সরকারি চাকরিবিধির তোয়াক্কা না করে বিএনপির সমাবেশে যোগ দিয়েছে পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলা শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ।
গত শনিবার রাঙ্গাবালীতে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা এবিএম মোশাররফ হোসেনের সমাবেশে যোগ দিয়ে তাকে "রাঙ্গাবালী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক পরিবার" ব্যানারে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উপজেলার শিক্ষক পরিবার ও সচেতন নাগরিকদের মাঝে শুরু হয়েছে সমালোচনা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শনিবার বেলা আড়াইটায় রাঙ্গাবালী মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ওই সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রিয় প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন। সমাবেশে রাঙ্গাবালী উপজেলা শিক্ষক সমিতির নবগঠিত কমিটির নির্বাহী সভাপতি গাজী মো: শফিউদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মো: শাহীন ফরাজি, সহ সম্পাদক মো: সোহাগ মিয়া, দপ্তর সম্পাদক মো: রাজিব মিয়া, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক রাসেল মাহমুদ সহ এক ডজনেরও বেশি শিক্ষক সমাবেশে অংশ গ্রহণ করেন।
সমাবেশে তারা প্রধান অতিথি এবিএম মোশাররফ হোসেনকে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। শুভেচ্ছা বিনিময়ের ওই ফটো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে সচেতন মহলে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়। বিভিন্ন মন্তব্যে শিক্ষকদের "মেরুদন্ডহীন", "লেজুরবৃত্তিক রাজনীতি তল্পীবাহক" প্রভৃতি বলে ধিক্কার জানানো হয়। এছাড়াও এসব শিক্ষক নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করলে পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করতে পারেন বলেও মন্তব্য করেন অনেকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রধান শিক্ষক বলেন, শিক্ষকদের এমন 'লেজুরবৃত্তিক ও মেরুদন্ডহীন' আচরণ পুরো শিক্ষক সমাজের জন্য ঘৃণার কারণ। এমন আচরণের কারণে সাধারণ জনগণ পুরো শিক্ষক সমাজের দিকে আঙ্গুল তুলতে সাহস করে।
সরকারি চাকরিবিধি অমান্য করে রাজনৈতিক সভায় উপস্থিতির কারণ জানতে চাইলে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো: শাহীন ফরাজি বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে মোশাররফ ভাইয়ের পরিচিত। ছাত্রজীবন থেকে বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। বিএনপি সংশ্লিষ্টতার কারণে আমাকে একাধিকবার হয়রানীরি শিকার হতে হয়েছে।
এছাড়াও শিক্ষকগণ কোনো চাপ ছাড়াই স্ব স্ব উদ্যোগে সমাবেশে অংশ গ্রহণ করেছেন বলেও তিনি জানান। এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো: মোল্লা বখতিয়ার বলেন, এটা ঠিক হয়নি কোনভাবেই এটা তারা পারে না। সরকারী চাকুরি করে এভাবে কোন রাজনৈতিক দলের সমাবেশে এটা সম্পুর্ন বেআইনি কাজ করেছে। আমি উপজেলা শিক্ষা অফিসারের সাথে আলাপ করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি।