চলতি বৈশাখে বৃষ্টি না থাকায় সারাদেশের ন্যায় গত কয়েকদিন যাবৎ প্রচণ্ড তাপদাহে মানিকগঞ্জের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। আর এরমধ্যে ঘন-ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন। প্রায় প্রতিদিনই দিনে-মধ্যরাতেও তিন থেকে চারবার হচ্ছে লোডশেডিং। ফলে নির্ঘুমভাবে রাত কাটাচ্ছে মানুষ।
জানা গেছে, অন্যান্য বছরের চেয়ে চলতি বছর গরমের তীব্রতা যেন ক্রমশই বৃদ্ধি পাচ্ছে। গরম ও অসহনীয় তাপে শরীর যেন পুড়ে যাবার মতো অবস্থা প্রায়। এতে, অসুস্থ হয়ে পড়ছেন মানুষ। বিশেষ করে, শিশু, নারী ও বৃদ্ধরা তীব্র গরমে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। খেটে খাওয়া মানুষগুলো তীব্র রোদের কারনে ঠিকমত বাইরে কাজ করতে পারছেন না।
জেলা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, টানা কয়েকদিন ধরে জেলায় সর্বোচ্চ ৩৬ ডিগ্রি তাপমাত্রা থাকছে। শুক্রবার দুপুর একটায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭ ডিগ্রি। এছাড়া, বাতাসে জলীয় বাষ্প কমে যাওয়ায় তাপদাহ তুলনামূলকভাবে বেশি অনুভূত হচ্ছে।
২৭ এপ্রিল শুক্রবার জেলার বিভিন্ন স্থানে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, তীব্র গরমের কারনে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া তেমন লোকজন নেই। যারা বাইরে বের হয়েছেন তাদের মধ্যে অনেকেই অসহ্য গরমের কারনে লেবুর শরবত কিনে খাচ্ছেন। যারা মাঠে কাজ করেন তারা গরমের মধ্যেও পেটের দায়ে কাজ করছেন বলে জানিয়েছেন। জেলার আরিচা ও পাটুরিয়া ঘাট এলাকায় তেমন লোক দেখা যায়নি । ঘাট এলাকায় রাজধানিগামী কিছু যাত্রী দেখা গেছে । এ সময় কয়েকজন শরবত বিক্রেতার সাথে কথা হলে তারা জানান, এই গরমে কয়েকদিন যাবৎ লেবুর শরবত এর চাহিদা বেড়েছে।
শিবালয় উপজলার বোয়ালি গ্রামের মোকছেদ আলী জানান, একদিকে অসহ্য গরম, আবার অন্যদিকে রাতেও লোডশেডিং থাকায় কয়েকদিন যাবৎ ঘুমানো অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে ।
স্থানীয় কয়েকজনের সাথে কথা হলে তারা জানান, দিনের বেলা লোডশেডিং মেনে নেয়া যায়। তবে, সারাদিন কাজ করার পরে যদি রাতে ঘুমাতে না পারেন, তাহলে এইভাবে তো তারা অসুস্থ হয়ে যাবেন। তাই তারা রাতে লোডশেডিং না দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেন।
মানিকগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ অফিস সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে চাহিদার চেয়ে বিদ্যুতের সাপ্লাই কম । হঠাৎ করে বিদ্যুতের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় লোডশেডিং হচ্ছে । গত ২৪ এপ্রিল রাত ৯ টায় জেলায় ১৮২ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা থাকলেও সাপ্লাই ছিল ১৩৭ মেগাওয়াট । বিদ্যুতের ঘাটতি ৪৫ মেগাওয়াট । এছাড়া, গত ২০ এপ্রিল থেকে এ জেলায় প্রতিদিনই চাহিদার তুলনায় ২৪ মেগাওয়াট বিদ্যুতের ঘাটতি ছিল ।
তীব্র তাপদাহ ও গরমের বিষয়ে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ কাজী একেএম রাসেল বলেন, তীব্র গরমে সাধারনত কাশি ও ডায়রিয়াসহ নানা ধরনের রোগের সৃষ্টি হয় । এ সময়ে তরল জাতীয় খাবার গ্রহণের পরামর্শ দেন তিনি ।