শনিবার ৫ জুলাই ২০২৫ ২১ আষাঢ় ১৪৩২
শনিবার ৫ জুলাই ২০২৫
জন্মদিনে কিংবদন্তিকে স্মরণ
‘মহারাজা... তোমারে সেলাম’
মশিউর অর্ণব
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪, ৭:১০ PM আপডেট: ০২.০৫.২০২৪ ৭:২৬ PM
ফেলুদার মত ক্ষুরধার বুদ্ধি, তোপসের মত শেখার ইচ্ছে, লালমোহন বাবুর মত বন্ধু, উদয়ন পণ্ডিতের মত মেরুদণ্ড, গুপি-বাঘার মত সারল্য, তারিণীখুঁড়োর মত রসদীপ্ততা- সব মিলিয়ে সত্যজিৎ রায় যেনো এক বহুমুখী প্রতিভা। তিনি চলচ্চিত্রের মহারাজা, তিনি কিংবিদন্তি, আজ এই মহারাজার ১০৩তম জন্মবার্ষিকী। 

" align=




















চলচ্চিত্র মাধ্যমে সত্যজিৎ চিত্রনাট্য রচনা, চরিত্রায়ন, সংগীত স্বরলিপি রচনা, চিত্র গ্রহণ, শিল্প নির্দেশনা, সম্পাদনা, শিল্পী-কুশলীদের নামের তালিকা ও প্রচারণাপত্র নকশা করাসহ নানা কাজ করেছেন। চলচ্চিত্র নির্মাণের বাইরে তিনি ছিলেন একাধারে গীতিকার, সংগীত পরিচালক কল্পকাহিনী লেখক, প্রকাশক, চিত্রকর, গ্রাফিক নকশাবিদ ও চলচ্চিত্র সমালোচক।

" align=










১৯২১ সালে কলকাতার গড়পারে জন্মেছিলেন সত্যজিৎ রায়। পূর্বপুরুষের ভিটা ছিল বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জে। তার বাবা বাংলা সাহিত্যের অমর দিকপাল সুকুমার রায়। দাদাও সাহিত্যের আরেক পথিকৃৎ উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী।

" align=
























সত্যজিৎ রায়কে নিয়ে ‘রশোমন’ আকিরা কুরোসাওয়া বলেছিলেন, ‘সত্যজিৎ রায়ের সিনেমা যে দেখেনি, সে পৃথিবীতে বাস করেও চাঁদ-সূর্য দেখেনি।’

" align=


















পঞ্চাশের দশকে সত্যজিৎ রায় লন্ডনে গিয়ে কোনো এক কারণে চলচ্চিত্রের প্রতি আগ্রহী হয়ে পড়েন। সেবার বেড়াতে গিয়ে তিনি প্রচুর ছবি দেখেছিলেন। এসব ছবির মধ্যে ইতালীয় পরিচালক ভিত্তোরিও ডি সিকোর বিখ্যাত ছবি ‌‌‘বাইসাইকেল থিভস’ তাকে সবচেয়ে বেশি আকৃষ্ট করেছিলো। এই ছবিটা দেখার পরই তিনি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন যে তিনি চলচ্চিত্রকার হবেন। সেই থেকে শুরু...

" align=












অল্প কিছু টাকা যোগাড় করে ১৯৫২ সালে ‘পথের পাঁচালী’ উপন্যাসের নামে ছবি নির্মাণে নামেন তিনি। তবে টাকার অভাবে সেটা কিছুদিন পরই বন্ধ হয়ে যায়। পরে পশ্চিমবঙ্গ সরকার আর্থিক অনুদানের ব্যবস্থা করলে পথের পাঁচালীর কাজ শেষ হয়। প্রথম ছবিতেই নিজের জাত চেনালেন সত্যজিৎ। 

" align=










পরবর্তীতে সুনাম কুড়ানো সব ছবি নির্মাণ করেন তিনি। চারটি তথ্যচিত্র সহ সব মিলিয়ে ৩৬টি সিনেমা। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য – ‘অপরাজিত’, ‘পরশপাথর’, ‘জলসাঘর’, ‘অপুর সংসার’, ‘দেবী’, ‘তিনকন্যা’, ‘কাঞ্চনজঙ্ঘা’, ‘অভিযান’, ‘মহানগর’, ‘চারুলতা’, ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’, ‘হীরক রাজার দেশে’, ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’, ‘অশনি সংকেত’, ‘সোনার কেল্লা’, ‘ঘরে-বাইরে’, ‘গণশত্রু’, ‘শাখা-প্রশাখা’, ‘আগন্তুক’ প্রভৃতি।

" align=




















মধ্যবয়সে ছবি বানানো শুরু করা ‍সত্যজিৎ রায় পরবর্তীতে পরিচিতি লাভ করেছিলেন বিংশ শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র নির্মাতাদের একজন হিসেবে। তার জনপ্রিয়তা এমন যে, বিবিসির চালানো “সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি” জরিপেও উঠে এসেছে তার নাম। 
অপুর সংসার

অপুর সংসার











মার্টিন স্কোরসেস থেকে শুরু করে খ্যাতনামা বহু পরিচালক তাঁর সিনেমা দেখে চলচ্চিত্র নির্মাণে উৎসাহ পেয়েছেন বলে জানা যায়।
‘পথের পাঁচালী’

‘পথের পাঁচালী’




















সত্যজিৎ রায়ের অপর একটি মাইলফলক, তিনি প্রথম রঙিন বাংলা চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। তাঁর শ্রেষ্ঠ কাজগুলির মধ্যে একটি, ‘কাঞ্চনজঙ্ঘা’ (১৯৬২) প্রথম রঙিন বাংলা চলচ্চিত্র এবং এটিকে প্রথম ভারতীয় নৃতত্ত্ব চলচ্চিত্র হিসেবেও গণ্য করা হয়। 
সত্যজিৎ রায়ের নির্মিত কিছু কালজয়ী চলচ্চিত্র

সত্যজিৎ রায়ের নির্মিত কিছু কালজয়ী চলচ্চিত্র


















এছাড়া চিড়িয়াখানা (১৯৬৭), গুপী গাইন বাঘা বাইন (১৯৬৮), প্রতিদ্বন্দ্বী (১৯৬৯), সোনার কেল্লা (১৯৭৪), জন অরণ্য (১৯৭৫) এবং আগন্তুক (১৯৯১) এর জন্য তিনি এই পুরস্কার জিতেছেন। এমনকী তিনি দু’বার শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালকের জন্য জাতীয় পুরস্কার জিতেছিলেন।

" align=









চলচ্চিত্রে অবদানের জন্য ১৯৯২ সালের অস্কার আসরে সত্যজিৎ রায়কে আজীবন সম্মাননা প্রদান করা হয়। এটি ছিল তার জীবনের সেরা স্বীকৃতি। 

" align=










এছাড়া কান, বার্লিনসহ বিশ্ব চলচ্চিত্রের বড় বড় উৎসবে ডাক পেয়েছেন তিনি। ভূষিত হয়েছেন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অসংখ্য পুরস্কারে।
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »


Also News   Subject:  মহারাজা   সত্যজিৎ রায়   চলচ্চিত্র  







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত