ম্যাচে বেশিরভাগ সময়ই চালকের আসনে ছিল বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে নাজমুল হোসেন শান্ত-মুশফিকুর রহিমদের দারুণ ব্যাটিংয়ে বড় সংগ্রহ গড়েছিল টাইগাররা। তবে গলের ব্যাটিং স্বর্গে ভালোই জবাব দিয়েছে শ্রীলঙ্কা। তারপরও ১০ রানের ছোট লিড পেয়েছিল সফরকারীরা। সেটার সঙ্গে দ্বিতীয় ইনিংসেও শান্তর দারুণ ব্যাটিংয়ে ইনিংস ঘোষণার সাহস পায় বাংলাদেশ।
তখনও দিনের খেলার ৩৭ ওভার বাকি ছিল। তবে এই সময়ে লঙ্কানদের ৪ উইকেটের বেশি তুলতে পারেনি টাইগাররা। ফলে ড্র দিয়েই আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন চক্রে পা রাখল বাংলাদেশ।
গলের পিচে চতুর্থ দিন পর্যন্ত ছিল ব্যাটারদের রাজত্ব, তবে পঞ্চম দিনে এসে বাংলাদেশ ম্যাচের পুরো নিয়ন্ত্রণ নিল হাতে। দ্বিতীয় ইনিংসে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর অপরাজিত ১২৫ রানের দুর্দান্ত সেঞ্চুরির ওপর ভর করে টাইগাররা ইনিংস ঘোষণা করেছে এবং শ্রীলঙ্কাকে দিয়েছে ২৯৬ রানের বিশাল লক্ষ্য, যেখানে সময় মাত্র ৩৭ ওভার!
প্রথম ইনিংসে ১৪৮ রানের চমৎকার ইনিংসের পর দ্বিতীয় ইনিংসেও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে খেলেছেন শান্ত। ১৯৯ বলের ইনিংসে ৯টি চারের সঙ্গে ছিল ৩টি দৃষ্টিনন্দন ছক্কা। ব্যাট হাতে এই ধারাবাহিকতা শুধু স্কোরবোর্ডে প্রভাব ফেলেনি, দলের আত্মবিশ্বাসও বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুণ।
এই সেঞ্চুরির মাধ্যমে শান্ত হলেন বাংলাদেশের ইতিহাসে বিরল সেই ব্যাটারদের একজন, যারা একই টেস্টে দুই ইনিংসেই শতক পেয়েছেন। অধিনায়ক হিসেবে এমন দায়িত্বশীল ইনিংস নিঃসন্দেহে তাকে রাখবে বিশেষ সম্মানের আসনে।
গল টেস্টের পঞ্চম দিনে বাংলাদেশ যখন ইনিংস ঘোষণা করে, স্কোরবোর্ডে তখন ২৮৫/৬। শান্ত ছাড়া ব্যাট হাতে অবদান রেখেছেন সাদমান ইসলাম (৭৬), মুশফিকুর রহিম (৪৯) ও মমিনুল (১৪)। যদিও দ্বিতীয় ইনিংসে দ্রুত রান তুলে প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলার পরিকল্পনা তেমন দেখা যায়নি টাইগারদের মধ্যে।
বাংলাদেশ ২৯৬ রানের লক্ষ্য দিলে শেষটা জমিয়ে দিয়েছিলেন তাইজুল ইসলাম। তার ঘূর্ণিতে ৪৮ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে গিয়েছিল লঙ্কান দল। অবশ্য বাংলাদেশ দেরিতে ইনিংস ঘোষণা করায় আরও চাপ তৈরির সুযোগ ছিল না। শেষ দিকে কামিন্দুর ক্যাচও হাতছাড়া হয়েছে। শেষ পর্যন্ত উপায় না দেখে ৫ ওভার আগে ড্র মেনে নেন শান্ত। তাতে ১২ বছর ও ২৬ টেস্টে পর ড্র দেখেছে গল স্টেডিয়াম। দ্বিতীয় ইনিংসে ২৩ রানে ৩ উইকেট নেন তাইজুল। ২৯ রানে একটি নেন নাঈম হাসান।