যশোরের বাঘারপাড়া থানা পুলিশের নিস্কিৃয়তার সুযোগে দরাজহাট ইউনিয়নের দরাজহাটের মধ্যপাড়া এলাকায় নতুন বাড়িতে জমে উঠেছে মাদকে আখড়া।
এলাকার কুখ্যাত মাদক সম্রাজ্ঞী বুড়ির মাদকের রমরমা ব্যবসার কারণে এলাকার সামাজিক পরিবেশ নষ্ট সহ উঠতি বয়সে যুবকেরা বিপথগামী হচ্ছে। একই সাথে মাদকখোরদের অবাদ চলাচলে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে এলাকার শান্তিকামি মানুষ।
স্থানীয় গ্রামবাসীদের অভিযোগের ভিত্তিতে ও সরেজমিনে দেখা গেছে ,বাঘারপাড়ার দরাজহাটের হাতি আমতলা এলাকায় মাদক ব্যবসায়ি বুড়ি তার চার ছেলেমেয়ে পারভিন, নাসরিন, জগলু ও বুলেটকে নিয়ে তার রমরাম মাদক ব্যবসা ব্যবসা চালাচ্ছে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক এলাকাবাসি জানিয়েছে, দরাজহাট এলাকায় মাদক ব্যবসায়ি বুড়ি বিগত ৩ বছর আগে এলাকায় জমি কিনে প্রায় ৫০ লাখ টাকা খরচ করে বাড়ি বানিয়ে তার কারবার চালিয়ে যাচ্ছে অবাধে।
বুড়ির নতুন বাড়ি বললেই তাকে যে কেউ বাড়ি চিনিয়ে দেয়। এখানে পূর্বে আরো অনেক মাদক কারবারি থাকলেও বাঘারপাড়ার থানার কতিপয় সাদা পোশাক ধারী পুলিশের সাথে ঘনিষ্ট ও যোগাযোগ রয়েছে মাদক ব্যবসায়ী বুড়ির। অন্য ব্যবসায়িদের নানারকম ফাঁদে ফেলে নিজেই নিয়মিত মাসোহারার মাধ্যমে মাদক কারবার করে যাচ্ছে মাদক সম্রাজ্ঞী বুড়ি।
মাদক ব্যবসায়ি বুড়ি তার মাদক ব্যবসার শুরুতে কুষ্টিয়ায় থাকলেও বর্তমানে সে যশোরের দরাজহাট থেকে ব্যবসা পরিচালনা করছে।
বুড়ির দুই মেয়ে পারভিন ও নাসরিন চট্টগ্রাম থেকে ইয়াবার চালান এনে ঢাকায় মুগ্ধাপাড়ার বাসায় রেখে সুযোগ মতো কুরিয়ার সার্ভিস এর মাধ্যমে যশোরে পাঠায়। দেয়। ও তার দুই ছেলে জগলু এবং বুলেট মোবাইলের মাধ্যমে কন্ট্যাক্ট করে যশোর-খুলনার বিভিন্ন এলাকায় ইয়াবা সরবরাহ করে থাকে।
মাদক ব্যবসায়ী বুড়ি যশোর শহরে থাকাকালে দফায় দফায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে মাদকসহ আটক হয়। পরে জামিনে মুক্ত হয়ে সে চলে যায় বাঘারপাড়া এলাকায়।পরে শহরের সিটি কলেজপাড়া এলাকা থেকে দরাজহাট এলাকায় যে নতুন করে আস্তানা গড়ে ।
এছাড়াও তার ব্যবসায় বাধা সৃষ্টির অভিযোগে বাঘারপাড়া থানার এক পুলিশ কর্মকর্তাকে ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে মাদক কারবারি বুড়ি। এ ঘটনা ফাঁস হয়ে গেলে গ্রামের সাধারণ জনগণ বুড়ির বিরুদ্ধে
মানববন্ধন ও প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি পেশ করে। দরাজহাট মধ্যপাড়া বাজারের বিভিন্ন চায়ের দোকানে ও গ্রামের বিভিন্ন অলি-গলিতে ঘোরাঘুরি করে মাদক বেচা কেনা করে বুড়ি। এসময়ে মাদকসেবিরা বিভিন্ন কায়দায় সুযোগ বুঝে তাদের কাছ থেকে চাহিদা অনুযায়ী ইয়াবাও গাঁজা কিনে থাকে।এছাড়া যশোর শহরের বেজপাড়া, বারান্দিপাড়া, রায়পাড়া, সেখহাটি, ঘোপ বেলতলা, ধর্মতলাসহ চাঁচড়ার বিভিন্ন স্থানে অভিনয় ভাবে মাদক সরবরাহ করে থাকে এই পারিবারিক মাদক কারবারিরা।
সম্প্রতি গ্রামে এই মাদক ব্যবসার বিষয়টি চাউর হয়ে পড়ার কারণে অন্যান্য এলাকা থেকে মাদকাসক্তরা এসে ভিড় জমাচ্ছে।
এলাকাবাসীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, নারী মাদক কারবারিসহ দুই ছেলে, দুই মেয়েকে নিয়ে নির্ভিক ভাবে মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। বুড়ির কারণে এলাকার অনেক উঠতি বয়সি ছেলেরাও এখন মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছে। এদের চালচলনে উগ্রতার কারণে ভয়ে গ্রামের কেউ এদের বিরুদ্ধে কোন কথা বলা বা মাদক ব্যবসায় বাঁধা দিতে সাহস পাচ্ছে না।
বর্তমানে পুলিশ প্রশাসনের কিছু নিষ্ক্রিয়তার কারণে বুড়ি পুরোদমে তার মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এলাকাবাসী বুড়ির মাদক ব্যবসার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি কামনা করেছেন।
এ ব্যাপারে যশোরের বাঘারপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আব্দুল আলীম এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বুড়ি নামে ওই মাদক ব্যবসায়ীর নাম শুনেছি। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।