ঘূর্নিঝড় 'রেমাল' এর সময় আশ্রয় নেয়া ৬০টি পরিবারকে দুর্ব্যবহার করে ঝড়ের পরের দিন মাদরাসা থেকে তাড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে সহকারি মৌলভী সাইদুর রহমান সাইদের বিরুদ্ধে। তিনি বন্যার পরের দিন সকালে এসে আশ্রয় নেয়া লোকদের সাথে র্দুব্যবহার করে তাড়িয়ে দেন।
এ নিয়ে এলাকার মানুষের মধ্য ক্ষোভ দেখা গেছে। তারা বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অবহিত করেছেন। তারা মাওলানা সাইদুর রহমানের সঠিক বিচার দাবি তুলেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে নেছারাবাদ উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের ডুবি আলিম মাদরাসায়।
সাইক্লোন সেল্টারে আশ্রয় নেয়া লোকজন অভিযোগ, করে বলেন, ২৬ মে (রোববার) রাতে ঝোড়ো বাতাস সহ মুষলধারে বৃষ্টি আর বন্যায় পানি বেড়ে যাওয়ায়। প্রায় ৬০টি পরিবার নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য ছুটে আসেন ডুবি আলিম মাদরাসায়।
গত সোমবার (২৭ মে) সকাল থেকে বিকেলের মধ্য গোটা উপজেলার নিম্ন অঞ্চল এলাকার শত শত বাড়ী ঘরে তিন থেকে ছয় থেকে আট ফুট পানিতে প্লাবিত হয়ে যায়। ঘরের উপরে গাছ পড়ে ধ্বংশ হয়ে পড়ে শতাধিক বাড়ী ঘর।
মঙ্গলবার সকালে বন্যা থেমে পানি সরে গেলেও বন্যায় মাদরাসায় আশ্রয় নেয়া অনেকের বাড়ী ঘরে ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হয়। তাই তারা দুইটা দিন ওই আশ্রয়নে থাকতে চেয়েছিলেন। ২৮ মে সকালে মাদরাসার সহকারি মৌলভী মাওলানা সাইদুর রহমান সাইদ তাদের সাথে দুর্ব্যবহার ও গালিগালাজ করে মাদরাসা থেকে তাড়িয়ে দেন।
ভুক্তভোগী বিধবা নারী নেহারুন অভিযোগ করেন, বন্যায় তিনি ডুবি মাদরাসায় আশ্রয় নিয়েছিলেন। বন্যায় ঘরের উপরে গাছ পড়ে ঘর ধুমড়েমুচড়ে গিয়েছে। পানিতে ঘরের মাটি ধুয়ে গেছে। থাকার কোন জায়গা নেই। তাই আর একটা দিন তিনি ওই মাদরাসায় রাত্রি যাপন করতে চেয়েছিলেন। মাদরাসার মাওলানা সাইদ গালিগালাজ করে তাড়িয়ে দিয়েছেন।
ওই আশ্রয়নে আশ্রয় নেয়া মাহিনূর নামে অপর এক ভুক্তভোগী অভিযোগ করেন, বন্যায় আমাদের ঘর বাড়ী সব শেষ। ঘরে থাকার মত কোন জায়গা নেই। তাই মাওলানা সাইদের হাতে পায়ে ধরে মাদরাসায় দুইটা দিন থাকতে চেয়েছিলাম। তিনি আমাদের সাথে খুব বাজে ব্যবহার করে তাড়িয়ে দিয়েছেন। এমনকি বন্যার রাতে আশ্রয়নের বাথরুমে তালা দিয়ে রেখেছেন। আমরা নিরুপায় হয়ে সেই তালা ভেঙ্গে বাথরুম ব্যবহার করায় আমাদের যা ইচ্ছে তা বলেছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত মাওলানা সাইদুর রহমান সাইদ বলেন, তারা যে অভিযোগটা করেছেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা বলেছেন। মাত্র দুইজন লোক ছিলো আমি তাদের কে চলে যেতে বলেছি। রিপোর্ট করার দরকার নাই আপনি সভাপতির সাথে একটু কথা বলেন।
মাদ্রাসা সভাপতি বিশিষ্ট ব্যবসায়ী এইচ এম মাসুদুর রহমান বলেন, ঘটনাটি আমি গতকালকে শুনেছি সাইদ মৌলভী যে কাজটি করেছে এটা দুঃখ জনক। ঝড়ের সময় তাদেরকে চলে যেতে বলাটা উচিত হয়নি। আমাকে জানালে আমি তাদের জন্য খাওয়া দাওয়ার ব্যাবস্থা করে দিতাম। আমারা কমিটির লোকজন বসে বিষয়টি দেখবো।
ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান বলেন, ওই মৌলভী আশ্রয়নের লোকের সাথে নাকি বাজে ব্যবহার করেছেন। আমি মৌলভীকে বকে দিয়েছি এবং তাদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করেছি।
নেছারাবাদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) মো: মনিরুজ্জামান জানান, আমি বিষয়টি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেব।