ছোড ছোড পোলাপানরা এইহান দিয়া যাইতেই পারে না। জীবনের ঝুঁকি নিতে হয়। সরকার এইহানের ব্রিজে মাটি দিলেই যানবাহন আসা-যাওয়া করতে পারবো। আমগোর আর কষ্ট করতে হইবো না। কথাগুলো বলছিলেন, শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার মাদারপুর গ্রামের বাসিন্দা মকবুল হোসেন (৫৪)।
সরেজমিনে গেলে স্থানীয়রা জানান, ব্রিজটি নির্মাণ হয়েছে প্রায় দুই যুগ আগে ২০০৫-০৬ অর্থ বছরে। আর ব্রিজটি নির্মাণে ব্যয় হয় ৮০ লাখ টাকা। গত ৬ বছর আগে বন্যার কারণে ভাঙনের কবলে পড়ে ব্রিজের দুই পাশের সংযোগ সড়ক। সেই থেকে ব্রিজে যাতায়াতের একমাত্র ভরসা বাঁশের খুঁটির উপর ৩টি বাঁশ। এতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন দু’পাড়ের কয়েক হাজার মানুষ। এছাড়াও নদীর ওপারে প্রায় দু’ হাজার একর জমির চাষাবাদে কৃষকের কষ্টের সাথে বেড়েছে খরচও। ব্রিজের বিভিন্ন অংশ এখনো ভাল। শুধু সংযোগ সড়ক হলেই দুর্ভোগের অবসান ঘটবে ।
ওই এলাকার গড়পাড়া গ্রামের বাসিন্দা কৃষক মুনছর আলী (৫৬) বলেন ব্রিজ আছে, ব্রিজের দু’পাশে মাটি না থাকায় আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করি। এ পথে কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারেনা। মালামাল আনা নেয়া করতে পারি না। আমরা মেলা কষ্টে পারাপার হই।
থান কাপড়ের ব্যবসায়ী সাইফুল্লা অভিযোগ করে বলেন, কর্তৃপক্ষের চরম অবহেলা ও আশ্বাসের বাণীতে ঝুলছে ব্রিজের সংযোগ সড়কের ভাগ্য।
স্থানীয় কৃষক মোশাররফ হোসেন বলেন, দুই পাড়ের মানুষের যাতায়াত ও বৃহত্তর বয়শা বিল থেকে আবাদ ঘরে তোলার জন্য নির্মাণ করা হয় ব্রিজটি। ব্রিজের পূর্ব এলাকার মানুষের সহাস্রাধিক একর জমি বিলের ওপারে। গ্রামবাসীদের অর্থায়নে বাঁশের চাং তৈরি করে চলাচল করা হচ্ছে। শুষ্ক মৌমুসেও নদীতে পানি থাকে। তাই চলাচলে সবার খুব কষ্ট হয়।
স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের শিক্ষক আব্দুস সাকুর বলেন, দুই পাশের প্রায় চার হাজার মানুষের যাতায়াতের একমাত্র পথ এটি। এছাড়া বিকল্প পথ না থাকায় এই এলাকার শতাধিক শিক্ষার্থী অন্যত্র গিয়ে পড়াশুনা করছে।
স্কুল শিক্ষার্থী সোলায়মান বলেন, স্কুলে যাওয়া আসার সময় বাবা সাইকেল ঘাড়ে নিয়ে ব্রিজ পার করে দেয়। আমার আসা যাওয়ায় অনেক কষ্ট হয়।
কাজিরচর ইউপি চেয়ারম্যান দুলাল মিয়া বলেন, এর প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বলেছি। তিনি আশ্বাসও দিয়েছেন। কিন্তু কাজ তো এখনো শুরু হচ্ছে না।
শ্রীবরদীর এলজিইডি’র কর্মকর্তা ইঞ্জিনিয়ার মশিউর রহমান বলেন, ব্রিজটির দু’পাশে নদী শাসনের প্রয়োজন। নদীর গতিপথ বদলে যাওয়ায় এমন হয়েছে। সরেজমিনে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।