বগুড়া সদরে মিজানুর রহমান মিজান (৩৫) নামে স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ হত্যাকান্ডের প্রতিশোধ নিতে প্রতিপক্ষের লেদু নামে এক ব্যক্তিকে হাসপাতালে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
গতকাল সোমবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টার দিকে সদর উপজেলার গোকুল বন্দরে এ ঘটনা ঘটে। সদর থানার ওসি সাইহান ওলিউল্লাহ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। নিহত মিজান বগুড়া সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক ও গোকুল উত্তরপাড়ার গ্রামের মৃত আফছার আলী সাকিদারের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে পুলিশ জানায়, মিজান কয়েকজনের সঙ্গে গোকুল বন্দরের গোডাউন এলাকায় গল্প করছিলেন। এ সময় দুর্বৃত্তরা সেখানে আসে। তারা মিজানকে ঘিরে ফেলে এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে চলে যায়।
গুরুতর অবস্থায় মিজানকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখান থেকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সদর থানার ওসি সাইহান ওলিউল্লাহ জানান, নিহতের লাশ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়।
রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বগুড়া সদরে প্রাণক্ষয়ী সংঘাতে জড়িয়েছে বিএনপির নেতাকর্মীরা। মাত্র দুই ঘণ্টার ব্যবধানে এ ঘটনা ঘটে।
সদর থানার ওসি সাইহান ওলিউল্লাহ জানান, সোমবার রাত ৯টায় উপজেলার গোকুল এলাকায় স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মিজানুর রহমান মিজানকে (৩৭) কোপানো হয়। তাকে হাসপাতালে নেওয়ার সময় প্রতিপক্ষের লেদু মিয়াকে (৩৫) দেখতে পেয়ে হামলা চালায় মিজানের লোকজন। পরে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মিজানকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
ছিলিমপুর মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মিলাদুন্নবী বলেন, মিজানের অনুসারীরা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে লেদুর ওপর দ্বিতীয় দফা হামলা চালায়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১২টায় চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে লেদুকে।
স্থানীয়রা জানান, নিহত মিজান গোকুল এলাকার আফসার আলী সাকিদারের ছেলে। দীর্ঘদিন থেকে বিরোধ চলে আসছিল একই এলাকার বিপুলের সাথে।
বিপুল গোকুল ইউনিয়ন যুবদলের বহিষ্কৃত সভাপতি। তার অনুসারী নিহত লেদু মিয়া ওই এলাকার বুলু মিয়ার ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার রাত সাড়ে ৮টায় গোকুল ইউনিয়ন পরিষদের পাশ্ববর্তী একটি ঘরে বসে গল্প করেছিলেন মিজান। রাত ৯টার দিকে ৮-১০ জনের একদল অস্ত্রধারী মোটরসাইকেল যোগে এসে মিজানকে রামদা দিয়ে কুপিয়ে চলে যায়। মিজানুরকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
স্থানীয়রা জানান, মিজানকে হাসপাতালে নেওয়ার পর তার লোকজন প্রতিপক্ষ বিপুলের অনুসারী লেদুকে মারধরের পাশাপাশি কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। পুলিশ লেদুকে উদ্ধার করে একই হাসপাতালে নেয়। মিজানুরের মৃত্যুর খবরে তার অনুসারীরা পুলিশি বাধা অতিক্রম করে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে লেদুকে ফের মারধর করে। ওই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১২ টার দিকে লেদুর মৃত্যু হয়।
বগুড়া জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আবু হাসান বলেন, মিজানুর রহমান মিজান তার সংগঠনের প্রাণ ছিলেন। “তার সঙ্গে বহিষ্কৃত যুবদল নেতা বিপুলের বিরোধ চলে আসার বিষয়টি সকলে জানে। ওই বিরোধের জের ধরেই মিজানকে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া প্রতিপক্ষের মারপিটে লেদু নামে একজন নিহত হয়েছে।” সদর থানার ওসি সাইহান ওলিউল্লাহ বলেন, দুইজনের হত্যার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা নেয়া হবে এবং ঘটনার সাথে জড়িতদের চিহিত করে গ্রেপ্তার করা হবে।