে উদ্ধার করে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে অবস্থার অবনতি হলে তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বৃহস্পতিবার সকালে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
স্থানীয় সূত্রে আরও জানা যায়, এমানের মৃত্যুর পর এলাকায় প্রভাবশালী মহল তার পরিবারকে মামলা না করতে চাপ দিতে থাকে এবং আপোষ মীমাংসার নামে বৈঠকের আয়োজন করে। ওই সময় খবর পেয়ে চৌদ্দগ্রাম থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য থানায় নিয়ে আসে।
নিহতের ভাগিনা মো. রিয়াদ বলেন, ‘আমার মামা একজন পরিশ্রমী নির্মাণ শ্রমিক ছিলেন। ফারুক ও তার বাবা মফিজুর রহমান তাকে নির্মমভাবে পিটিয়েছে। মাদক সেবনে বাধা দেওয়ার কারণেই তার এই হত্যাকাণ্ড।’
চৌদ্দগ্রাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, “মাদক সেবনে বাধা দেওয়ায় এক নির্মাণ শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যার খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয়ভাবে মীমাংসার চেষ্টা চলছিল বলে আমরা জানতে পেরেছি। এ ঘটনায় হত্যা মামলা রুজু করা হবে এবং অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।”