পিরোজপুর সদর উপজেলার ৫ নম্বর জুজখোলা বড়বাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টিনে মরিচা ধরে চালায় অসংখ্য ছিদ্র হয়েছে।
টিনশেড ভবনের দেয়ালের পলেস্তারা খসে পড়ছে, বিভিন্নস্থানে ধরেছে ফাটল। এসব শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের সময় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের পড়তে হয় বিপাকে। জরাজীর্ণ হওয়ায় কমেছে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যাও। ৩৮ বছর আগে তৈরি করা হয় ৫ কক্ষের একটি টিনশেড ভবনের বিদ্যালয়টি এখস মরনফাঁদ।
জানা যায়, ১৯৮৫ সালে পিরোজপুর সদর উপজেলার জুজখোলা গ্রামে একটি টিনশেড ভবন নির্মাণ করে ৫ নম্বর জুজখোলা বড়বাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। টিনশেড ভবন হওয়ায় প্রতি বছর টিনের চালার মেরামত করার প্রয়োজন হলেও প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিদ্যালয়টিতে তেমন বড় কোনো মেরামত করা হয়নি।
২০২০-২১ সালে ক্ষুদ্র মেরামতের জন্য ২ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়। সেই টাকা দিয়ে বিদ্যালয়ের সামনে ২ কক্ষ বিশিষ্ট একটি কাঁচা মাটির কাঠের ঘর নির্মাণ করা হয়।
পুরানো জরাজীর্ণ ভবনের ৪টি কক্ষ ও কাঠের ঘরে ২টি কক্ষে পাঠদান করা হয় তবে আতঙ্কে দিন দিন শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমছে।
বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ছাত্র আবির হাসান বলে, বিদ্যালয়ের ভবনটি পুরানো হয়ে গেছে। জানালা ভেঙে পড়ছে। টিনের চালে জং ধরে ছিদ্র হয়ে গেছে। বৃষ্টিতে পানি পড়ে ক্লাস করা যায় না।
বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক নাজমুল হাসান হাওলাদার বলেন, ভবনটি জরাজীর্ণ হওয়ায় পাঠদান করতে বিভিন্ন সমস্যা হচ্ছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাসিনা খানম বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ের ভবনটি ১৯৮৫ সালে নির্মাণ করা হয়। ২০১৯ সালে এই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করি তার আগে থেকেই বিদ্যালয়ের ভবনটি জরাজীর্ণ হয়ে আছে। ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষার্থীদের এ ভবনে পাঠদান করতে হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ের ৬টি শ্রেণিকক্ষ প্রয়োজন, রয়েছে ৪টি। বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে টিন ও কাঠ দিয়ে ২টি কক্ষ তৈরি করে সেখানে পাঠদান করতে হচ্ছে। বৃষ্টি হলে পাকা ভবনের টিনের ছিদ্র দিয়ে পানি পড়ে। কাঁচাঘরে বর্ষাকালে স্যাঁতসেতে হয়ে যায়। ২০১৯ সালে বিদ্যালয়ে ১৭৫ জন শিক্ষার্থী ছিল এখন তা কমে ১৩৫ এর নিচে নেমে গেছে। তাছাড়া জরাজীর্ণ ভবন হওয়ায় প্রতিবছরই শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমছে।
পিরোজপুর সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, জুজখোলা বড়বাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনটি পাঠদানের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। ওই বিদ্যালয়টির নতুন ভবন নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।
পিরোজপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কুমারেশ চন্দ্র গাছি বলেন, জুজখোলা বড়বাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টিসহ জেলার ১৮৪টি ঝুঁকিপূর্ণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনের তালিকা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বরাদ্দ পেলে বিদ্যালয়গুলোর জন্য নতুন ভবন নির্মাণ করা হবে।