বিএনপি-জামায়াতের অগ্নিসন্ত্রাসের বিচারের দাবি জানিয়েছেন পেশাজীবী, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, শিল্পী, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি আমলা, চিকিৎসক, গার্মেন্টসের অধিকার আদায়কর্মী ও প্রকৌশলীরা। আসন্ন ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে গণতান্ত্রিক সরকার নির্বাচনের মাধ্যমে মানবতাবিরোধী অপরাধের দাঁতভাঙা জবাব দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
আজ বুধবার সকাল ১১টায় রাজধানী শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে ‘বিএনপি জামাতের অগ্নিসন্ত্রাসের বিরুদ্ধে, মানবতার পক্ষে’ শীর্ষক মানববন্ধনের আয়োজন করে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট। মানববন্ধনে তারা এ দাবি জানান। কর্মসূচিতে ‘বিএনপি-জামায়াতের অগ্নিসন্ত্রাসে’ ভুক্তভোগীদের তালিকা পাঠ করা হয়।
বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি তারানা হালিমের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে অংশ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ‘১৯৭১ সালে যেভাবে মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, তারই ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হলো। এরপর ২০০৪ সালে ২১ আগস্ট গ্রেনেডের নির্মম আঘাতে অনেকে মারা গেছেন, যারা বেঁচে আছেন তাদের সঙ্গে দেখা হলে বলেন যে, প্রতিদিন তারা মৃত্যু যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে। এরপর ২০১৩, ২০১৪, ২০১৫ সালে এবং সাম্প্রতিক সময়ে অগ্নিসন্ত্রাস ও মানবতাবিরোধী অপরাধ চলছেই। আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে আমরা ম্যান্ডেট দেব, মানবতার বিরুদ্ধে যারা অপরাধ করে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে।’
বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি নুরুল হুদা বলেন, ‘দেশে গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা চলছে, অন্যদিকে শুরু থেকে স্বাধীনতাবিরোধী বিএনপি-জামায়াত চক্র সন্ত্রাসের রাজত্ব করছে। তার শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। আমরা যারা সৃষ্টিশীলতার কথা বলি, আমরা বলি মানুষের মধ্যে ভালোবাসা থাকবে। আমরা এই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ঘৃণা প্রকাশ করি।’
২৮ অক্টোবর নিহত পুলিশের সদস্য আমিরুল ইসলামের স্ত্রী রুমা আক্তার বলেন, ‘আমিরুলকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে, আমরা তার মুখটাও দেখতে পারিনি। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানাই- আমিরুলকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে, হত্যাকারীদের যেন তার চেয়েও কঠিন শাস্তি দেওয়া হয়।’
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের চিকিৎসক ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘বিবেকের তাগিদে এখানে এসেছি। আমি সারাজীবন পোড়া রোগী চিকিৎসা করেছি। রাজনৈতিক সহিংসতার জন্য যে পোড়া রোগী আমাদের কাছে আসে, এটা যে কী যন্ত্রণা। দয়া করে এভাবে মানুষকে নৃশংসভাবে পুড়িয়ে মারবেন না।’
পিএসসির সাবেক চেয়ারম্যান একরাম আহমেদ বলেন, ‘অগ্নিদগ্ধদের কথা শুনতে দাঁড়িয়েছি। হত্যা, খুন নৈরাজ্য কোনো ধর্মেই গ্রহণযোগ্য নয়। যারা নৈরাজ্য করে তারা হত্যা থেকেও জঘন্য কাজ করে। প্রত্যেক ধর্মেই এটি বলা হয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে সন্ত্রাস দেখেই যাচ্ছি। আমরা এর বিরুদ্ধে নিন্দা জানাই।’
স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) মহাসচিব কামরুল হাসান মিলন বলেন, ‘আগুন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে। আগুন সন্ত্রাসের দাঁতভাঙা জবাব দিতে হবে। এটা আমরা ৭ জানুয়ারি ভোটের মাধ্যমে জবাব দেব।’
এ ছাড়াও অভিনয়শিল্পী সিদ্দিকুর রহমান ও সাজু খাদেম, অ্যাডভোকেট খোদেজা নাসরীন, নিহত নাহিদের মা রুনি বেগম, চট্টগ্রামে অগ্নিদগ্ধ সিকদার মোহাম্মদ প্রমুখ বক্তব্য দেন।