পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে নবজাতক চুরি করে পাচারের চেষ্টাকালে নবজাতকের বাবাসহ ২জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে উদ্ধারকৃত নবজাতককে মায়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন সদর থানা ওসি মোঃ জসিম।
ওসি জানান, পরপর চারটি কন্যা সন্তান হওয়ায় নবজাতকের বাবা মোঃ হানিফ মৃধা অখুশি হয়ে জনৈক লাইজু বেগমের যোগসাজোসে বিক্রির উদ্দেশ্যে নিজের নবজাতক চুরি করে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৫টার দিকে পটুয়াখালী সেতুর উপর থেকে শিশু পাচারকারী মোসাম্মদ লাইজু বেগম (৩৮) কে গ্রেফতার করা হয়। পরে লাইজুর স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে থেকে শিশুটির বাবা মোঃ হানিফ মৃধাকেও গ্রেফতার করে পুলিশ।
এ বিষয়ে পটুয়াখালী থানার একটি সাধারন ডায়েরী করা হয়েছে। ডায়েরী নং-৬৮৫। গ্রেফতারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
সাধারন ডায়েরীতে উল্লেখ করা হয়, গত বুধবার রাতে শহরের চৌরাস্তা এলাকায় কর্তব্য পালনকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারেন একটি মানব পাচার চক্র গত ৫ মার্চ পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৪র্থ তলায় নবজাতক শিশু ওয়ার্ড থেকে একটি শিশু চুরি করেছে। সেই সংবাদের সত্যতা যাচাই বাচাই করতে গিয়ে জানতে পারেন মোঃ হানিফ মৃধার স্ত্রী মোসাম্মদ শাহনাজ বেগম গত ৩ মার্চ শহরের পিটিআই রোডস্থ দি-এ্যাপোলো হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে একটি কন্যা সন্তান প্রসব করেন। শিশুটি অসুস্থ্য হওয়ায় তাকে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নবজাতক পরিচর্যা কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। শিশুটির বাবা হানিফ মৃধা এবং দি এ্যাপোলা হাসপাতালের আয়া লাইজু বেগম মিলে গত ৫ মার্চ পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের স্ক্যানু থেকে শিশুটি চুরি করেন।
পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হানিফ মৃধা ও লাইজু বেগম জানায়, এর আগেও হানিফ মৃধার তিনটি কন্যা সন্তান রয়েছে। আবারও কন্যা সন্তান প্রসব করায় হানিফ মৃধা অসন্তষ্ট হন। এ্যাপোলো হাসপাতালের আয়া লাইজু বেগমসহ অজ্ঞাত নামা আসামীদের প্ররোচনায় ও সহায়তায় নবজাতক সন্তানের মা মোসাম্মদ শাহনাজ বেগমের অগোচরে অধিক লাভের আশায় পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের স্ক্যানু থেকে শিশুটি চুরি করে লাইজুর হেফাজতে রাখেন। বৃহস্পতিবার শিশুটিকে পাচারের চেষ্টাকালে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ জসিম আরো জানান, শিশুটিকে তার মায়ের হেফাজতে দেয়া হয়েছে। আসামিদেরকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। মামলা তদন্তাধীন।