ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) প্রধান ফটকের সামনের কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক সাড়ে তিন ঘন্টা ধরে অবরোধ করে রেখেছে কোটা বিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
কোটাবিরোধী আন্দোলনের 'বাংলা ব্লকেড' কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ আন্দোলন করছে শিক্ষার্থীরা। এতে মহাসড়কের উভয় পার্শ্বে বর্তমানে দীর্ঘ ১০ কিলোমিটার বেশি সড়কে যানযটের সৃষ্টি হয়েছে।
বুধবার (১০ জুলাই) দুপুর আড়াইটার প্রতিবেদনে তৈরীর সময় পর্যন্ত রাস্তা অবরোধ করে আন্দোলন চলমান রাখা হয়েছে। এর আগে সকাল দশটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা প্রাঙ্গনে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়। সেখান থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়।
সকাল এগারটার দিকে বিক্ষোভ মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়কে আসে। মহাসড়কে এসে শিক্ষার্থীরা মহাসড়কের দুইপাশে কাঠের গুড়ি ফেলে অবরোধ করে সেখানেই অবস্থান নেয়।
মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের -"আঠারোর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার। জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে। লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে। আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম। মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই"- ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।
শিক্ষার্থীদের হাতে, ‘আমি মাউন্ট এভারেস্ট পর্বত দেখিনি, কিন্তু কোটা বৈষম্যের পাহাড় দেখেছি’, ’৫৬ শতাংশ কোটা, ৪৬ শতাংশ প্রশ্নফাঁস, মেধাবীরা অটো বাদ’, ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘দেশটা নয় পাকিস্তান, কোটার হোক অবসান’, ‘স্বাধীন এই বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, '১৮ সালের পরিপত্র, পুনর্বহাল করতে হবে', ‘কোটাবৈষম্য নিপাত যাক, মেধাবীরা মুক্তি পাক’-সহ বিভিন্ন লেখা সম্বলিত প্লাকার্ড দেখা যায়।
এছাড়াও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা মহাসড়কের উপর অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন প্রতিবাদী গান, নাটিকা ও কবিতা আবৃত্তি করতে দেখা গেছে।আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সন্ধ্যা পর্যন্ত এ অবরোধ কর্মসূচি চলতে পারে।
এদিকে আন্দোলনের কারণে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কুষ্টিয়া, খুলনা ও শৈলকুপায় যাওয়ার বিকাল দুই ঘটিকার বাস আটকে রয়েছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বিশ্ববিদ্যালয়েই আটকে আছে।
উল্লেখ্য, সারাদেশে 'বাংলা ব্লকেড' কর্মসূচি ঘোষণা করে শিক্ষার্থীরা একদফা দাবিতে আন্দোলন করছে। তাদের একদফা দাবি হলো- সব গ্রেডে সব ধরনের অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লিখিত অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে ন্যূনতম পর্যায়ে এনে সংসদে আইন পাস করে কোটা পদ্ধতিকে সংশোধন করতে হবে।