নেত্রকোনার কেন্দুয়া স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) আওতাধীন কেন্দুয়া উপজেলায় কেন্দুয়া-মদন, সান্দিকোনা-গন্ডা বাজার,রোয়াইলবাড়ী- পাইকুড়া সড়ক, চিরাং বাজার- মোজাফরপুর সড়কসহ উপজেলায় আরো অসংখ্য সড়কে খানাখন্দে যান চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে।
প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে দূর্ঘটনা, আহত হচ্ছে যাত্রীসাধারণ। সড়কগুলোর সংস্কার কিংবা পূর্ন নির্মাণের দাবি জানিয়েচ্ছেন ওই সড়কে চলাচলকারী যানবাহনের চালকসহ সাধারণ মানুষেরা।
জানা যায়, উপজেলার সান্দিকোনা ইউনিয়নে সান্দিকোনা মোড় হতে গন্ডা ইউনিয়নে গন্ডা বাজার পর্যন্ত সড়কটির দৈর্ঘ্য প্রায় ছয় কিলোমিটার। অপর দিকে কেন্দুয়া পৌরশহরের সাউদপাড়া মোড় থেকে জামতলা মোড় পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার সড়কের বেহালদশা। বেহাল এরাস্তা গুলোর জন্য চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন সাধারণ মানুষ।
সড়ক দুটি জুড়ে বিভিন্ন স্থানে ছোট বড় অসংখ্য খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এসব খানাখন্দে বৃষ্টির পানি জমে ধীরে ধীরে গর্তগুলো আরও বড় আকার ধারণ করছে এবং গর্তে জমে থাকা ময়লা পানি সাধারণ পথচারীসহ যাত্রী ও যানবাহন চালকদের দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রতিদিনই তিনশ থেকে চারশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটো চলাচল করে ওই সড়কে। আর ওইসব সড়কের অটোরিকশাগুলো সান্দিকোনা থেকে গন্ডা,চিরাং বাজার থেকে মেজাফরপুর বাজার, পৌরসদর থেকে গোগবাজার, রোয়াইলবাড়ী বাজার থেকে পাইকুড়া মোড় পর্যন্ত প্রতিদিনই যাতায়ত করেন। আর এসব যানবাহনগুলি পাশের উপজেলা মদন, তাড়াইল এবং ঈশ্বরগঞ্জও প্রতিদিন হাজারো যাত্রী নিয়ে চলাচল করে।
সোমবার (১ জুলাই ) সকাল থেকে দুপুরে ওই সড়কগুলি ঘুরে পথচারী, যাত্রী ও বিভিন্ন যানবাহন চালকের সাথে কথা বলে ভোগান্তির এসব চিত্র দেখা গেছে।
বিশেষ করে পৌরশহরের সাউদপাড়া মোড় এবং উপজেলার সান্দিকোনা মোড় থেকে গন্ডা বাজার পর্যন্ত এলাকায় রাস্তাটির অবস্থা খুবই নাজুক। এ দুটি রাস্তা জুড়ে বেশ কয়েকটি বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে এবং এসব গর্তে ময়লা পানি জমে কাঁদায় সয়লাব হয়ে গেছে। গুরুত্বপূর্ণ এদুটি সড়ক দিয়ে অনেকটা ঝুঁকি নিয়েই স্কুল-কলেজের শিক্ষক- শিক্ষার্থীসহ গুরুত্বপূর্ণ লোকজন প্রতিনিয়ত যাতায়াত করছেন। রাস্তার গর্তে যানবাহনের চাকা আটকে কিংবা উল্টে পড়ে প্রায় সময়ই ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনাও। তবে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেন বিষয়টি দেখেও দেখছে না।
এব্যাপারে কেন্দুয়া সরকারি কলেজ মোড় এলাকার ব্যবসায়ী আবু সাদেক তালুকদার বলেন, ভাঙাচোরা এ সড়কটির জন্য গত এক দেড় মাস ধরে সাধারণ মানুষ অনেক কষ্ট করছে। প্রায় সময়ই সড়কের বড় বড় গর্তে গাড়ি উল্টে যাচ্ছে। গতকাল (৩০জুন জুন) একটা গাড়ি উল্টে গিয়েছিল। তবে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
এসড়কে নিয়মিত অটোরিকশা (ইজিবাইক) চালক জিয়াউর রহমান বলেন, রাস্তাটার অবস্থা খুব খারাপ। যাত্রী নিয়ে গাড়ি চালিয়ে যাওয়া বেশ কঠিন। গর্তে পড়ে গাড়ি হেলেদুলে প্রায় সময়ই উল্টে যায়। আমাদের গাড়িরও ক্ষতি হচ্ছে। রাস্তাটা তাড়াতাড়ি মেরামত করা না হলে চলাচল করাই দুরুহ হয়ে যাবে।
সান্দিকোনা-গন্ডা সড়কের বেহাল দশার প্রসঙ্গে গন্ডা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট জহিরুল ইসলাম সুমন তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, আমাদের কেন্দুয়া উপজেলার গন্ডা থেকে সান্দিকোনা রাস্তাটি বর্তমানে খুব বেহাল অবস্থায় রয়েছে। চলাচলের প্রায় অনুপযোগী। প্রায়ই হচ্ছে দুর্ঘটনা। অতিসত্বর উক্ত রাস্তা সংস্কার করা দরকার। সর্বোপরি যতদ্রুত সম্ভব রাস্তাটি সংস্কারের ব্যাপারে যথাযথ কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।
কেন্দুয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মোফাজ্জল হোসেন ভূঞা জানান, আমি নবাগত হিসেবে মাত্র কয়েকদিন পূর্বে শপথ নিয়েছি। তবে রাস্তা সংস্কারের বিষয়ে উপজেলা ইন্জিনিয়ারের সাথে কথা বলে সড়কের অবস্থা বিবেচনা করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
এবিষয়ে কথা হলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) কেন্দুয়া উপজেলা প্রকৌশলী আল আমিন সরকার বলেন, সত্যি সড়ক দুটির অবস্থা খুব খারাপ। পুরো উপজেলায় এরকম আরও কয়েকটি সড়ক রয়েছে। কিন্তু ফান্ডিং স্বল্পতার কারণে সবগুলো রাস্তার সংস্কার কাজ একসাথে করা সম্ভব নয়। তবে আমরা সংস্কার যোগ্য সবগুলো সড়ক মেরামতের জন্য বরাদ্দ চেয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি। এরমধ্যে কেন্দুয়া-মদন ও সান্দিকোনা -গন্ডা সড়ক দুটির সংস্কার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে খুব তাড়াতাড়ি করা হবে বলে তিনি জানান।