বাজেটে যেমন সরকারের রাজনৈতিক দর্শনের প্রতিফলন ঘটে, তেমনি দেশের অর্থনৈতিক চিত্র ফুটে উঠে। মুক্তিযুদ্ধের ৫৩তম বছর পরের বাজেট আমরা বৈষম্যহীন আলোকিত মানুষসমৃদ্ধ সমাজ গঠনের উদ্দেশ্যে করব, নাকি মুক্ত বাজার আর কর্পোরেট সাম্রাজ্যবাদী নিয়ন্ত্রকদের বিশ্বায়নের হাতে ছেড়ে দেব। একটি দেশের বাজেটে সম্পদ-আয়-স্বাস্থ্য-শিক্ষার বিপজ্জনক বৈষম্য হ্রাসে যত পথ-পদ্ধতি আছে, তার সবই দ্রুত প্রয়োগ করা উচিত। বাংলাদেশে রাজস্ব বাজেটে নারীদের অংশগ্রহন অত্যন্ত কম। যার কারণে বাজেটের একটা বড় অংশের প্রায় কোন সুবিধা নারীরা পাচ্ছে না। নারীর জন্য উন্নয়ন বাজেটে সরাসরি বরাদ্দের পরিমাণ বাংলাদেশের নারী-পুরুষের বিদ্যমান অসমতার প্রেক্ষিতে অতি নগন্য।
‘তথ্য প্রযুক্তিতে নারীর অভিগম্যতা ও চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রস্তুতি এই প্রতিপাদ্য নিয়ে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) বিকেল ৪ টায় উদীচী জেলা সংসদের সত্যেন সেন মিলনায়তনে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ দিনাজপুর জেলা শাখার আয়োজনে আসন্ন জাতীয় বাজেটে নারী-পুরুষের সমতাভিত্তিক বাজেট বরাদ্দ ও তার বাস্তবায়ন বিষয়ক প্রাক বাজেট আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ দিনাজপুর জেলা শাখার সভাপতি ড. মারুফা বেগম এর সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রুবিনা আকতার।
২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের প্রাক বাজেট প্রস্তাবনা বিষয়ে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সদস্য ও কলেজিয়েটি গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মো. হাবিবুল ইসলাম এর লিখিত প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ দিনাজপুর জেলা শাখার অর্থ-সম্পাদক শাহানাজ পারভীন।
আলোচনা সভায় বক্তারা আরো বলেন, আমাদের দেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেক নারী। কিন্তু এই বৃহৎ জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে তেমন কোন মৌলিক ও স্থায়ী পরিবর্তন এখনও পর্যন্ত লক্ষ্য করা যায় না। নারীর উন্নয়ন না হলে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন হবে না। জাতীয় উন্নয়ন বাজেটে নারীর সার্বিক উন্নয়নের বিষয়াদি সুস্পষ্ট উল্লেখপূর্বক নারীকে উন্নয়নের মূল স্রোতধারায় একীভূত করতে হবে। এ লক্ষ্যে সর্বপ্রথম নারীর মৌলিক অধিকার সমূহ চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপসমূহ জাতীয় বাজেটে রাখতে হবে এবং তা বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে হবে।
প্রাক-বাজেট বিষয়ক মতবিনিময় সভায় মতামত ব্যক্ত করেন, নাট্য সমিতির সাধারণ সম্পাদক রেজাউর রহমান রেজু, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি সুলতান কামাল উদ্দিন বাচ্চু, সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সাংবাদিক আজহারুল আজাদ জুয়েল, নুরুল মতিন সৈকত, এ্যাড. মেহেরুল ইসলাম, সন্ধ্যা রানী বাগচি, অমিত রায়, মহিলা পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি কানিজ রহমান, জেলা কমিটির সহ-সভাপতি মিনতি ঘোষ, সাংগঠনিক সম্পাদক রাজিয়া সুলতানা পলি, শিক্ষা ও সংস্কৃতি সম্পাদক কৃষ্ণা প্রিয়া মুর্মু প্রমুখ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন অনামিকা পান্ডে।