সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেছেন, নতুন বাংলাদেশে নারী ও শিশু নির্যাতন বন্ধে তরুণদের এগিয়ে এসে প্রতিরোধ গড়ে তোলা জরুরি। তিনি বলেন, ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে যে বয়সের তরুণ-তরুণীদের দেখেছিলাম, ২০২৪ সালের জুলাইয়ের যুদ্ধেও সেই একই প্রজন্মকে রাস্তায় দেখেছি। তাদের স্পৃহা, এনার্জি ও শক্তিই নতুন দেশ গড়ার মূল চালিকাশক্তি।
গতকাল বাংলাদেশ শিশু একাডেমির অডিটোরিয়ামে ইয়ুথ ফোরাম অব বাংলাদেশের উদ্যোগে ‘তারুণ্যের চোখে আগামীর বাংলাদেশ’ শীর্ষক আন্তঃকলেজ বিতর্ক উৎসব ২০২৫-এর ফাইনাল ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর দক্ষিণের কেন্দ্রীয় মজলিসে সূরা সদস্য ও সহকারী সেক্রেটারি মোঃ কামাল হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী মীর আহমদ বিন কাসেম (ব্যারিস্টার আরমান), নিরাপদ অ্যালায়েন্সের ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার তাহমিদুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ফাতিন সাদাব লিয়ান, ইয়ুথ ফোরাম অব বাংলাদেশের সভাপতি ইউসুফ মাহমুদ তৌসিফ, সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইয়াছিন মির্জা ও বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেন, ন্যায্যতা, সাম্য ও সুশাসনের স্বপ্ন নিয়ে গণতন্ত্রের পথচলা শুরু হলেও দীর্ঘ ১৬ বছর দেশ ভ্রান্তপথে এগিয়েছিল, স্বৈরতন্ত্রের উত্থান ও অত্যাচারের পাহাড় তৈরি হয়েছিল। এরই প্রেক্ষাপটে নতুন করে জেগে ওঠে তরুণ প্রজন্ম, যা ২৪ সালের জুলাই যুদ্ধের সময় স্পষ্টভাবে দেখা যায়।
তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশ গড়ার সুযোগ দ্বিতীয়বার এসেছে যা ছিল কল্পনার অতীত। ২০২৪ সালের জুলাইয়ে তোমরা যে ঐক্য গড়েছিলে, মতাদর্শের ভিন্নতায় সেটি ভাঙতে দেওয়া যাবে না।
নারী-পুরুষের সমান ভূমিকার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২৪ সালের জুলাইয়ের আন্দোলনে ৭০ শতাংশ অংশগ্রহণকারী ছিল নারী। তাঁদের আত্মত্যাগ ও সংগ্রাম নতুন দেশের ভিত্তি আরও শক্ত করেছে।
শারমীন এস মুরশিদ জানান, তারুণ্যের স্বপ্ন, প্রত্যাশা ও ভবিষ্যৎ দৃষ্টিভঙ্গি জানতে দেশের বিভিন্ন স্থানে মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে তরুণদের সঙ্গে আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে শিশু ও কিশোরীদের অংশগ্রহণে।
নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে তরুণদের ভূমিকার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, যেখানেই নারী ও শিশু নির্যাতন হবে, সেখানেই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
তিনি একটি নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ার শপথ বাক্য পাঠ করান এবং তরুণদের ঐক্য, ভালোবাসা ও মানবিক মূল্যবোধে দেশ গঠনের আহ্বান জানান।