সোমবার ৭ জুলাই ২০২৫ ২৩ আষাঢ় ১৪৩২
সোমবার ৭ জুলাই ২০২৫
সালথায় বিএনপি নেতাসহ ২৯ জনের নামে চাঁদাবাজি মামলা, আটক ৫
ফরিদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২৪, ৩:৪১ PM আপডেট: ২৪.১০.২০২৪ ৩:৪৩ PM
ফরিদপুরের সালথায় উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদকসহ ২৯ জনের নামে চাঁদাবাজি মামলা হয়েছে। এছাড়া এ মামলায় অজ্ঞাত আরো ১০ থেকে ১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। 

আজ বৃহস্পতিবার সকালে এই বিষয়টি  নিশ্চিত করেছেন ফরিদপুর সহকারী পুলিশ সুপার (নগরকান্দা-সালথা) সার্কেল মো. আসাদুজ্জামান শাকিল।

উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের আড়ুয়াকান্দি গ্রামের ফরিদা বেগম নামের এক মহিলা বাদী হয়ে গত সোমবার সালথা থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন। এর আগে চাঁদাবাজির ঘটনায় গত রোববার দিবাগত রাতে সালথার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত অভিযোগে পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে যৌথবাহিনী।

জানা যায়, সালথায় এক তরুণীকে উত্ত্যক্তের জের ধরে বখাটেদের চাকুর আঘাতে কাসেম বেপারী (২৮) নামের এক যুবক খুন হওয়ার ঘটনাকে পুঁজি করে কোটি টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠে উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক খায়রুল বাশার আজাদ ও তার ভায়রা জাহিদ মাতুব্বরসহ তাদের ছত্রছায়ায় থাকা একাধিক আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।
 
এ ঘটনায় আজাদের ভায়রা জাহিদ মাতুব্বর গ্রেফতার হলেও চাঁদাবাজির মূলহোতা হিসেবে পরিচিত যার পদবিকে পুঁজি করে কোটি টাকা চাঁদাবাজি করার অভিযোগ উঠেছে সেই বিএনপি নেতা খায়রুল বাশার আজাদ এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকায় জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

পুলিশ কিংবা যৌথবাহিনী এখনো তাকে গ্রেফতার করতে পারেননি। 

এই বিএনপি নেতাকে গ্রেফতার করতে না পারায় সালথার সাধারণ জনগণের মধ্যে নানা প্রতিক্রিয়াও দেখা দিয়েছে।

নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক বিএনপি নেতাকর্মী বলেন, আমরা ১৬-১৭ বছর আওয়ামী লীগ সরকারের শাসন আমলে মামলা-হামলার শিকার হয়েছি। বাড়ির টাকা খরচ করে দল টিকেয়ে রাখতে চেষ্টা করেছি। 

কিন্তু বিএনপি নেতা খায়রুল বাশার আজাদ আপার (শামা ওবায়েদ) এই সুনামকে পুঁজি করে এলাকায় আওয়ামী লীগের লোকজনকে দলে ভিড়িয়ে চাঁদাবাজি আর লুটপাটে মেতে উঠেছেন। যেটা বিএনপির নেতারা হয়তো জানেন না! এছাড়া উপজেলা ও জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতাদের ও সঠিকটা বুঝতে দিচ্ছেন না আপাকে।

তাই বিএনপিকে বাঁচাতে অতিশিগগিরই বিএনপি নেতা আজাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে দলের সুনাম ফিরিয়ে আনার জন্য বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে দাবি করছি। এছাড়া এভাবে দলের নাম বিক্রি করে চাঁদাবাজি করায় দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি তুলছি। তা না হলে দলের মধ্যে দিনদিন অসন্তুষ্টি বেড়ে গিয়ে মুখ ফিরিয়ে নিবেন ত্যাগী নেতাকর্মীরা। তবে বারবারই বিএনপি নেতা খায়রুল বাশার আজাদ তার বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগের বিষয়টিকে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন দাবি করে আসছেন। এটাকে তিনি তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার বলে দাবি করেন।

এ ব্যাপারে সালথা উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, বিএনপি নেতা খায়রুল বাশার আজাদ নির্দোষ। কিছু আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা বলছে। সে কোনো অন্যায় করেনি।

এই বিষয় ফরিদপুর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আতাউর রশিদ বাচ্চু  বলেন, দোষী যিনিই হোক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকেরা তদন্ত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

ব্যক্তির চেয়ে দল অনেক বড়। দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে কেউ এ দলে থাকতে পারে না। তিনি আরো বলেন, হয়তো খায়রুল বাশার আজাদ তার যুবলীগ নেতা ভায়রা আজাদের পক্ষ নিয়েছেন, না হয় তার ভায়রাকে কন্টোল করতে পারেনি।

এ ব্যাপারে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদাররেস আলী ইছা বলেন, আমরা তার বিরুদ্ধে উঠা কোনো অভিযোগেরই সত্যতা পাচ্ছি না। যদি এর সত্যতা পাই তবে অবশ্যই দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ফরিদপুর সহকারী পুলিশ সুপার (নগরকান্দা-সালথা) সার্কেল মো. আসাদুজ্জামান শাকিল বলেন, সালথায় একটি হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে লুটপাট ও চাঁদাবাজির অভিযোগে সালথা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক খায়রুল বাশার আজাদকে প্রধান আসামি করে ২৯ জনের নামোল্লেখ করে একটি চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে যৌথবাহিনী। বাকিদের গ্রেফতারে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান অব্যাহত আছে।
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত