অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মৌলভীবাজার-৪ (কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল) আসন থেকে টানা ৭ম বারের মতো নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক কৃষিমন্ত্রী উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্ণীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের উপপরিচালক আখতারুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মৌলভীবাজার-৪ আসনের সাবেক এমপি ও কৃষিমন্ত্রী উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের বিপুল অর্থ আত্মসাৎ করেছেন বলে দুদকের কাছে তথ্য রয়েছে। রাজধানী ঢাকার উত্তরাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বাড়ি-ফ্ল্যাট ক্রয়সহ স্ত্রী-সন্তানের নামে বিপুল সম্পদ কিনেছেন। এছাড়া তার স্ত্রীর নামে কানাডার বেগমপাড়ায় বাড়ি কেনাসহ দেশ-বিদেশে বিপুল সম্পদের তথ্য নিশ্চিত হওয়ার পর দুদকের গোয়েন্দা শাখার প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই কমিশন তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সদ্য সাবেক কৃষিমন্ত্রী আব্দুস শহীদ এর বিরুদ্ধে দুর্ণীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক। দুদক সুত্র জানায়, আব্দুস শহীদ এর বিরুদ্ধে অনিয়মের মাধ্যমে দেশে-বিদেশে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের তথ্য দুদকের গোয়েন্দা তথ্যে প্রাথমিকভাবে মিলেছ। ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে বিভিন্ন দুর্নীতি ও অনৈতিক কার্যক্রমসহ নানাবিধ অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে তারা নিজ নামে, স্ত্রী ও পরিবারের নামে কোটি কোটি টাকার সম্পদ গড়েছেন।
দুদক কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম জানান, মৌলভীবাজার-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য, সাবেক কৃষিমন্ত্রী ও চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ ১৯৯১ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়ে নৌকা প্রতীকে মৌলভীবাজার-৪ (কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল) আসন থেকে নির্বাচনে জয়লাভ করেন। তার বিরুদ্ধে ক্ষমতা অপব্যবহারের মাধ্যমে বিভিন্ন দুর্নীতি, নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে সংসদ সদস্য হয়েও বন বিভাগের জমি দখল করে চা বাগান তৈরি এবং চা বাগানে রাস্তার লাইট ও ডিপ টিউবওয়েল সরকারি খরচে স্থাপনসহ সরকারি আইন লঙ্ঘন করেছেন। রাজধানীসহ বিভিন্ন জায়গায় বাড়ি, ফ্ল্যাট ক্রয়সহ স্ত্রী ও নিজ সন্তানদের নামে কোটি কোটি টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন। এছাড়া তার স্ত্রীর নামে কানাডার ‘বেগম পাড়ায়’ বাড়ি কেনাসহ দেশে-বিদেশে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের তথ্য দুদকের গোয়েন্দা অনসুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে সঠিক পরিলক্ষিত হয়েছে। ৭ বারের সংসদ সদস্য আব্দুস শহীদ বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সরকার দলীয় চিফ হুইপের দায়িত্ব পালন করেছেন।
উল্লেখ্য, উপাধ্যক্ষ ড. মো: আব্দুস শহীদ এর ছোট ভাই ইমতিয়াজ আহমেদ বুলবুল সদ্য সাবেক কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ছিলেন। আরেক ছোট ভাই ইমতিয়াজ আহমেদ বুলবুল ১নং রহিমপুর ইউপি চেয়ারম্যান হিসেবে দীর্ঘদিন যাবত দায়িত্ব পালন করে আসছেন।