প্রথম বারের মতো মাচা পদ্ধতিতে বানিজ্যিক ভাবে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলার কৃষক আ: রব।
চাষাবাদকে বহুমুখীকরণ সহ প্রান্তীক জনগোষ্ঠীর পুষ্টির মান বৃদ্ধিতে সার্বিক সহযোগিতা করছে বেসরকারী সংস্থা ইন্ট্রিগ্রেটেড ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (আইডিএফ)। তরমুজের মৌসুম না হলেও এই অ-সময়েও থোকায় থোকায় জুলে আছে মিষ্টি রসালো এই ফল।ভারে যেন ছিড়ে না পরে সেজন্য নেটের ব্যাগ দিয়ে বেধে রাখা হয়েছে ব্লাক বেবী জাতের গ্রীষ্মকালীন সুমিষ্ট এই ফল।
এমন দৃশ্য চোখে পরবে মাটিরাঙ্গা পৌরসভার ০৫ নং ওয়ার্ড চরপাড়া গ্রামে। এই তরমুজ চাষে সার, বীজ, মাচা ও নেট সহ প্রতি বিঘা চাষ করতে খরচ হয় প্রায় পয়ত্রিশ থেকে চল্লিশ হাজার টাকা। বিঘা প্রতি ফলনে লাভ পাওয়া যায় আড়াই থেকে তিন লাখ টাকা। কৃষক আ: রব বানিজ্যিক ভাবে গ্রীষ্মকালীন এ তরমুজ আবাদ করে লাভ পেয়েছেন। তাদের দেখে তরমুজ চাষে আগ্রহী হচ্ছেন অনেকেই, এর মাধ্যমে বেকারত্ব দুর করা সম্ভব বলে মনে করছেন তাঁরা।
কৃষক আ: রব বলেন, আমি প্রথম বারের মতো বিশ শতক যায়গায় গ্রীষ্মকালীন তরমুজ (ব্লাক বেবী) চাষ করেছি। এখানে আমার ব্যয় হয়েছে বিশ হাজার টাকা, যে পরিমানে ফলন হয়েছে আশা করি দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা বিক্রি করতে পারবো। আমার তরমুজ চাষ দেখে স্থানীয় কৃষকদের তরমুজ চাষে আগ্রহ বাড়ছে। এবং তাঁরাও অনেক খুশী।
পৌর ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সহিদুল ইসলাম সোহাগ বলেন,প্রথম বারের মতো আইডিএফের মাধ্যমে ব্লাক বেবী জাতের তরমুজ চাষ করে যে সাফল্য পেয়েছেন কৃষক আ: রব। মাটিরাঙ্গা কৃষি অফিসের মাধ্যমে অন্যান্য কৃষকদের প্রশিক্ষণের মধ্যে দিয়ে এই তরমুজ চাষ ব্যাপক ভাবে করতে পারলে কৃষকরাও লাভবান হবে এবং গ্রীষ্মকালীন সময়েও আমরা তরমুজের স্বাদ পেতে পারবো।
যুবক ইমাম হোসেন বলেন, মাটিরাঙ্গা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের উদ্যোগে বেকার যুবকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ব্লাক বেবী জাতের এই তরমুজ চাষ পদ্ধতি শেখানো হয় এবং বীজ ও সার্বিক সহযোগিতা করে তাহলে বেকারত্বের হার অনেকাংশ কমে যাবে। এতে করে একদিকে যেমন কর্মসংস্থান হবে অন্যদিকে অফ সৃজনে স্থানীয় ভাবে তরমুজের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় রপ্তানি করা সম্ভব হবে। তাতে কৃষক ও দেশ লাভবান হবে।
ইন্ট্রিগ্রেটেড ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (আইডিএফ) এর কৃষিবিদ মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, সুমিষ্ট এই তরমুজ চাষে কৃষকদের আর্থিক ও সার্বিক সহযোগিতা করছেন ইন্ট্রিগ্রেটেড ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (আইডিএফ) ভবিষ্যতে কৃষকরা এই জাতের তরমুজ চাষ করতে আগ্রহী থাকলে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবো।
মাটিরাঙ্গা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: সবুজ আলী জানান, মাটিরাঙ্গা উপজেলায় এই প্রথম ব্লাক বেবী জাতের তরমুজ চাষ করা হয়েছে। পরিক্ষামূলক ভাবে দেখেছি যে এই জাতের ফলন খুব ভালো হয়, এবং কৃষক লাভবান হবেন। আমাদের পক্ষ থেকে এই তরমুজ চাষকে আরও বৃদ্ধি করতে কৃষকদের প্রযুক্তিগত জ্ঞান সহ সাপোর্ট দেওয়া হবে এবং কৃষকদের উদ্ভুদ্ধ করার ব্যবস্থা নিবো।
মাচা পদ্ধতিতে বানিজ্যিক ভাবে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষ ছড়িয়ে দিতে পারলে পুষ্টির চাহিদা সহ সচ্যলতা আসবে এমনটাই মনে করছে সবাই।