উত্তরের জেলা নওগাঁয় ধান কাটা মাড়াই শেষে বর্তমানে চলছে বোরোর ভরা মৌসুম। স্বাভাবিকভাবে এ সময়ে চালের দাম নিম্নমুখী হওয়ার কথা।
অথচ সিন্ডিকেটের কবলে গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে এ জেলার মোকামগুলোতে প্রতি কেজি চালের দাম ২-৬ টাকা বেড়েছে। এজন্য প্রশাসনের নজরদারির অভাবকে দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা।
বড় চালের মোকাম আলুপট্টি আড়ত সূত্রে জানা যায়, পাইকারি পর্যায়ে এক সপ্তাহ আগে এই আড়তে মানভেদে প্রতি কেজি সম্পা কাটারি চালের দাম ছিল ৬২-৬৪ টাকা। এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৬৪-৬৮ টাকা দরে। ৬৬-৬৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া জিরাশাইল চাল বিক্রি হচ্ছে ৭০-৭২ টাকায়। ৫৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া শুভলতা চাল এখন বিক্রি হচ্ছে ৬২-৬৪ টাকায়। আর ৫৯-৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া ব্রি আর-২৮ চাল বিক্রি হচ্ছে ৬২-৬৪ টাকায়।
৫৩-৫৪ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া পারিজা চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৭-৫৮ টাকায়। ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া মোয়াজ্জেম চাল বিক্রি হচ্ছে ৬২-৬৩ টাকায়।
নওগাঁর সততা রাইস এজেন্সির পাইকারি ব্যবসায়ী সুকুমার ব্রহ্ম বলেন, দেশে নির্বাচিত সরকার না থাকায় সরকারের মজুত নীতিমালার তোয়াক্কা করছেন না অসাধু মজুতদাররা। এবার বোরো মৌসুমের শুরুতেই করপোরেট ব্যবসায়ীরা হাট-বাজারে আসা অর্ধেকের বেশি ধান কিনে মজুত করে রেখেছেন। কৃষকের ধান সাধারণ মিলারদের হাতে একেবারে নেই বললেই চলে। তাই হাট-বাজারে অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়া দামে ধান কিনে চাল করতে গিয়ে মিলারদের খরচ বেড়েছে। যার প্রভাবে গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে মানভেদে প্রতি কেজি চালের দাম পাইকারি পর্যায়ে ২-৬ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
নওগাঁ জেলা চালকল মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন চকদার বলেন, ‘চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে অন্তর্বর্তী সরকারের দৃশ্যমান জোরালো পদক্ষেপ নেই। যার ফলে বাজারে এই নৈরাজ্যের সৃষ্টি হয়েছে। শৃঙ্খলা না থাকায় চালের দাম হু হু করে বাড়ছে। বাজারে স্বস্তি ফেরাতে চাইলে ধান-চালের অবৈধ মজুতদারদের খুঁজে বের করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর হতে হবে।’
খুচরা চাল ব্যবসায়ী মেসার্স বুলেট রাইস সাপ্লায়ার্সের প্রোপাইটার মকবুল হোসেন বলেন, এক সপ্তাহ আগে কাটারিভোগ ৫০ কেজি ওজনের বস্তুা কিনছি ৩১০০-৩২০০ টাকা দরে। বর্তমানে সেই বস্তুা কিনতে হচ্ছে ৩৪০০-৩৭০০ টাকা দরে। মিলগুলোতে মজুতবিরোধী অভিযান পরিচালনা না হওয়াই মিলাররা সিন্ডিকেট করে ইচ্ছামতো চালের দাম বাড়াচ্ছেন। মিলগুলোতে অভিযান পরিচালনা করলে কিছুটা চালের দাম কমে আসবে।